জুমবাংলা ডেস্ক : তাহরীমা আকতার। রাঙামাটি জেলা সদরের তবলছড়ির আসাম বস্তির বাসিন্দা। জন্মেছেন এখানে। কিন্তু ভোটার তালিকায় নাম উঠিয়ে পাওয়া জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) তাঁর জন্মস্থান ভিয়েতনাম! বাংলাদেশের রাঙামাটি থেকে মিয়ানমার, লাওস পেরিয়ে কয়েক হাজার মাইল দূরের ভিয়েতনামে জীবনেও যাননি তাহরীমা। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের দেওয়া এনআইডি বলছে, সেখানেই তাঁর জন্ম।
রাঙামাটির আরও অনেকের জাতীয় পরিচয়পত্রে এমন ভুল হয়েছে। জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের দাবি, সফটওয়্যারের জটিলতায় ভুল জন্মস্থান এসেছে।
শুধু রাঙামাটি নয়; এনআইডিতে এমন ভূতুড়ে কাণ্ড ঘটেছে মৌলভীবাজারেও। জাতীয় পরিচয়পত্রের ভুল শোধরাতে গিয়ে জেলার বড়লেখার অনেক বাসিন্দার জন্মস্থান বাংলাদেশের পরিবর্তে লেখা হয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলা!
গত মে মাসে সারাদেশে ভোটার তালিকা হালনাগাদ শুরু হয়। রাঙামাটিতে তা হয় জুনে। ১৮ বছরের বেশি বয়সীরা বাবা-মায়ের এনআইডি, নিজের জন্ম নিবন্ধন সনদ নিয়ে তালিকায় নিবন্ধিত হন। তাহরীমা আকতার জানান, শর্তানুযায়ী তিনিও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্থানীয় নির্বাচন কার্যালয়ে জমা দেন। ২৮ জুলাই তাঁর এনআইডি প্রদানের তারিখ ছিল। অনলাইন কপি ডাউনলোড করে দেখেন, তাঁর জন্মস্থান ভিয়েতনাম।
আরেক নতুন ভোটার অপি সাহারও জন্মস্থান এসেছে ভিয়েতনাম। তিনি জানান, অনলাইন কপি ডাউনলোড করে দেখেন, এনআইডির বাকি সব তথ্য ঠিক থাকলেও জন্মস্থানের ঘরে লেখা রয়েছে ভিয়েতনাম, যা দেখে তিনি হতবাক!
রাঙামাটি জেলার জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান জানান, সফটওয়্যার জটিলতায় হওয়া এ ভুল সংশোধনে ঢাকায় যোগাযোগ করেছেন। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এক দিনের মধ্যেই সমাধান করে দেওয়া হবে।
বড়লেখা (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, পৌরসভার বাসিন্দা শিউলি বেগম নামের ভুল সংশোধনে অনেক দিন ঘুরে ২৯ জুলাই এনআইডি ডাউনলোড করেন। বাকি তথ্য ঠিক থাকলেও জন্মস্থান লেখা হয়েছে ভেনেজুয়েলা। সেই দেশের নাম কখনোই না শোনা শিউলি বেগম বলেন, ভুল ঠিক করাতে দিয়ে আরও বড় ভুল হলো। এই এনআইডি কোনো কাজে লাগবে না।
তালিমপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা ফয়সল আহমদ বলেন, তাঁর বোন রোমানা বেগম ভুল সংশোধনে আবেদন করেছিলেন। পরে মেসেজ পেয়ে এনআইডি ডাউনলোড করে দেখেন, জন্মস্থান লেখা হয়েছে ভেনেজুয়েলা।
বর্ণি ইউনিয়নের সাইবুর রহমানের এনআইডিতে একই রকম ভুল হয়েছে। তিনি যুক্তরাজ্যে চলে গেছেন।
নাম প্রকাশ না করে আরেক ভোটার বলেন, পাসপোর্ট করাতে দুই মাস ঘুরে এনআইডি সংশোধন করেছেন। বহুবার উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ে গিয়ে ফেরত এসেছেন অফিসার নেই শুনে।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এসএম সাদিকুর রহমান বলেছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।