দুবাইয়ের সোনার বাজার আবারও চাঙা হয়ে উঠেছে। দীপাবলির পর সাময়িকভাবে দাম কমলেও এখন তা ধীরে ধীরে ঊর্ধ্বমুখী ধারা দেখাচ্ছে। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দুবাইয়ে ২৪ ক্যারেট সোনার দাম দাঁড়িয়েছে প্রতি গ্রাম ৪৯৫.৭৫ দিরহাম এবং ২২ ক্যারেট সোনার দাম ৪৫৮.৭৫ দিরহাম। স্থানীয় বিক্রেতারা জানিয়েছেন, নতুন দামের সঙ্গে মানিয়ে ক্রেতারা আবার দোকানে ফিরছেন।

বৈশ্বিক বাজারেও সোনার দামে সামান্য বৃদ্ধি দেখা গেছে। গত দুই দিনে প্রায় ৬ শতাংশ কমার পর শুক্রবার ০.৩ শতাংশ বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্য সমঝোতা নিয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিত আসায় বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনার প্রতি চাহিদা কিছুটা কমেছে। তবে পুরো বছর জুড়ে সোনা এখনো প্রায় ৫৫ শতাংশ বেশি দামে লেনদেন হচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক অস্থিরতার মাঝেও বিনিয়োগকারীরা ভবিষ্যৎ দামের ওঠানামার ঝুঁকি থেকে বাঁচতে সক্রিয়ভাবে হেজিং চালাচ্ছেন। পাশাপাশি সোনা-সমর্থিত এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ড (ইটিএফ) থেকে বড় পরিমাণ তহবিল তোলা হয়েছে, যা গত পাঁচ মাসে সর্বোচ্চ।
জুলিয়াস বেয়ারের নেক্সট জেনারেশন রিসার্চ বিভাগের প্রধান কার্স্টেন মেঙ্কে বলেন, “বড় উত্থানের পর সাময়িক স্থিতিশীলতা বাজারের জন্য স্বাস্থ্যকর। সোনার ভিত্তিগত অবস্থা এখনও মজবুত। নিরাপদ বিনিয়োগের চাহিদা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রয় বৃদ্ধি, সুদ কমার সম্ভাবনা এবং দুর্বল ডলার সোনার দামকে সহায়তা করছে।”
বাংলাদেশে সোনার সর্বশেষ দাম (প্রতি ভরি ১১.৬৬৪ গ্রাম):
- ২২ ক্যারেট: ২,০৮,৯৯৬ টাকা
- ২১ ক্যারেট: ১,৯৯,৫০১ টাকা
- ১৮ ক্যারেট: ১,৭০,৯৯৪ টাকা
- সনাতন পদ্ধতি: ১,৪২,২১৯ টাকা
রুপার দাম (প্রতি ভরি):
- ২২ ক্যারেট: ৫,৪৭০ টাকা
- ২১ ক্যারেট: ৫,২১৪ টাকা
- ১৮ ক্যারেট: ৪,৪৬৭ টাকা
- সনাতন পদ্ধতি: ৩,৩৫৯ টাকা
বাজার বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যদি ২৪ ক্যারেট সোনার দাম ৫০০ দিরহামের নিচে থাকে, তবে দেশি ক্রেতাদের ভিড় আরও বাড়তে পারে।
এর আগে সোমবার সোনার দাম সর্বকালের রেকর্ড চার হাজার ৩৮১.২১ ডলারে পৌঁছেছিল। তবে পরের দুই দিনে প্রায় পাঁচ শতাংশ দাম কমে, যা গত পাঁচ বছরে এক দিনে সর্বোচ্চ পতন। ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদ হিসেবে সোনার দিকে ঝুঁকেছেন।
চলতি বছরে সোনার দাম বেড়েছে প্রায় ৫৭ শতাংশ। এর পেছনে ভূমিকা রেখেছে বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা, অর্থনৈতিক ধীরগতি, মার্কিন সুদের হার কমার প্রত্যাশা এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ক্রমবর্ধমান ক্রয়।
বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি এখন যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) প্রকাশের দিকে, যা ফেডারেল রিজার্ভের পরবর্তী নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ধারণা করা হচ্ছে, সেপ্টেম্বরে মূল মুদ্রাস্ফীতি ৩.১ শতাংশে স্থির ছিল।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ফেড ২৫ বেসিস পয়েন্ট হারে সুদ কমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং ডিসেম্বরেও আরেক দফা কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে। সুদের হার কমলে সাধারণত সোনার প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যায়। জেপি মরগানের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৬ সালের শেষ প্রান্তিকে সোনার গড় দাম প্রতি আউন্সে ৫,০৫৫ ডলারে পৌঁছাতে পারে।
অন্যদিকে, অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর দামও বেড়েছে। স্পট সিলভার ১.১ শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি ৪৯.০৭ ডলার, প্লাটিনাম ০.৫ শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি ১,৬২৯.৪৪ ডলার, আর প্যালাডিয়াম ০.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে আউন্সপ্রতি ১,৪৫৩.৯০ ডলারে লেনদেন হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



