আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরান–ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির পর আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) মার্কিন ডলারের মান ইউরোর বিপরীতে সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের স্বাধীনতা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় এ পতন ঘটেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
শুধু ইউরো নয়, সব কটি প্রধান মুদ্রার বিপরীতেই ডলারের মান কমেছে। ইউরো ০.২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.১৬৮৭ ডলার, যা ২০২১ সালের অক্টোবরের পর সর্বোচ্চ। এই প্রবণতা বজায় থাকলে এটি ১.১৯০৯ ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। পাউন্ডের মানও ০.২ শতাংশ বেড়ে ১.৩৬৯০ ডলারে পৌঁছেছে, যা ২০২২ সালের জানুয়ারির পর সর্বোচ্চ। সুইস ফ্রাঁর বিপরীতে ডলারের মান ২০১১ সালের পর সর্বনিম্ন—০.৮৩৩।
এছাড়া, ইয়েনের বিপরীতে ডলারের মান কমে দাঁড়িয়েছে ১৪৪.৮৯। ফলে ডলার ইনডেক্সও ২০২২ সালের শুরু পর সর্বনিম্ন ৯৭.৪৯১-এ নেমে এসেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ডলার পতনের অন্যতম কারণ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এক বক্তব্য, যেখানে তিনি ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের জায়গায় নতুন কাউকে বসানোর ইঙ্গিত দেন। বাজারে গুঞ্জন, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরের মধ্যে এই পরিবর্তন হতে পারে।
ইনটাচ ক্যাপিটাল মার্কেটসের এশীয় মুদ্রাবাজার প্রধান কিয়ারান উইলিয়ামস মনে করেন, পাওয়েলের উত্তরসূরিকে আগেভাগে মনোনয়নের চেষ্টা ফেডের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে। এতে বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, বিশেষ করে যদি সেই মনোনয়ন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রসূত হয়।
ট্রাম্প ও ফেডের মধ্যে সুদের হার নিয়ে মতানৈক্য দীর্ঘদিনের। ট্রাম্প অভিযোগ করছেন, পাওয়েল যথেষ্ট হারে সুদের হার কমাননি। অন্যদিকে পাওয়েল সতর্ক করেছেন, ট্রাম্পের শুল্কনীতি মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, আগামী জুলাইয়ে ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠকে সুদের হার কমার সম্ভাবনা ১২ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বছরের শেষে হার কমতে পারে ৬৪ ভিত্তি পয়েন্ট, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৪৬ ভিত্তি পয়েন্ট।
এদিকে, ২ এপ্রিল ঘোষিত পাল্টা শুল্কনীতি আগামী ৯ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত রয়েছে। তার আগেই বাণিজ্য চুক্তি না হলে নতুন করে শুল্ক আরোপের ঝুঁকি তৈরি হবে।
জেপি মরগান সতর্ক করেছে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শ্লথ হতে পারে এবং মূল্যস্ফীতি বেড়ে যেতে পারে। ফলে সম্ভাব্য মন্দার আশঙ্কা ৪০ শতাংশে পৌঁছেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের তুলনামূলক স্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবস্থা এখন হুমকির মুখে। ডলারের প্রতি বিশ্বব্যাপী আস্থা কমে যাচ্ছে, যা ডলার পতনের অন্যতম কারণ।
Titliyaan Part 2 : রোমান্সের সঙ্গে আবেগঘন প্রেম নিয়ে সেরা ওয়েব সিরিজ
অন্যদিকে ইউরো এই প্রেক্ষাপটে লাভবান হয়েছে। ইউরোপে প্রতিরক্ষা ও অবকাঠামো খাতে যৌথ বিনিয়োগ বাড়ানোয় ইউরোপের অর্থনীতি নতুন করে গতি পেতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।