বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : মহাকাশে থাকা ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বরের আশপাশে নিমজ্জিত অঞ্চল থাকার কথা জানিয়েছিলেন বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন। ১৯১৫ সালে তিনি এক তত্ত্বে এমন তথ্য তুলে ধরেন। এ ঘটনার ১০০ বছরের বেশি সময় পর তার সেই তত্ত্বের প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশে বিশেষ ঢালু অঞ্চল রয়েছে। সুইমিংপুলে যেমন ধীরে ধীরে গভীরে যাওয়া যায়, ঠিক তেমনি কৃষ্ণগহ্বরেও নিমজ্জিত অঞ্চলের সন্ধান পাওয়া গেছে। খবর ডেইলি মেইলের।
লাইভ সায়েন্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল যে কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশে নিমজ্জিত অঞ্চল আলোর গতিতে তাদের মধ্যে পদার্থকে ত্বরান্বিত করবে। এখন দূরবর্তী কৃষ্ণগহ্বরের এক্স-রে পর্যবেক্ষণ তার সেই তত্ত্বকে সঠিক প্রমাণ করেছে।
আইনস্টাইন জানিয়েছিলেন, কৃষ্ণগহ্বরের আশপাশে নিমজ্জিত অঞ্চল থাকতে পারে, যেখানে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির পরিমাণ খুব বেশি। ফলে সেখানে পদার্থ বৃত্তাকার পথ অনুসরণ করতে পারে না।
সম্প্রতি পৃথিবী থেকে প্রায় ১০ হাজার আলোকবর্ষ দূরের একটি কৃষ্ণগহ্বরকে টেলিস্কোপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা কৃষ্ণগহ্বরে এমন অঞ্চলের খোঁজ পেয়েছেন। সেখানে শক্তিশালী মহাকর্ষীয় শক্তিও রয়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছেন তারা।
কোনো পদার্থ কৃষ্ণগহ্বরের কেন্দ্রের দিকে গেলে তা ধীরে ধীরে দিগন্ত নামের এক অঞ্চলে প্রবেশ করে। সেখান থেকে আলো বাইরে আসতে পারে না। শুধু তা-ই নয়, গরম প্লাজমার উজ্জ্বল বলয়ে পদার্থগুলো চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়। আইনস্টাইনের তত্ত্বমতে, কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এতটাই শক্তিশালী যে কণাগুলো বাঁকা পথ ছেড়ে সরাসরি কৃষ্ণগহ্বরের গভীরে প্রবেশ করে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা পর্যবেক্ষণে আলোর গতিতে একটি কৃষ্ণগহ্বরের মুখে পদার্থের নিমজ্জিত হতে দেখেছেন। এর মাধ্যমে আবারও আইনস্টাইনের করা ভবিষ্যদ্বাণীকে সঠিক প্রমাণ করেছেন।
যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ অ্যান্ড্রু মামারি বলেন, নক্ষত্রের বাইরের প্লাজমা কৃষ্ণগহ্বরের কেন্দ্রে প্রবেশের ধরন আমরা বোঝার চেষ্টা করছি। আমরা একটি কৃষ্ণগহ্বরের চারপাশে এই অঞ্চল পর্যবেক্ষণ করে আইনস্টাইনের তত্ত্বের প্রমাণ পেয়েছি। কৃষ্ণগহ্বর বেশ অদ্ভুত। সেখানে সাধারণ পদার্থবিদ্যার নিয়ম কাজ করে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি এটি কৃষ্ণগহ্বরের গবেষণায় একটি নববিকাশের প্রতিনিধিত্ব করে, যা আমাদের সেগুলোর চারপাশের এ চূড়ান্ত অঞ্চলটি তদন্ত করার অনুমতি দেয়। তবেই আমরা মহাকর্ষীয় শক্তিকে পুরোপুরি বুঝতে পারব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।