জুমবাংলা ডেস্ক : শীতের শুরুতে অতিথি পাখিতে ভরে যায় আমাদের জলাশয়। ঝড়, বৃষ্টি, তুষারপাতসহ প্রকৃতির প্রতিকূলতা থেকে বাঁচতে তারা পাড়ি জমায় হাজার হাজার মাইল দূরে। দুই সপ্তাহ ধরে নড়াইলের কৃষি পর্যটন কেন্দ্র অরুণিমা ইকো-পার্কে আসতে শুরু করেছে অতিথি পাখি। এর সঙ্গে রয়েছে দেশীয় পাখি। সব মিলিয়ে ২০০১ সাল থেকে বছরের আট মাস বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কলতানে মুখর থাকে পার্কটি। পাখিদের জন্য সংরক্ষিত ঘোষণা করায় এলাকাটি পরিচিত ‘পাখি গ্রাম’ নামে।
সরজমিন দেখা গেছে, অরুণিমা ইকো-পার্কে বিভিন্ন গাছের ডালে গড়ে উঠেছে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির পাখির কয়েক হাজার বাসস্থান। বক, হাঁসপাখি, পানকৌড়ি, শালিখ, টিয়া, দোয়েল, ময়না, মাছরাঙা, ঘুঘু, শ্যামা, কোকিল, টুনটুনি, চড়ুইসহ দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আছে এখানে।
পার্কের ম্যানেজার মুনিব খন্দকার বলেন, ‘২০০১ সাল থেকেই শীত মৌসুমে অতিথি ও দেশীয় পাখি আসা-যাওয়া করছে এখানে। প্রজননের সুযোগ-সুবিধা থাকায় ক্রমান্বয়ে বাড়ছে পাখির সংখ্যা।’ পাখির এ অভয়ারণ্যের অনুকরণে দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে অনেকেই আগ্রহী হবেন এমন প্রত্যাশা তার।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা অরুণিমা পার্কে এরই মধ্যে সেখানে ভিড় জমেছে পর্যটকদের। মাগুরা থেকে আসা জুয়েল রানা জানান, প্রতি বছরই তিনি কখনো একা অথবা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখানে আসেন। মানসিক প্রশান্তির জন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উভোগ করেন। এখানে শুধু পাখিই নয়, দেখা যায় নানা প্রজাতির ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছ। যেগুলো পাখিরা তাদের বাসস্থান হিসেবে ব্যবহার করে।
বাগেরহাটের শাহেদ আহম্মেদ জানান, ছোটবেলা থেকে তার কাছে পাখি খুব প্রিয়। তাই তিনি বিভিন্ন জায়গায় পাখি দেখতে যান। কিন্তু অরুণিমা পার্কের মতো এত পাখি একসঙ্গে আগে কখনো দেখেননি।
প্রতিনিয়ত দেশ-বিদেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শতশত পর্যটক আসছেন অরুণিমা ইকো-পার্কে, উপভোগ করছেন প্রকৃতিকে। দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আবাসিক সুবিধার জন্য এখানে রয়েছে সুইমিং পুল, এসি, নন-এসি ৩৪টি কটেজ। এক রুমবিশিষ্ট ভাসমান কটেজ রয়েছে দুটি। এখানে আবাসিক বোটসহ প্রতিটি কটেজেই রয়েছে খাবারের ব্যবস্থা। লেকের মাঝে রয়েছে দ্বীপ রেস্টুরেন্ট, চিত্রা কনভেনশন হল, এসএম সুলতান লাউন্স, দ্বীপ কটেজেস এবং ভাসমান ব্যাংককুয়েট। রেস্টুরেন্টে দেশী-বিদেশী খাবার, ফলের জুস, নিজস্ব খামারে উৎপাদিত সবজি ও মাছের ফ্রাইসহ আরো আছে বারবিকিউ।
কৃষকদের নিয়ে কাজ করা স্থানীয় একটি এনজিওর নির্বাহী পরিচালক কাজী হাফিজুর রহমান বলেন, ‘পাখি আমাদের পরিবেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অতিথি পাখি আগমনের ফলে বিভিন্ন প্রকার ফসল উৎপাদন ভালো হয়।’
নড়াইলের কালিয়া উপজেলা কৃষি পর্যটন কেন্দ্র অরুণিমা ইকো-পার্কের চেয়ারম্যান খবির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের একমাত্র কৃষি পর্যটন কেন্দ্র পরিণত হয়েছে পাখিদের অভয়ারণ্যে। একসঙ্গে হাজার হাজার পাখি আসে এখানে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।