আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ফ্লোরিডায় ১০০ কোটি ডলারে করপোরেট ক্যাম্পাস তৈরির পরিকল্পনা করেছিল ওয়াল্ট ডিজনি কোম্পানি। কিন্তু এক বিতর্কের কারণে সে পরিকল্পনা থেকে প্রতিষ্ঠানটি সরে এসেছে। একই কারণে বাতিল হয়ে গেছে দুই হাজার পদের নিয়োগও। ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিসান্টিসের সঙ্গে চলমান আইনি লড়াই ও এ থেকে সৃষ্ট বিতর্কের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেয় ওয়াল্ট ডিজনি।
দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস’র খবর, গতকাল বৃহস্পতিবার (১৮ মে) ইলেকট্রনিক বার্তার মাধ্যমে নিয়োগ বাতিলের খবর কর্মীদের জানিয়ে দিয়েছে জনপ্রিয় ও আলোচিত প্রতিষ্ঠানটি।
অরল্যান্ডো সেন্টিনেলের বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস’র খবরে আরও বলা হয়, ডিজনি তাদের এ প্রকল্পয় ৮৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার ব্যয় করবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। মধ্য ফ্লোরিডার করপোরেট ক্যাম্পাসে ওয়াল্ট ডিজনি ইমাজিনিয়ারিং ও ডিজনি পার্কসহ অন্যান্য বিভাগে প্রধান কেন্দ্র হিসেবে চালু করার চিন্তাও করা হচ্ছিল।
ক্যাম্পাসটি স্থাপিত হতো অরল্যান্ডোর নোনা হ্রদের কাছে। দুই হাজার কর্মীতে সেখানেই স্থানান্তর করা তো। কিন্তু ব্যবসায়িক পরিস্থিতি পরিবর্তনের কারণে ২০২১ সালে নেওয়া এ পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করতে হচ্ছে। গণমাধ্যমে এসব কথা বলেন ডিজনি পার্কের প্রধান জোশ ডি মারো।
ডিজনির অব্যাহত বিনিয়োগের বিষয়ে ফ্লোরিডা সরকারের আগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সিইও বব ইগার। তিনি বলেন, সরকার কি চায় আমরা আরও বিনিয়োগ করি? আরও লোককে নিয়োগ করি ও আরও কর দিই?
তার এ প্রশ্নের কারণ হচ্ছে, চলতি বছর প্রথম প্রান্তিক নিয়ে আলোচনার সময় ইগার তার বিনিয়োগকারীদের জানিয়েছিলেন, ৭৫ হাজারের বেশি কর্মীকে ডিজনি ফ্লোরিডায় নিয়োগ দিয়েছে। এ ছাড়া প্রতি বছরই লাখেরও বেশি দর্শনার্থী ওয়াল্ট ডিজনি ওয়ার্ল্ডে ভ্রমণ করেন। তাই আগামী এক দশকে ডিজনির রিসোর্ট সম্প্রসারণে এক হাজার ৭০০ কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনাও করছিলেন তারা।
এ থেকে সরকার রাজস্ব পেত, নিয়োগ হতো আরও অনেক কর্মীর। কিন্তু বিতর্ক এমন পর্যায়ে যায় গত মার্চে ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিস্যান্টিসকে ‘ব্যবসা বিরোধী’ বলে অবিবিহত করে ডিজনি। অভিযোগ, রন তার অরল্যান্ডোর কাছে কোম্পানির থিম পার্ক রিসোর্টটিকে নজরদারিতে রেখেছিলেন। পরে গত এপ্রিলে রন ডিস্যান্টিস ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা করে।
তা ছাড়া গত বছর মার্চে ডিজনি ও রন ডিস্যান্টিসের সঙ্গে ব্যাপক তর্ক হয়। ফ্লোরিডার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লিঙ্গ পরিচয় ও যৌনতা নিয়ে আলোচনা সীমিত করা করবে- এমন আইন নিয়ে সমালোচনা করেন ডিজনির তৎকালীন সিইও বব চ্যাপেক। উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় সমকামী পরিচয় প্রকাশ্যে না আনা নিয়ে ফ্লোরিডার পদক্ষেপ নিয়ে। পরবর্তীতে ডিজনির কর-জনিত সুবিধা তুলে নেওয়া হয়।
ডিজনির অভিযোগ, মত প্রকাশের স্বাধীনতায় তাদের অবস্থানের ওপর রাজনৈতিক প্রতিশোধ নিতে চান ডিসান্টিস। তা ছাড়া রিপাবলিকান দল থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মনোনয়ন আশা করা রন অরলান্ডোতে ওয়াল্ট ডিজনির স্ব-শাসিত ক্ষমতার ওপর হস্তপেক্ষ করছেন বলেও অভিযোগ ওঠে। যে কারণে ডিজনিকে আদালতেও যেতে হয়েছিল।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।