আওয়ামী লীগকে পুর্নবাসন করার রাজনীতি বিএনপি যদি গ্রহণ করে থাকে, সেই রাজনীতি বিএনপির জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে বলে মন্তব্য করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে দলটির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেনের ওপর হামলার প্রতিবাদে জরুরি এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, একদিকে যেমন আওয়ামী লীগ তৎপরতা চালাচ্ছে, ষড়যন্ত্র করছে, সন্ত্রাসী কার্যক্রম করছে; অন্যদিকে দেশের কোনো কোনো রাজনীতিবিদ আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনার ষড়যন্ত্র করছেন।
এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনার অথবা আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করার কোনো সুযোগ নেই। যারা এটা করার চেষ্টা করবে জনগণ তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। তাদের রাজনীতি বাংলাদেশ থেকে নাই হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে পুর্নবাসন করার রাজনীতি বিএনপি যদি গ্রহণ করে থাকে, সেই রাজনীতি বিএনপির জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে। বিএনপিকে আওয়ামী লীগের পুর্নবাসনের পরিবর্তে বাংলাদেশ পুর্নগঠনে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি। তাহলে বিএনপি তরুণদের সাপোর্ট পাবে।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ৩৬ জুলাই বা ৫ আগস্ট বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তাদের রায় জানিয়ে দিয়েছিল। সেই রায়টি ছিল বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ এবং মুজিববাদীদের কোনো রাজনীতি থাকবে না। তারা যে অপকর্ম করেছে বাংলাদেশে সেজন্য তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী সব রাজনৈতিক পক্ষকে এই আওয়ামী লীগ প্রশ্নে, মুজিববাদ প্রশ্নে আমরা সবাই যেন এক থাকি। বিচারের মাধ্যমে আমরা যাতে তাদের রাজনৈতিক ফয়সালা করতে পারি। আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনে ষড়যন্ত্র করা, দেশকে অস্থিতিশীল করার সব ষড়যন্ত্র আমরা যাতে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিতে পারি।
তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতাদের লক্ষ্য করে সন্ত্রাসী ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ তার বিভিন্ন তৎপরতা চালাচ্ছে। এর আগে গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাদের উপর হত্যার নীলনকশা নিয়ে যে আক্রমণ, সে আক্রমণ আমরা দেখেছি। উপদেষ্টা গণঅভ্যুত্থানের নেতা মাহফুজ আলম এর আগে যখন লন্ডন-আমেরিকায় গিয়েছেন তখন তার উপর হামলা করার চেষ্টা করা হয়েছে। এবং তারই ধারাবাহিকতায় গতকাল আমরা দেখেছি জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হিসেবে তিনটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এয়ারপোর্ট থেকে বের হওয়ার সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির সংগ্রামী সদস্য সচিব আখতারে হোসেন এবং এনসিপির নেত্রী ড. তাসনিম জারাকে লক্ষ্য করে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীরা হামলা করে। আমরা সার্বিক বিষয়ে পর্যালোচনা করে বলতে চাই, এই ক্রমাগত হামলা ষড়যন্ত্র এবং অপতৎপরতা চলমান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের উপর আক্রমণ হয়েছিল তখনও আমরা বলেছিলাম যে, গণঅভ্যুত্থানের নেতাদের টার্গেট করা হচ্ছে এবং এই ঘটনাগুলোর সঙ্গে প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা জড়িত। ভেতর থেকে এই ইনফরমেশনগুলো লিক করা হয়। সরকার এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নিরাপত্তা দেওয়ার যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, সেই ব্যবস্থাগুলো যথাযথ ছিল না বলেই গতকালের ঘটনাগুলো ঘটে। আমরা এর নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সরকার এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে জবাবদিহিতা চেয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ড. ইউনূস তার সফরসঙ্গী হিসেবে রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে গেলেন, সেখানে আমাদের যাওয়ার কথা ছিল না। প্রধান উপদেষ্টার আহ্বানেই আমরা রাজি হয়েছিলাম। সেখানে তাদের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা এবং সম্মান নিশ্চিত করার দায়িত্ব ছিল সরকার এবং প্রশাসনের। কিন্তু সেটি করতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।