জুমবাংলা ডেস্ক : ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণে রাজশাহীতে নির্মাণাধীন ‘বঙ্গবন্ধু স্কয়ার’র এখন কী হবে তা ঠিক করতে পারছে না নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ)। জানা যায়, বঙ্গবন্ধুর চেতনা, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে ২০১৭ সালে ‘বঙ্গবন্ধু স্কয়ার’ প্রকল্প গ্রহণ করে আরডিএ। এক দফা মেয়াদ বাড়ানোর পর ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে নির্মাণ কাজের মেয়াদ শেষ হলেও প্রকল্পের প্রথম ফেজের কাজ এখনো চলমান। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নুর হোসেন জেভি ট্রেডার্সের ম্যানেজার সাজ্জাদ হোসেন জানান, নভেম্বরে প্রথম ফেজের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় ধাপের কাজ হবে কি না, আমার জানা নেই। এদিকে রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রকল্পটি নেওয়া হয়েছে-এমন বাস্তবতায় সম্প্রতি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ৭১ কোটি ৮১ লাখ ৮২ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের দ্বিতীয় ফেজ বাতিল করেছে।
রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, ২০১৭ সালে ২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের নকশা করে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। ৫৯ কোটি ২৮ লাখ টাকা বাস্তবায়ন ব্যয় ধরে ২০১৮ সালে প্রকল্প পাস হয়। শুরুতে প্রকল্প মেয়াদ ছিল ২০১৯ সাল পর্যন্ত। যদিও অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হয় ২০২০ সালে। কাজের মাঝে নকশায় পরিবর্তন এনে আরও এক কোটি ৪৪ লাখ টাকা নেয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ, তিনটির স্থলে ৫টি লিফট, ৪২ টন থেকে বাড়িয়ে ২৬২ টনের এয়ারকুলার, আসবাবের পরিমাণ বৃদ্ধি, ইলেকট্রিক সাব-স্টেশনের ক্যাপাসিটি বাড়িয়ে ৫০০ কেভি, জেনারেটর ও অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থাপনা খাতের খরচ বাড়ানোসহ সংশোধনের পর নানা খাতে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১২৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
ব্যয়বৃদ্ধির বিষয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘দুর্নীতির কারণে প্রকল্পের ব্যয় দ্বিগুণ হয়েছে। কেনাকাটার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি ছিল না। পরিকল্পনা ছিল এক একর জমির ওপর তিন তলা ভবনটিতে থাকবে গাড়ি পার্কিং, জলধারাবেষ্টিত বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য, স্থায়ী আর্ট গ্যালারি, আধুনিক রেস্তোরাঁ, দৃষ্টিনন্দন ল্যান্ডস্কেপ। তবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সেই পরিকল্পনা বাতিল করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এখন এ ভবন কী কাজে ব্যবহার হবে, সেটি নির্ধারণ করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ।
দুর্নীতির অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হায়াত মো. রহমতুল্লাহ বলেন, ‘এখানে (প্রকল্প) কোনো দুর্নীতি হয়নি। সময়ের প্রয়োজনে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছিল। এখন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার যেভাবে চিন্তা করবে সেভাবেই এই অবকাঠামো ব্যবহার করা হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।