জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে মশা। বদলে গেছে মশার জীবনকাল। বেড়ে গেছে ধ্বংসাত্মক ক্ষমতাও। বিরূপ পরিস্থিতির সঙ্গে সহজেই মানিয়ে নিচ্ছে মশা। কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয়ভাবে ম্যালেরিয়া সংক্রমণ নিয়ে সতর্ক করেছে দেশটির সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন সেন্টার।
শুধু ম্যালেরিয়া নয়, টেক্সাস, ফ্লোরিডা, হাওয়াই ও অ্যারিজোনা রাজ্যে স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়েছে। মশাবাহিত এসব রোগের প্রাদুর্ভাবে চিন্তায় পড়েছে মার্কিন স্বাস্থ্য বিভাগ। এ খবরে সেখানে আলোচনায় এখন মশা। কিন্তু ম্যালেরিয়া সংক্রমণের এই ঘটনার সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের কোনো সম্পর্ক আছে কি না, সেটি খুব শিগগিরই নিশ্চিত করে বলা কঠিন।
এখন সত্যিকার অর্থেই মশা মারতে কামান দাগানো হচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় মশা উপদ্রব বেড়েছে। তাই ড্রোনের মাধ্যমে মশাদমনে নেমেছে ক্যালিফোর্নিয়ার স্থানীয় প্রশাসন। ড্রোনের মাধ্যমে বিভিন্ন রাসায়নিক ছড়ানো হচ্ছে, যাতে মশার লার্ভা ধ্বংস হয়। আবার এক ধরনের ব্যাক্টেরিয়াও ছড়ানো হয়েছে যা মশার লার্ভা নষ্ট করে ফেলবে।
বিশেষজ্ঞরা জানান, তাপমাত্রা বাড়লে মশা শুধু দীর্ঘদিন বাঁচেই না, সেগুলো খুব দ্রুত সংক্রামকও হয়ে ওঠে। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা মশার দ্রুত বংশবৃদ্ধি ও বেশিদিন বেঁচে থাকার সুযোগ করে দেয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যদি একটি প্রাণি সুবিধা পেয়ে থাকে তাহলে সেটি হচ্ছে মশা। তারা বলছেন, অন্তত একটি প্রাণির জন্য সুবিধা হয়ে এসেছে এই পরিস্থিতি, তা হলো মশা। এই মশা, যে কি না সবচেয়ে বিরক্তিকর হয়ে উঠতে পারে, হয়ে উঠতে পারে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক, তার জন্য উষ্ণ ও আর্দ্র অবস্থা সবচেয়ে অনুকূল।
জলবায়ু পরিবর্তন তাপদাহ বাড়ছে। সে সঙ্গে ঝড়-বন্যার কারণে দীর্ঘ দিন জলাবদ্ধতা থাকছে, যেখানে মশা বংশবৃদ্ধি ঘটাচ্ছে। মশার বিস্তারে এই পরিবেশই সব থেকে উপযুক্ত। লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক অলিভার ব্র্যাডি বলেন, তাপমাত্রা বাড়লে মশা শুধু দীর্ঘদিন বাঁচেই না, সেগুলো খুব দ্রুত সংক্রামকও হয়ে ওঠে।
এছাড়া তাপমাত্রা বাড়লে মশারা আরও সুবিধা পায়। গরম বেশি পড়লে সকালে-বিকালে লোকজন ঘরের বাইরে চলে আসে, যেটি মশার দংশনের জন্য উপযুক্ত সময়। অন্যদিকে, অনেক জায়গায় তীব্র শীতে মশা মরে গেলেও এখন সেগুলো টিকে থাকছে। শুরু তাই নয়, বংশও বিস্তার করছে। মশার ভেতরে ভাইরাস বা পরজীবীর বেড়ে ওঠার গতিও বাড়ছে।
গবেষণায় বলা হচ্ছে, ম্যালেরিয়ার বিধ্বংসী রূপ দেখছে আফ্রিকার সাহারা অঞ্চল। জলবায়ু পরিবর্তন সেখানে মশাদের পরিসর উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দিচ্ছে। ম্যালেরিয়া ছড়ানো অ্যানোফিলিস মশা বছরে গড়ে প্রায় ২১ ফুট উচ্চতায় ওঠে এবং দক্ষিণে তিন মাইল পর্যন্ত চলে যায়। ফলে ম্যালেরিয়া এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে ছড়াতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।