শারদীয় দুর্গাপূজা ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা উৎসাহ উদ্দীপনা সহকারে নিশ্চিন্তে নিরাপদে সারা দেশে উৎসব আনন্দ উদযাপন করুন। সৌহার্দ্য সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিন। আমি এবং আমার দল বিএনপি বিশ্বাস করে, ধর্ম যার যার, রাষ্ট্র সবার। ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার।’
গতকাল বুধবার এক বাণীতে তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তাদের সুখ শান্তি ও কল্যাণ কামনা করেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘আবহমানকাল ধরে দেশের বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষ প্রতিটি গোষ্ঠী-গোত্র-সম্প্রদায় ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে যার যার ধর্ম পালন করে আসছে, এটি বাংলাদেশে ঐতিহ্যগত ধর্মীয় সামাজিক মূল্যবোধ ও সংস্কৃতির সৌন্দর্য। শরতে বাংলাদেশের কাশফুল ও শীতের আভাস জানান দেয় এই উৎসবের বার্তা।আর উৎসব হচ্ছে অন্ধকারের গহন থেকে আলোর জাগতিক উদ্ভাসন।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমি মনে করি, উৎসবের ভেতর দিয়েই পরস্ফুিটিত হয়ে ওঠে আমাদের বিভিন্ন ধর্ম-গোত্র-সম্প্রদায়ের মধ্যকার পারস্পরিক বন্ধুত্ব, সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য এবং ভ্রাতৃত্ব।
আমাদের রাষ্ট্র এবং সংবিধানে দল মত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্বাসী অবিশ্বাসী সংশয়বাদী প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তা বিধানের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।’
পবিত্র হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘যে ব্যক্তি রাষ্ট্রের নিরাপত্তাপ্রাপ্ত অমুসলিমকে নির্যাতন করে, তার অধিকার খর্ব করে, তাকে সাধ্যের অতিরিক্ত কাজ চাপিয়ে দেয় বা তাদের অসম্মতিতে ধনসম্পদ হরণ করে নেয়’—এ ধরনের জুলুমের বিরুদ্ধে আমাদের প্রিয় নবী তাঁর উম্মতদের সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, কিয়ামতের দিন আমিই সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে লড়ব।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে দেশের একজন নাগরিক হিসেবে অন্য নাগরিকের নিরাপত্তা এবং সম্মান রক্ষায় যথাযথ ভূমিকা রাখবে এবং নৈতিক দায়িত্ব পালন করবে, এটিই স্বাভাবিক রীতি।’
শারদীয় উৎসব ঘিরে ফ্যাসিবাদী শাসনামলের মতো কেউ যাতে কোনো রকম সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি কিংবা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার মতো কোনো অপচেষ্টা করতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক এবং সজাগ থাকতে দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রতি আহবান জানান তারেক রহমান।
বিএনপির পক্ষ থেকে আবারও শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সব শেষে আমি আবারও আমার এবং আমাদের দল অর্থাৎ ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের দল-বিএনপির পক্ষ থেকে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানাই।’
বিএনপি মহাসচিবের বাণী : হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় এবং সামাজিক উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘শারদীয় দুর্গাপূজা বাংলা ভাষাভাষীর হিন্দু জনগোষ্ঠীর সব মানুষের জীবনে এক আলোকদীপ্ত বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। সুদীর্ঘকাল ধরেই বাংলাদেশসহ বাংলাভাষী মানুষের এই ধর্মীয় উৎসবটি এক ঐশ্বর্যময় ঐহিহ্যে মহিমামণ্ডিত। উৎসবের প্রাঙ্গণ প্রত্যেক মানুষেরই মিলনক্ষেত্র। বাংলাদেশের মৃত্তিকার গভীর থেকে যে ইতিহাস ও ঐতিহ্য উৎসারিত হয়, সেটি ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মূল্যবোধকে অন্তর্ভুক্ত করে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী পতিত সরকারের আমলে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনে বারবার সাম্প্রদায়িক উসকানি, বিভিন্ন ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর দেবালয় আক্রমণ, ভাঙচুরসহ নানা অপ্রীতিকর সাজানো ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।
পতনের পরও তাদের ঘাপটি মেরে থাকা অনুচররা তৎপর। তবে অশুভচক্রের চক্রান্ত ঠেকাতে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে পূজামণ্ডপ পাহারা দিচ্ছে। যাতে শান্তি ও সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হতে পারে। তাদের প্রতিহত করতে বিএনপি অঙ্গীকারবদ্ধ।
তিনি বলেন, ‘মধ্যযুগীয় কাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত দুর্গাপূজা একটি সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হিসেবে পালিত হয়ে আসছে, একই সঙ্গে ধর্মীয় উপাসনার মূল বজায় রেখেছে। ধর্মীয় উৎসব সাম্প্রদায়িকতার কোনো বৃত্তে আবদ্ধ থাকে না, উৎসব বৃত্ত অতিক্রম করে সব মানুষকে নিয়ে উদযাপিত হয়।
অপশক্তির অশুভ তৎপরতা দুর্গাপূজার উৎসবকে যাতে কোনোভাবেই বিঘ্ন ঘটাতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহবান জানাচ্ছি। সাম্প্রদায়িক সমপ্রীতি আমাদের জাতীয় ঐত্যিহের অংশ। আমরা সবাই বাংলাদেশি এটিই আমাদের গর্ব, এটিই আমাদের একমাত্র পরিচয়।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।