রঞ্জু খন্দকার, গাইবান্ধা থেকে : কোরবানির জন্য পশু কিনতে গত শনিবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাইহাটে যান জাহাঙ্গীর কবির। হাটে ভিড়ের ভয়ে সব টাকা ‘ক্যাশে (নগদ)’ নিয়ে যাননি তিনি। একাংশ নিয়ে যান বিকাশে। হাটে গরুর দাম ঠিক হওয়ার পর এজেন্টের কাছ থেকে সেই টাকা বের করে বিক্রেতাকে পরিশোধ করেন তিনি।
শুধু জাহাঙ্গীর নন, একই হাটে পশু কিনে বিকাশে দাম মেটান আরও অনেকে। মুঠোফোনে ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের এই সেবায় উপকার পাচ্ছেন গ্রাহকেরা। এতে হাটে নগদ লেনদেনের ভয় কাটছে অনেকের।
জাহাঙ্গীর কবির গাইবান্ধার আসাদুজ্জামান গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক। তিনি বলেন, কোরবানির পশুর হাটে অনেক মানুষের ভিড় হয়। এত ভিড়ের মধ্যে অনেক সময় নগদ টাকা বহন করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। এ ভয় এড়াতে তিনি অনেক আগে থেকেই মোটা অংকের টাকা কাছে রাখেন না। দর মেটার পর বিকাশ থেকে বের করে লেনদেন করেন তিনি। এতে টাকা কিছুটা বাড়তি গেলেও ঝুঁকি মুক্ত লেনদেন করা সম্ভব।
একই দিন হাটে গিয়েছিলেন গোবিন্দগঞ্জের ডুমুরগাছা গ্রামের শামসুল আলম দুলু। তিনিও পুরো টাকা নিয়ে হাটে যাননি। হাট ঘুরে ৬২ হাজার টাকায় একটা গাই পছন্দ করেন তিনি। দর মেটার পর বিক্রেতাকে বলে বিকাশ থেকে টাকা এনে পরিশোধ করেন তিনি।
শামসুল বলেন, পুরো টাকা পকেটে নিয়ে ঘোরা আজকাল তাঁর কাছে বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে হয় না। অনেক সময় এক হাটে পশু পছন্দ না-ও হতে পারে। তখন টাকা নিয়ে ঘোরা ফাও যেতে পারে। তাই পশু পছন্দ হওয়ার পরই বিকাশ প্রতিনিধির মাধ্যমে টাকা খরচ করার পক্ষে তিনি।
নাকাইহাট ঘুরে কয়েকজন ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুধু ক্রেতারা নন, এখন অনেক বিক্রেতাও হাটে নগদ টাকা লেনদেন করতে ভয় পান। এ কাজে তুলনামূলকভাবে তাঁরা বিকাশেই ভরসা পাচ্ছেন। তাই দর মেটার পর অনেক ক্রেতা যেমন বিকাশ থেকে টাকা এনে পরিশোধ করছেন, তেমনি অনেক বিক্রেতাও বিকাশের মাধ্যমেই টাকা নিতে আগ্রহী হচ্ছেন।
গোবিন্দগঞ্জেরই ক্রোড়গাছা এলাকা থেকে গরু বিক্রি করতে এসেছিলেন শাহজাহান মোল্লা। একটা শংকর জাতের গাই তিনি এক লাখ পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি করলেন। এর একাংশ তিনি বিকাশের মাধ্যমে নিলেন।
শাহজাহান বলেন, এতগুলো টাকা নিয়ে হাট থেকে বের হওয়া তাঁর কাছে নিরাপদ বলে মনে হয় না। কখন কী ঘটে, তার নিরাপত্তা কে দেবে? তখন সামান্য ভুলে অনেক কষ্ট করে পালন করা গরু বিক্রির টাকা পুরোটাই জলে যেতে পারে। তাই বিকাশে টাকা কিছু কেটে নিক, তবু এত কষ্টের টাকা তিনি সহজে হাতছাড়া করতে চান না।
বিকাশ-এ রেমিটেন্স গ্রহণ করে হাইসেন্স ফ্রিজ-টিভি জিতলেন ১৪ জন
নাকাইহাটে ইজারাদাদের পক্ষে হাটে টেবিল বসিয়ে হাসিল আদায় করছিলেন অনেকে। তাঁদের মধ্যে একজন হারুন মণ্ডল। তিনি বললেন, এবার হাটে নগদ লেনদেন কিছুটা কম। লোকজন অনেকেই নগদ ক্যাশের বদলে বিকাশের মাধ্যমে লেনদেনে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
এতে ক্রেতা-বিক্রেতা– উভয়পক্ষই লেনদেন সহজ ও নিরাপদ ভাবছেন বলে মনে করেন হাসিল আদায়কারী হারুন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।