জুমবাংলা ডেস্ক : নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবার কৌশল পরিবর্তন করেছে বলে দাবি বিএনপির। একদফা আন্দোলনে রাজপথে যারা মূল ভূমিকা পালন করছেন, তাদের টার্গেট করে নীরবে আটক করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি ঘোষণা, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার কঠোর সমালোচনার পর এমন কৌশল নিয়েছে বলে মনে করছে দলটির নেতারা। গ্রেফতারের বিষয়টি যাতে সব মহলে আলোচনায় না আসে, সেজন্য সিনিয়র নেতাদের আপাতত আটক বা হয়রানি করা হচ্ছে না। প্রতিদিন মাঝারি বা নিচের সারির নেতারা গ্রেফতার হওয়ায় গণমাধ্যমেও তা গুরুত্ব দিয়ে প্রচার বা প্রকাশ হচ্ছে না। ফলে এ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীকেও পড়তে হচ্ছে না কোনো সমালোচনায়।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এমন কৌশল সম্পর্কে মাঠের সক্রিয় নেতাদের সতর্ক করা হচ্ছে। একা না চলতে দেওয়া হয়েছে পরামর্শ। কর্মসূচির আগের রাতে নিজ বাসায় না থেকে নিরাপদ স্থানে থাকতে বলা হয়েছে। হাইকমান্ডের এমন নির্দেশ পেয়ে গ্রেফতার এড়াতে তারা সতর্ক চলাফেরা শুরু করেছেন।
শুধু গ্রেফতার নয়, মামলা দেওয়ার ক্ষেত্রে কৌশল পরিবর্তন হচ্ছে বলে মনে করছেন বিএনপি নেতারা। অতীতে কোনো ঘটনা ঘটলেই দলের সিনিয়র নেতারা ঘটনাস্থলে না থাকলেও অনেককেই আসামি করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি সেটা দেখা যাচ্ছে না। ২৯ জুলাই ঢাকার প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও নেতাকর্মীদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় রাজধানীর একাধিক থানায় এক ডজনের বেশি মামলায় পাঁচ শতাধিক আসামি করা হয়েছিল। কিন্তু এসব মামলায় দলের সিনিয়র কিংবা মাঝারি সারির নেতাদের আসামি করা হয়নি। যদিও ওই কর্মসূচিতে স্থায়ী কমিটির সদস্য থেকে শুরু করে সিনিয়র অনেক নেতাই উপস্থিত ছিলেন।
জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, মামলা-হামলা, গ্রেফতার, নির্যাতন, গুম, খুন করেই এ সরকার টিকে আছে। অতীতে দেখা গেছে, আন্দোলন দমানোর কৌশল হিসাবে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়। এবারও একই পথ বেছে নিয়েছে। নেতাকর্মীদের জেলে রাখতেই সরকার বেশি আগ্রহী।
তবে বিএনপির এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন বলেন, সুনির্দিষ্ট মামলা ছাড়া কাউকে গ্রেফতার করছে না পুলিশ। যাদের বিরুদ্ধে অগ্নিসংযোগ, গাড়ি ভাঙচুর, নাশকতাসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। তারা ঢাকায় কিংবা যেখানেই থাকুক, তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
জানতে চাইলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, নানা মহলের সমালোচনার পরও থেমে নেই গ্রেফতার। তবে ভিসানীতি কিংবা নিষেধাজ্ঞার ভয়ে তারা হয়তো কৌশল পরিবর্তন করেছে। টার্গেট করে প্রতিদিন অভিযান চালানো হচ্ছে। বাসায় কিংবা কোথাও যাওয়ার পথে অনেকটা নীরবে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, সিনিয়র নেতাদের আপাতত গ্রেফতার না করে যারা আন্দোলনে মূল ভূমিকা পালন করে থাকেন, তাদের ধরা হচ্ছে। তাদের গ্রেফতার শেষ হলে সিনিয়রদের টার্গেট করা হতে পারে। কারণ, এ সরকারের মূল অস্ত্রই হচ্ছে মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের কারাগারে আটকে রাখা। যাতে রাজপথে তীব্র আন্দোলন গড়ে উঠতে না পারে। কিন্তু এবারের গণ-আন্দোলন এসব কৌশল দিয়ে দমানো যাবে না।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।