জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকার জায়গায় জায়গায় কালিমা খচিত কালো পতাকা মিছিল দেখা গেছে। স্কুল-কলেজের বাচ্চারা পতাকা হাতে মিছিল করছে, প্ল্যাকার্ড বহন করছে। যারা মিছিল করছে তাঁরা কেউ কেউ খেলাফতের দাবি জানাচ্ছেন বলে দেখা গেছে। মহানবী (সা.) এর অপমানের শোধ, ইসলামি শাসনব্যবস্থা কায়েমের দাবিও উঠে আসছে। সামাজিক মাধ্যমে কেউ কেউ এইসব মিছিলকে বাহবা দিচ্ছেন, কেউ নীরব থাকছেন, কিন্তু এর পেছনের রাজনৈতিক ইন্ধনে কেউ কেউ ভয় পাচ্ছেন।
কলেমা প্রতিটা মুসলমানের কাছে পবিত্র, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে পতাকা বহন করা হচ্ছে সেগুলো আপামর মুসলিমের নয় বরং আইএস এবং আলকায়েদার মতো সংগঠনের যারা দেশে দেশে সন্ত্রাসবাদ কায়েম করেছে। এইসব সন্ত্রাস একদিকে যেমন মুসলিমপ্রধান দেশগুলোকে অশান্তি ডেকে এনেছে তেমনি পশ্চিমা বিশ্বের জন্য ‘ওয়ার অন টেরর’ বয়ানের রাস্তা সহজ করে দিয়েছে। এই যুদ্ধের নামে পশ্চিমারা দেশে দেশে নিজেদের আগ্রাসন চালিয়েছে।
বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম না। আমরা মনে করতে পারি যে, শেখ হাসিনা সরকার একটা দীর্ঘ সময় এই বয়ানের উপরেই টিকে ছিল। হলি আর্টিজানের মতো ঘটনা, ব্লগার হত্যা ইত্যাদি দেখিয়ে হাসিনা সারা দুনিয়াকে বোঝাতে চেয়েছিল যে আওয়ামী লীগ না থাকলে বাংলাদেশ ইসলামি জঙ্গিবাদীদের দখলে চলে যাবে। নিজের দেশে ইসলামি জঙ্গির জুজুর ভয় দেখিয়ে নরেন্দ্র মোদী ভারতে জঘন্যরকম সাম্প্রদায়িক হিন্দুত্ববাদ কায়েম করতে পেরেছে।
তবে, বাংলাদেশের মানুষের অসামান্য এক গণ-আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচারী হাসিনার বিদায় হয়েছে। ভারতের পাপেট সরকারের পতন হয়েছে। কিন্তু, তাই বলে তো ষড়যন্ত্র থামিয়ে তারা বসে থাকবে না। হাসিনা এখনো সেই দেশেই আশ্রয়ে আছে। ভারতের মিডিয়া প্রথম থেকেই ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে বৈরী ও বাড়াবাড়ি প্রচারে লিপ্ত। হাসিনাশাহীর পুলিশের তাণ্ডবের পর দেশে আইনশৃঙ্খলা এখনো ফেরেনি, লুটপাট আর বিপুল ঋণের চাপে দেশে অর্থনীতির জেরবার দশা।
এরই মধ্যে এই কালো পতাকার মিছিল ষড়যন্ত্রকারীদের জন্য দারুণ এক সুযোগ বয়ে আনবে। আবারো তাঁদের সেই পুরোনো কার্ড- জঙ্গি জুজ- তারা ফেরত আনবে। ইতোমধ্যেই ভারত তো বটেই ব্লুমবার্গের মতো বিখ্যাত মার্কিন সংবাদপত্রেও এই নিয়ে উদ্বেগ দেখা গেছে। আইএসের পতাকা হাতে তরুণদের মিছিল দেখে তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করছে।
আর, এমন এক সময়ে তা হচ্ছে যখন মধ্যপ্রাচ্যের অবস্থা টালমাটাল। দখলদার ইসরায়েল গাজায় এক বছর গণহত্যা চালানোর পর এখন লেবাননে হামলা চালাচ্ছে, ইরানও পালটা জবাব দিচ্ছে। অন্যদিকে ভারতে মোদী ম্যাজিক ম্লান হয়ে যাচ্ছে, গত নির্বাচনে মোদীর আসন অনেকটাই টলমলে হয়ে গেছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশে ইসলামি জঙ্গিবাদের উত্থান দেখাতে পারলে তার সমর্থন অনেকগুণ বাড়বে।
আর দেশি ষড়যন্ত্রকারীদের জন্যও তা বিরাট লাভের। আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামলে এন্তার লুটপাটের টাকাপয়সা এখন ষড়যন্ত্রে ব্যবহার হবে এতে সন্দেহ নাই। কালো পতাকা মিছিলে নিজেদের লোক ঢুকিয়ে তারা উদ্দেশ্য হাসিলের চেষ্টা করবে। দেশকে অস্থিতিশীল বানিয়ে আবারও ক্ষমতা নেয়ার ষড়যন্ত্র করবে।
মুকেশ আম্বানির জামাই আনন্দ পিরামলের সম্পত্তিতে কেনা যাবে একটি দেশও
ফলে, এই ‘কালো পতাকা লীগ’ হতে সাবধান থাকতে হবে। যে যেই উদ্দেশ্যেই এইসব মিছিল করুক এর ফায়দা নিবে আওয়ামী লীগ আর ভারত। নিজেদের বয়ানের সাথে যাওয়ায় পশ্চিমারাও এ থেকে সুবিধা নেবে। উৎসঃ বাংলা আউটলুক
সূত্র : আমাদের সময় ডটকম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।