আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জ্বালানি সংকটে গাজার সবচেয়ে বড় দুই হাসপাতাল আল-শিফা ও আল-কুদসের সেবা কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। সোমবার (১৩ নভেম্বর) আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
জ্বালানি সংকটের কারণে রোববার (১২ নভেম্বর) হাসপাতাল দুটি সব ধরনের অপারেশন স্থগিত করে দিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আশঙ্কা করছে, এর ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে। সংকট এড়াতে সংস্থাটি দ্রুত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।
আল-শিফা হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানান, হাসপাতালের রোগী ও কর্মরত ব্যক্তিরা বিদ্যুৎ, পানি ছাড়াই থাকছেন। এমনকি সেখান থেকে বের হওয়াটা তাদের জন্য নিরাপদ নয়। সব মিলিয়ে তারা ভয়াবহ এক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন।
চিকিৎসক বলেন, এভাবে আর চলতে পারে না। আমাদের স্টাফ ও রোগীদের এখান থেকে নিরাপদে বের করে নিয়ে যাওয়া দরকার।
জ্বালানির অভাবে হাসপাতালটির মূল জেনারেটর কাজ না করায় তারাও হাসপাতালের অপারেশন বন্ধ রেখেছেন বলে জানান উত্তর গাজার কামাল ইদওয়ান হাসপাতালের ব্যবস্থাপক।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ট্রেডোস আধানাম ঘেব্রিসাস সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে বলেন, হাসপাতালগুলো যেখানে মানুষকে বাঁচানোর কথা, সেখানে সেগুলো মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্ব চুপ করে বসে থাকতে পারে না। বর্তমানে আল-শিফা হাসপাতাল তাদের সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়েছে।
এছাড়া আল-শিফা হাসপাতালে হামলা ও জ্বালানি সংকটে ৩ জন নার্সসহ ১২ জন রোগী নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে ৩ জন নবজাতক শিশু রয়েছে। তবে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তিন নবজাতক শিশুর মৃত্যুর খবর জানিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, আল-শিফা হাসপাতালে ৬০০ থেকে ৬৫০ জন রোগী, ২০০ থেকে ৫০০ জন স্বাস্থ্যকর্মী ও দেড় হাজারের বেশি মানুষ আটকা পড়েছেন।
তবে ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, হাসপাতালটিতে হামাস বাহিনী লুকিয়ে রয়েছে। সেখান থেকেই তারা তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। হামাস ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য ইসরায়েলি সেনাদের এ দাবি অস্বীকার করেছে।
ইসরায়েলের সেনারা একটি ভিডিও প্রকাশ করে জানায়, তারা নবজাতক শিশুদের উদ্ধারের জন্য ৩০০ লিটার জ্বালানি হাসপাতালের প্রবেশপথে রেখেছে। কিন্তু হামাস তাদের এ চেষ্টায় বাধা দিয়ে জ্বালানি নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
আল-শিফা হাসপাতালের পরিচালক মুহাম্মদ আবু সালমিয়া ইসরায়েলি সেনাদের এ দাবিকে প্রোপাগান্ডা বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলি সেনারা এ ভিডিওর মাধ্যমে বিশ্বকে দেখাতে চায় যে, তারা শিশুদের হত্যা করতে চায় না। কিন্তু তারা ৩০০ লিটার জ্বালানির মাধ্যমে বিশ্ববাসীকে ধোঁয়াশার মধ্যে রাখার চেষ্টা করছে। তাদের এই ৩০০ লিটার জ্বালানি দিয়ে ৩০ মিনিটও ভালোভাবে কাজ করা যাবে না।
৭ অক্টোবর ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর থেকে গাজার ৩৫টি হাসপাতালের মধ্যে অর্ধেকের বেশি বন্ধ হয়ে গেছে। ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ১১ হাজার ৭৮ ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে অধিকাংশই নারী-ও শিশু।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।