আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাধার বিন্ধ্যাচলকে হাসিমুখে অতিক্রম করেছেন সুরেশকুমার৷ তামিলনাড়ুর কোয়ম্বত্তুরের বাসিন্দা ৩২ বছর বয়সি এই যুবক আশৈশব দৃষ্টিহীন৷ দু’চোখে আঁধার নিয়েই শুধু স্পর্শ করে দক্ষতার মাধ্যমে অবলীলায় সারিয়ে দেন বিভিন্ন বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি৷ টিভিএস নগর রোড এলাকায় কাভুন্ডমপলয়ম অঞ্চলে তাঁর দোকানে সারাই করা হয় মিক্সার গ্রাইন্ডার, ওয়াশিং মেশিন, রেফ্রিজারেটর থেকে শুরু ররে এলপিজি স্টোভ পর্যন্ত৷ অবিশ্বাস্য দক্ষতায় তিনি খুলে ফেলেন যন্ত্রাংশ৷ শুধু মাত্র স্পর্শ করে চিনে নেন তার, যন্ত্রাংশ৷ শব্দ শুনে বোঝার চেষ্টা করেন কোথায় গলদ৷
কাজ শুরু করার পর্বে ক্রেতাদের বিশ্বাস অর্জন করা সহজ ছিল না সুরেশের পক্ষে৷ তবে ধীরে ধীরে কর্মদক্ষতায় বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করে নেন তিনি৷ তাঁর কাছে নিজেদের বৈদ্যুতিন সামগ্রী সারাই করতে দেন সাধারণ মানুষ৷ এখন তিনি গর্ব করে বলেন ডাবল ডোর রেফ্রিজারেটর, ওয়াশিং মেশিন, মিক্সার গ্রাইন্ডার, সিলিং ফ্যান, গ্যাস আভেন সারাই করতে তিনি সিদ্ধহস্ত৷
মাত্র ৬ বছর বয়সে জটিল ব্রেন ফিভারে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি হারান সুরেশ৷ ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত তিনি দৃষ্টিহীনদের জন্য নির্ধারিত বিশেষ সরকারি স্কুলে পড়তেন৷ তবে তাঁর জীবন আমূল পাল্টে দেন সহৃদয় কৃষ্ণমূর্তি৷
সুরেশের দিদি রেবতীর অনুরোধে তিনি তাঁকে ডেকে নেন নিজের দোকানে৷ সেখানে বসে শুনে, শুনে আর স্পর্শ করে সারাইয়ের কাজ শিখত তরুণ সুরেশ৷ তাঁকে হাতে ধরে কাজ শেখান কৃষ্ণমূর্তি৷ জীবনে প্রথম একক সাফল্য সুরেশ পান নিজের হাতে মিক্সার গ্রাইন্ডার সারাই করে৷ সাফল্য এবং আত্মবিশ্বাসকে সঙ্গী করে সম্প্রতি নিজের দোকান শুরু করেছেন তিনি৷ নাম দিয়েছেন ‘মারি ইলেকট্রিক্যাল’৷
এখন সুরেশের দোকানে ভিড় উপচে পড়ে৷ তিনি সব সময় বলেন অনলাইন পেমেন্ট করতে৷ কারণ যন্ত্র সারালেও গুনতে পারেন না টাকা পয়সা৷ ভেবেছেন সমস্যা দূর করতে শিখবেন ব্রেইল পদ্ধতি৷ ইচ্ছে আছে, আরও যাঁদের চোখে অন্ধকার, তাঁদেরও বৈদ্যুতিন যন্ত্র সারাইয়ের কাজ শেখানোর৷ যাতে তাঁরাও বাঁচতে পারেন স্বাধীনভাবে৷
সুরেশের উপার্জনেই চলে তাঁর এবং মায়ের সংসার৷ অনুপ্রেরণা হয়ে সুরেশ দেখিয়ে দিয়েছেন জীবনের পথে কোনও বাধাই দুর্লঙ্ঘ্য নয়৷
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।