প্রাচীন প্রশান্ত মহাসাগরে আধিপত্য বিস্তারকারী একটি বিশাল সামুদ্রিক প্রাণীর প্রায় সম্পূর্ণ অবশেষ খুঁজে বের করেছেন জাপানের বিজ্ঞানীরা। এই অবিশ্বাস্য আবিষ্কারটিকে তার অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে “নীল ড্রাগন” নামকরণ করা হয়েছে। এটিকে অতীত বা বর্তমান অন্য কোনো জলজ প্রাণী থেকে আলাদা করে।
ব্যতিক্রমী জীবাশ্ম, আনুমানিক প্রায় 72 মিলিয়ন বছর পুরানো, হোনশু দ্বীপের ওয়াকায়ামা প্রিফেকচারের আরিদাগাওয়া নদীর তীরে পাওয়া গেছে। এগুলি পূর্বে অনাবিষ্কৃত একটি প্রজাতির মোসাসরের অন্তর্গত, বায়ু-নিশ্বাস গ্রহণকারী জলজ সরীসৃপদের একটি দল যারা ক্রিটেসিয়াস যুগে (145 মিলিয়ন থেকে 66 মিলিয়ন বছর আগে) শীর্ষ শিকারী ছিল। এই আবিষ্কারটিকে জাপান এবং উত্তর-পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে পাওয়া মোসাসরের জীবাশ্মের অন্তর্গত বলে মনে করা হয়।
জার্নাল অফ সিস্টেম্যাটিক প্যালিওন্টোলজিতে প্রকাশিত সাম্প্রতিক গবেষণায়, গবেষকরা নতুন প্রজাতিটিকে মেগাপ্টেরিজিয়াস ওয়াকায়ামেনসিস হিসাবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। “মেগাপ্টেরিগিয়াস” নামটি “বড় ডানাওয়ালা” বোঝায় যা এর অস্বাভাবিক পিছনের ফ্লিপারগুলিকে উল্লেখ করে। পৌরাণিক কাহিনীর টাচ যোগ করার জন্য, গবেষকরা স্নেহের সাথে প্রাণীটিকে “ওয়াকায়ামা সোরিউ” ডাকনাম দিয়েছেন। “সোরিউ” যার অর্থ জাপানি লোককাহিনীতে একটি নীল রঙের জলজ ড্রাগন।
প্রাণীটির একটি ডলফিনের মতো ধড়, চারটি প্যাডেলের মতো ফ্লিপার, একটি অ্যালিগেটর-আকৃতির থুতু এবং একটি দীর্ঘ লেজ ছিল যা মোসাসরের সাধারণ বৈশিষ্ট্য। যা এটিকে অসাধারণ করে তোলে তা হল একটি পৃষ্ঠীয় পাখনার উপস্থিতি যা হাঙ্গর বা ডলফিনে পাওয়া যায়, এমন একটি বৈশিষ্ট্য যা অন্যান্য মোসাসর প্রজাতিতে দেখা যায় না।
গবেষকদের জন্য সবচেয়ে বিস্ময়কর দিকটি ছিল প্রাণীটির পিছনের ফ্লিপারগুলির আকার যা সামনের ফ্লিপারগুলির চেয়ে অপ্রত্যাশিতভাবে দীর্ঘ ছিল। এই বৈশিষ্ট্যটি সমস্ত জীবিত এবং বিলুপ্ত জলজ প্রজাতির মধ্যে অত্যন্ত বিরল। বেশিরভাগ সাঁতারের প্রাণীর বিপরীতে তাদের দক্ষ স্টিয়ারিংয়ের জন্য সামনের দিকে বড় ফ্লিপার রয়েছে।
ডোরসাল পাখনাটি তাদের বাঁক নিতে সহায়তা করতে পারে। গবেষণার প্রধান লেখক এবং সিনসিনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মেরুদণ্ডী জীবাশ্মবিদ তাকুয়া কোনিশি এই আবিষ্কারে তার বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, “আমি ভেবেছিলাম যে তাদের [মোসাসরদের] বেশ ভালোভাবে চিনতাম। এরকম কিছু এর আগে আমি কখনো দেখিনি।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।