পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে এক জেলের জালে ধরা পড়েছে প্রায় ২০ কেজি ওজনের বিরল প্রজাতির বাদুড় মাছ।
শনিবার (৯ আগস্ট) মহিপুরের আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের কাছে একটি আড়তে মাছটি বিক্রির জন্য আনা হয়। পরে এটি ৬ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়।
মাছটির অদ্ভুত আকৃতি দেখতে স্থানীয়রা আড়তে ভিড় করেন। স্থানীয় জেলেরা জানান, এ ধরনের মাছ সচরাচর জালে ওঠে না। আকার-আকৃতিতে ভিন্ন ও খাদ্যোপযোগিতা কম হওয়ায় স্থানীয় বাজারে এর চাহিদাও তেমন নেই। জেলেদের কাছে মাছটি ‘বাদুড় মাছ’ নামেই পরিচিত।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও সামুদ্রিক প্রাণী বিশেষজ্ঞ মো. কামরুল ইসলাম জানান, বৈজ্ঞানিকভাবে এ মাছ Manta ray বা Bat fish পরিবারের অন্তর্ভুক্ত।
এটি সাধারণত ইন্দো-প্যাসিফিক ও ফিলিপাইন সাগরে বিচরণ করে। বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরেও মাঝে মাঝে এদের দেখা মেলে। সাদা পেট, কালো বা বাদামি রঙের পিঠ, লম্বা সরু লেজ, প্রসারিত মাথা এবং বাদুড়ের ডানার মতো বিশাল দুটি পাখনা-এগুলোই এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য।
বিশেষজ্ঞের মতে, স্ত্রী বাদুড় মাছ ৬ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে এবং ওজন ৯০ কেজি পর্যন্ত হয়, আর পুরুষ মাছ তুলনামূলকভাবে ছোট হয়। এরা সাধারণত ১৮০ মিটার গভীরতা থেকে অগভীর উপসাগর, প্রবালপ্রাচীর ও বালুময় তটরেখায় বসবাস করে। খাদ্য হিসেবে সমুদ্রের তলদেশে থাকা মলাস্ক, ক্রাস্টেসিয়ান (চিংড়ি ও কাঁকড়ার জাত) এবং ছোট মাছ শিকার করে।
বাদুড় মাছ ডিম পাড়ে না, বরং একসঙ্গে ২ থেকে ১০টি বাচ্চা জন্ম দেয়। এদের গর্ভকাল ৯ থেকে ১২ মাস। হাঙর গোত্রীয় হওয়ায় এবং পিঠের চামড়া মোটা থাকায় অনেক অঞ্চলে এটি খাদ্য হিসেবে জনপ্রিয় নয়। তবে বিশ্বজুড়ে এটি সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের এক আকর্ষণীয় প্রজাতি হিসেবে পরিচিত।
স্থানীয় জেলেদের মতে, গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে মাঝে মাঝে এমন বিরল মাছ ধরা পড়ে। যদিও বাণিজ্যিকভাবে এর তেমন ব্যবহার নেই, তবে পর্যটনকেন্দ্রিক এলাকায় প্রদর্শন বা গবেষণার কাজে এর মূল্য থাকতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।