আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা এগিয়ে নেওয়া, প্রধান প্রধান বিষয়ে নেতৃস্থানীয়দের মধ্যে লেনদেন বাড়ানো এবং সমাধানমুখী আন্তর্জাতিক মানের ভাবনার প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার লক্ষ্যে ২০০৩ সালে হিন্দুস্তান টাইমস লিডারশিপ সামিট যাত্রা শুরু করে। ভারত ও বহির্বিশ্ব থেকে স্বনামধন্য ব্যক্তিরা এতে যোগ দিয়ে থাকেন। এবার হবে আয়োজনটির ২০তম পর্ব। এবারের আলোচকদের মধ্যে রয়েছেন ক্রীড়া, রাজনীতি, ব্যবসা, স্বাস্থ্য ও বিনোদন জগতের বিশিষ্ট বক্তিরা।
৮ থেকে ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় এ সম্মেলন উপলক্ষে ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রসচিব এবং জি-২০ বিষয়ে ভারতের প্রধান সমন্বয়কারী হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা হিন্দুস্তান টাইমসের জন্য একটি বিশেষ লেখা লিখেছেন। প্রসঙ্গত, ভারত এবারই প্রথম জি-২০-এর সভাপতি হয়েছে এবং আগামী বছর ভারতে এর সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। পাঠকদের জন্য নিচে হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার লেখাটি তুলে ধরা হলো-
বৈশ্বিক রাজনীতি ও অর্থনৈতিক জোটগুলোতে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ভারত। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে প্রথমবার সভাপতিত্ব করার পর সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) নেতৃত্বেও এসেছে নয়াদিল্লি। আগামী ডিসেম্বর থেকে অর্থনৈতিক জোট জি২০-এর সভাপতিত্বও করবে দেশটি।
করোনা মহামারি ও পরবর্তী সময়ে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক মন্দা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি ও খাদ্যসংকটের হুমকি সৃষ্টি হয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এবং জলবায়ুসংক্রান্ত কর্মকাণ্ডের গতি কমে গেছে। তদুপরি বিশ্বে আগের চেয়ে বেশি মেরুকরণ হয়েছে। এমন পরিপ্রেক্ষিতে ভারত এখন বিশ্ব নেতৃত্বের ভূমিকা গ্রহণ করতে যাচ্ছে।
গত কয়েক বছরে ভারতের বৈশ্বিক অবস্থান দেশটিকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরো বেশি সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে।
বৃহৎ অর্থনৈতিক দেশগুলোর জোট জি৭-এর বৈঠকে নিয়মিতভাবে আমন্ত্রণ পেয়ে থাকে ভারত। এ ছাড়া চীন, রাশিয়া, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে দেশটি ব্রিকসের সদস্য। যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি কোয়াডেরও গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ভারত।
বিশ্বের এই কঠিন সময়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ভূ-রাজনৈতিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক খাতে অনিশ্চয়তা মোকাবেলায় আন্তরিক ও বিশ্বাসযোগ্য পদক্ষেপ চাইবে। এমন সময় ভারতের জি২০-এর সভাপতিত্ব বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। কভিড-১৯-এ ক্ষতিগ্রস্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোর ঋণে ছাড় দেওয়া এবং বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ন্যায়সংগত করব্যবস্থার মতো এই জোটের কিছু সিদ্ধান্ত সর্বস্তরে গৃহীত হয়েছে।
ভারত বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে। অন্যান্য দেশের উপকারের জন্য তারা নিজেদের সম্পদ ও ক্ষমতা ব্যবহারে দ্বিধা করেনি। এ মূল্যবোধ থেকেই ২০২০ সালের মার্চে জি২০-এর শীর্ষ সম্মেলনে করোনার প্রেক্ষাপটে ‘জনকেন্দ্রিক বিশ্বায়নের’ আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এই বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভারতের প্রচেষ্টা হচ্ছে বিশ্বব্যাপী অবদান রাখার জন্য তার অন্তঃস্থ শক্তিকে কাজে লাগানো। করোনা টিকার মৈত্রী থেকে অপারেশন সঞ্জীবনী পর্যন্ত ভারত মহামারি চলাকালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
গান ছেড়ে এবার অভিনয়ে বাদাম কাকু, প্রথম অভিনয়েই ঝড় তুললো নেট দুনিয়ায়
পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানি ও দুর্যোগ সহনশীলতার ক্ষমতা বিকাশে ভারতের প্রচেষ্টা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বীকৃতি পেয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অন্যান্য জরুরি পরিস্থিতিতে ইন্দোনেশিয়ার আচেহ থেকে আফ্রিকার পূর্ব উপকূলের মোজাম্বিক পর্যন্ত ভারতের সহায়তা পৌঁছেছে।
(হিন্দুস্তান টাইমস থেকে)
লেখক : ভারতের প্রধান জি-২০ সমন্বয়কারী ও সাবেক পররাষ্ট্রসচিব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।