সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের কোটকান্দি এলাকায় পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদীর পাড়ে আনলোড ড্রেজার বসিয়ে বালু আনলোড করায় বাঁধা দেয়ায় এডভোকেট নাসির উদ্দীন (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। সে কোটকান্দি গ্রামের মো. সোনামদ্দিনের ছেলে। তিনি কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবি ফোরামের সদস্য।
গতকাল শুক্রবার রাত আটটার দিকে কোটকান্দি মোড়ে বালু ব্যবসায়ী জেলা কৃষকদলের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসান সোহাগ ও জেলা কৃষক দলের সদস্য নিরব আহমেদ রাজ্জাকসহ তার সহযোগীরা এডভোকেট নাসির উদ্দীনকে মারধর করে বলে অভিযোগ উঠে।
এ ঘটনায় আজ শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন বিএনপি ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে কোটকান্দি মোড়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিক মোল্লা বলেন, আমাদের কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ১৩টি মৌজার মধ্যে ১২টি মৌজাই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। একটি মৌজার মধ্যে আমরা বসবাস করছি। এমনিতেই প্রতি বছরই বাড়িঘর ভাঙছে। তারপরে নদীর তীরবর্তী এলাকা থেকে অবৈভাবে বালি উত্তোলন করে নদীর পাড়েই মেশিন বসিয়ে আনলোড করছে। এতে আমাদের এলাকা নদী ভাঙনে আরও হুমকির মুখে পড়ছে। এতে বাঁধা দিলে আমাদের এলাকার ছেলে এড. নাসির উদ্দীনকে মারধর করে আহত করে। আমার এর বিচারসহ অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ চাই।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আজহার উদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী, থানা শ্রমিক দলের সভাপতি বাদশা গায়ান প্রমুখ। এছাড়াও ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীসহ এলাকার প্রায় দুইশতাধিক নারী পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
আহত নাসির উদ্দীন জানান, গতকাল আমি পদ্মার পাড়ে অবৈধ বালু উত্তোলন ও আনলোডের জন্য বাঁধা দেই। এ ঘটনায় রাত আটটার দিকে কোটকান্দি মোড় ৩/৪টা মোটরসাইকেল যোগে আমাকে আক্রমন করে মারধর করে। এতে আমি আহত হই। এলাকার লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে। আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচার চাই।
কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি খোরশেদ আলম খান (চাঁন) বলেন, এই কোটকান্দি এলাকা থেকে অবৈধভাবেবালু উত্তোলন করছে। পদ্মাপাড়ে আনলোড বসিয়ে তা আনলোড করছে। ফলে এই এলাকার পদ্মা তীরবর্তী গভীর হয়ে ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে। এ ঘটনায় আমাদের ইউনিয়নের ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. নাসির উদ্দীন কে মারধর করে আহত করে। এঘটনায় আমি অবৈধ বালু উত্তোলনসহ মারধরের ঘটনায় অপরাধীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জেলা কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসান সোহাগ জানান, এ ব্যবসাটা মূলত করছেন রাজ্জাক আর জুবায়ের ওমর। আমিও তাদের সাথে আছি। তবে আমরা বালু মহালের ইজারাদারের নিকট থেকে বৈধভাবে বালু কিনে আনলোড করছি। এখানে অভিযোগকারী আমাদের পাইপ ভেঙে ফেলেছে। আমাদের লেভারদের মারধর করেছে। ড্রেজার যদি অবৈধ হয় এটা ড্রেজার মালিকদের বিষয়। আমরা তো আর ড্রেজার দিয়ে মাটি কাটিনা। সরকারি রাজস্ব দিয়ে বৈধ উপায়ে বালু কিনে ব্যবসা করছি।
জেলা কৃষকদলের সদস্য নিরর আহমেদ রাজ্জাক জানান, আমরা কয়েকজন বালু ব্যবসার সাথে জড়িত। কিন্তু হামলার ব্যাপারে আমরা জানিনা। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাদের ফাঁসানো হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।