আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টির কারণে ভয়াবহ হয়ে উঠছে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি। ১০ জেলায় বন্যাকবলিত অন্তত ৪২ লাখের বেশি মানুষ। আকস্মিক বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশেরও কিছু ব্যর্থতা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাদের মতে, যেভাবে আবহাওয়ার পূবার্ভাস ও সতর্ক বার্তা দেয়া হয়, তা সাধারণ মানুষের বোধগম্য নয়। আরও সহজ করে সতর্কতা দেয়া হলে মানুষ আগাম প্রস্তুতি নিতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৮ আগস্ট থেকে বন্যা হতে পারে, এমন তথ্য থাকলেও ছিল না সঠিক ব্যাখ্যা। এ নিয়ে সাধারণের বোধগম্য করে পূর্বাভাস দেয়া হয়নি। এ কারণে প্রয়োজনীয় পূর্বপ্রস্তুতি নিতে পারেনি মানুষ।
জলবায়ু ও পরিবেশ গবেষক ড. আইনুন নিশাত বলেন, ‘ফ্লাড ফোরকাস্ট, পূর্বাভাস আরেকটি হলো সতর্কীকরণ বা ওয়ার্নিং। আমাদের ফোরকাস্ট সঠিক, গত ১৮ তারিখ (আগস্ট) থেকে বলা আছে যে এ ধরনের বন্যা হতে পারে। কিন্তু ওয়ার্নিং বলে কিছু নাই, ওয়ার্নিং যেটা আছে, সেটা সাধারণ মানুষের বোধগম্য করে দেয়া হয় না। একইভাবে বৃষ্টির ফোরকাস্ট আবহাওয়া অফিস যেটা দিয়ে থাকে এটাও সাধারণ মানুষের বোধগম্য করে দেয়া হয় না।’
প্রতিবেশী দেশ ভারতে যেখানে অরেঞ্জ অ্যালার্ট এবং ত্রিপুরাতে রেড অ্যালার্ট আছে। বাংলাদেশের ফোরকাস্ট সঠিক থাকলেও সতর্কতা বলে কিছু ছিল না। বন্যার বিষয়গুলো সাধারণ মানুষদের আরও বোঝানো দরকার।
ড. আইনুন নিশাত আরও বলেন, ‘গোমতীর একটা পয়েন্টে ভারতে নদীর পানির কি অবস্থা, সেটা আসছে, সেটা ব্যবহার করে আমাদের এইখানে ফ্লাড ফোরকাস্টিং ওয়ার্নিং সেন্টারে সতর্কতা দেয়। কিন্তু এটি সাধারণ মানুষ বোঝে না এই কারণে যে, তাদের বোঝার মতো করে এই সতর্কতা দেয়া হয় না।’
এদিকে, জুলাইয়ের তুলনায় আগস্টে বৃষ্টি কম হলেও প্লাবনের ঘটনাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনে সাবেক চেয়ারম্যান।
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘যে প্লাবনটা ঘটেছে, এইটার ওপর যে কথা বলাবলি হচ্ছে, উজানে যে বাঁধটা, মেঘালয়-ত্রিপুরায় যেটা সৃষ্টি হয়েছে সেইটা একটা বাস্তবতা।’
নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক এই চেয়ারম্যানের মতে, বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশেরও ব্যর্থতা আছে। প্রয়োজনীয় খনন কাজ করতে পারলে এ ধরনের সমস্যা অনেকটাই এড়ানো যেত।
শিক্ষককে জিম্মি করে পদত্যাগে বাধ্য, নেপথ্যে দোকান ভাড়া নিয়ে দ্বন্দ্ব
ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার আরও বলেন, ‘আমাদের নাব্যতা, এই যে ধারা, জলবায়ু বা বেশি পানি যে আসবে সেইটা ভেবে আরও বিস্তৃত করা, আরও গভীর করা, সেইটা কিন্তু আমরা করতে পারিনি। সেই দিক থেকে আমাদের একটা চরম ব্যর্থতা তো অবশ্যই আছে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।