বিনোদন ডেস্ক : বলিউড এ অনেক অভিনেতা অভিনেত্রী এসেছে গেছে। আর তাদের মধ্যে কারোর ক্যারিয়ার গড়ে গেছে আবার কেও মুখ থুবড়ে পরেছে। সেরকমই নব্বইয়ের দশকে যখন হিন্দি ফিল্মজগতে শাহরুখ, আমির, সালমান তিন খানের রাজত্ব চলছে, সেই সময় নবাগত তারকা হিসাবে নিজের জায়গা গড়ে তুলেছিলেন ইন্দ্র কুমার কিন্তু শুটিং সেটে বড় দুর্ঘটনা তার কেরিয়ারে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। চলুন জেনে নিই সেই ঘটনার কথা।
১৯৭৩ সালে ২৬ অগস্ট রাজস্থানের জয়পুরে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম ইন্দ্র কুমারের। রাজস্থানেই স্কুল-কলেজের পড়াশোনা শেষ করেছিলেন তিনি।এছাড়াও তায়কোন্ডোতে ব্ল্যাক বেল্ট ছিলেন ইন্দ্রের। তবে শৈশব থেকেই অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন বুনেছিলেন তিনি। আর অমিতাভ বচ্চনের ছবি থেকে অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ জাগে তার। এছাড়া ইন্দ্রের ন্ধুরা বার বার তাকে অভিনয়ে নামার জন্য উৎসাহ দিতেন।
কলেজের গন্ডি পার করার পর পরিবারের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করেন করার ইন্দ্র। কিন্তু ইন্দ্র অভিনয় নিয়ে কেরিয়ার গড়তে চান শুনে তার বাবা বেঁকে বসেন। অভিনয়ের শখ ছেড়ে ইন্দ্রকে চাকরি খোঁজারও পরামর্শ দেন তিনি। কিন্তু ইন্দ্রের মা তার পুত্রের চোখে স্বপ্নপূরণের তৃষ্ণা লক্ষ করেছিলেন। তাই ইন্দ্রকে মুম্বই যাওয়ার অনুমতি দেন।
এরপর অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মুম্বাই পাড়ি দেন ইন্দ্র। মিউজিক ভিডিও দিয়ে কাজ শুরু করেন ইন্দ্র। কাজের সূত্রেই মহেশ কোঠারির সঙ্গে আলাপ হতেই সুযোগ পান মাসুম ছবিতে। তার পর অক্ষয় কুমার, সানি দেওল, গোবিন্দ এবং সলমন খানের মতো নায়কদের সঙ্গেও অভিনয় করেছেন তিনি।
কেরিয়ারের শুরুতেই জীবেন আসে প্রেম। নায়িকা মনিকা বেদীর সঙ্গে ছবিতে অভিনয় করতে গিয়ে ঘনিষ্ঠ হয়ে পরেন ইন্দ্র। যদিও বহুচর্চিত প্রেম দীর্ঘস্থায়ী হয়নি বেশিদিন। তারপরেই বলি অভিনেত্রী ইশা কোপিকর-এর ছবি করতে গিয়ে প্রেমে পরেন ইন্দ্র। লিভ-ইন সম্পর্কে থাকা শুরু করলেও তাদের সম্পর্কও ভেঙে যায়।
তবে শুধু প্রেম নয়, দুর্ঘটনাও কেরিয়ারের সুযোগ কেড়ে নিয়েছিল ইন্দ্রর।মসিহা’ ছবিতে মোহনের সঙ্গে হেলিকপ্টারে একটি অ্যাকশন দৃশ্যে অভিনয়ের কথা ছিল ইন্দ্রের। চিত্রনাট্যের প্রয়োজন অনুযায়ী হেলিকপ্টার থেকে ১০০ ফুট নীচে লাফ দিতে হত ইন্দ্রকে। কিন্তু হেলিকপ্টার থেকে লাফ দেওয়ার সময় এয়ারব্যাগের উপর না পরে দূরে ছিটকে পরেন অভিনেতা। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ইন্দ্রকে।
চিকিৎসকেরা জানান, ইন্দ্রের দুই পা ভেঙে গিয়েছে। তিন বছর যে তিনি চলাফেরা করতে পারবেন না তাও জানিয়ে দেন চিকিৎসকেরা। সেই সময় ইন্দ্রের হাতে ১৫ থেকে ২০টি বড় বাজেটের ছবি ছিল। কিন্তু ইন্দ্রের শারীরিক অবস্থার জন্য খবর তার সই করা সব ছবি হাত থেকে চলে যায়।
কেরিয়ারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনও খুব একটা সুখকর ছিল না ইন্দ্রের। বলি অভিনেত্রী ইশার সঙ্গে সম্পর্কে ইতি টানার পর সোনাল কারিয়া নামে এক মহিলার সঙ্গে সাত পাকে বাঁধা পরেন ইন্দ্র। কিন্তু বেশি দিন সংসার করতে পারেননি ইন্দ্র। বিচ্ছেদের সময় সোনালি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন বলে জানান তিনি। সে কথা ইন্দ্রকে জানালে তার তরফে কোনও উত্তর মেলেনি বলেও দাবি করেন সোনালি। বিচ্ছেদের পর এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন সোনালি।
এরপর কমলজিৎ কউর নামের এক মডেলকে বিয়ে করেছিলেন ইন্দ্র। একই বছর তাদের বিচ্ছেদও হয়ে যায়। তারপর আবার ২০১৩ সালে পল্লবী সরফের এবং ইন্দ্র গাঁটছড়া বাঁধেন। বিয়ের পর এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন পল্লবী। তারপরেই ২০১৪ সালে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে অভিনেতার বিরুদ্ধে। দেড় মাস জেলে থাকার পর জামিনে ছাড়া পান ইন্দ্র। সেই সময় ইন্ডাস্ট্রির কাউকে পাশে পাননি অভিনেতা। তারপরেই অভিনয় জগতে ফিরতে চেয়েও ব্যর্থ হয়েছিলেন অভিনেতা। অতীত তাকে তাড়িয়ে বেড়িয়েছে। শেষমেষ ২০১৭ সালে ২৮ জুলাই হার্ট অ্যাটাকে মারা যায় ইন্দ্র কুমার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।