জুমবাংলা ডেস্ক: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও দুর্নীতির প্রতিবাদে রাজধানীতে ৫ ঘণ্টা প্রতীকী অনশন করেছে বিএনপি। বিকেল ৩টায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অনশনরত নেতাদেরকে পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির যৌথ উদ্যোগে এ প্রতীকী অনশন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মধ্যে এ কর্মসূচি শুরু হয়।
অনশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি কর্মসূচির শুরুতে সকাল সাড়ে ১০টায় বক্তব্য রাখেন। কর্মসূচি শেষেও তার বক্তব্য রাখার কথা ছিলো। কিন্তু অনশন শেষ হওয়া এক মিনিট আগে বক্তব্য রাখার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে। তিনি বক্তব্য না দিয়ে কর্মসূচির সব বক্তব্যের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে মির্জা ফখরুলকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেন। কিন্তু ৩টা বেজে যাওয়ার এবং অনশনের সময় শেষ হয়ে যাওয়া বিএনপি মহাসচিব বক্তব্য রাখতে অনীহা প্রকাশ করেন।
এই কর্মসূচি শুরুর আগে সকাল ৯টার দিকে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বিএনপির সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু বলেন, সকাল ১০টার আগে আপনাদের যার যা ইচ্ছে খেয়ে নিন। এরপরে কিন্তু কেউ আর কিছু খেতে পারবেন না। যদি খাওয়া হয় তাহলে অনেকেই ছবি তুলে সেগুলো সামাজিক মাধ্যমে ছেড়ে দেবে। এতে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে ও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়বে।
তাইফুল ইসলাম টিপুর এই নির্দেশনার পরেও ১০টার পর নেতাকর্মীদের প্রেসক্লাবের আশে-পাশের ফুটপাতের চায়ের দোকানে রুটি, কেক, কলা ও চা খেতে দেখা গেছে। আবার কেউ কেউ দিব্যি বাদাম ও মুড়ি চিবিয়ে যাচ্ছিলেন। অনশন শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই খাওয়াপর্ব চলে।
বিকেল ৩টায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অনশনরত নেতাদেরকে পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী।
এর আগে দুপুর ২টার দিকে প্রেসক্লাবের ভেতরে দলটির কর্মীদেরকে বিরিয়ানিও খেতে দেখা গেছে। এই বিরিয়ানি খাওয়ার আয়োজন ওয়ার্ড ও থানার শীর্ষ নেতারা করেছেন বলে দলটির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়।
অনশনে বেলা সোয়া ১১টায় জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) উদ্যোগে দুটি গান পরিবেশন করা হয়। কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ প্রেসক্লাবের সামনে ফুটপাতে চেয়ার পেতে বসেন এবং কর্মীদের বসার জন্য রাস্তায় কাপের্ট বিছিয়ে দেয়া হয়। এদিনে অনশনকে কেন্দ্র করে প্রেসক্লাবের সামনে সড়কের এক পাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এই সড়কে যানবাহন পুরানা পল্টন দিয়ে ঘুরিয়ে দেয়া হয়।
কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল সাড়ে ৮টা থেকেই ব্যানার ও ফেস্টুনসহ খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বিএনপি ও নগর বিএনপির বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং থানার নেতাকর্মীদের কর্মসূচিতে জড়ো হতে দেখা গেছে। অনশনে হাজার হাজার নেতাকর্মী দ্রব্যমূল্য কমানো এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিসহ বিভিন্ন স্লোগানে প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণ মুখরিত করে তুলেন।
অন্যদিকে প্রতীকী অনশন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে মৎস্য ভবন, কদম ফোয়ারা, পল্টনসহ প্রেসক্লাবের আশে-পাশে কঠোর নিরাপত্তার বলয় গড়ে তোলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয়।
নগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় অনশনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আযম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনশনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাগপার একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুর রকিব, ডেমোক্রেটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দীন আহমেদ মনি, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, এনডিপির একাংশের চেয়ারম্যান কে এম আবু তাহের, জামায়াত নেতা নূরুল ইসলাম বুলবুল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন একাংশের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন একাংশের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী প্রমুখ।
এক বছরে ইউরোপের দেশগুলোতে নাগরিকত্ব পেয়েছেন ৮৬৮৫ জন বাংলাদেশি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।