জুমবাংলা ডেস্ক : বোরো ধান রোপণে ব্যাস্ত সময় পার করছেন ময়মনসিংহে কৃষকেরা। কেউ জমি তৈরি করে বীজতলা থেকে চারা তুলে রোপণ করেছেন আবার কেউ কেউ ধান রোপণ শেষে পরিচর্যা শুরু করেছেন। তবে এবার বোরো আবাদের শুরুতেই কৃষকেরা বাড়তি খরচের মুখে পড়েছেন। বিশেষ করে ডিজেল তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায়, জমিতে হাল চাষ ও সেচ দিতে খরচ বেড়েছে তাদের।
এদিকে বীজ, সার ও শ্রমিকের মজুরির পেছনেও বাড়তি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে কৃষকদের। গত বছরের তুলনায় সব মিলিয়ে এবার বিঘা প্রতি একজন কৃষকের ব্যয় বেড়েছে অন্তত ২৫ ভাগ টাকা।
জেলার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর বোরো মৌসুমে এক বিঘা জমিতে পাঁচ চাষে ট্রাক্টর খরচ ছিল ১২০০ টাকা। তবে এ বছর চাষে খরচ হচ্ছে ১৮০০ টাকা। সেচ খরচ ছিল বিঘাপ্রতি ১৫০০ টাকা। সেখানে এবার খরচ হচ্ছে ১৮০০ থেকে ২০০০ হাজার টাকা। একই সঙ্গে বিঘা প্রতি চারা রোপণের খরচও বেড়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা করে।
জেলার তারাকান্দা উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক ইমরান হোসেন চলতি মৌসুমে এক একর জমি বোরো আবাদের জন্য প্রস্তত করছেন। এর জন্য বীজতলার চারাও তৈরি করেছেন তিনি। এখন জমি প্রস্তুত করে চারা রোপণ করছেন।
ইকরাম হোসেন বলেন, ‘চারা রোপণ পর্যন্ত ইতোমধ্যে বিঘা প্রতি গত বছরের চেয়ে ১৫০০ টাকা বেশি খরচ হয়েছে।’
সদর উপজেলার চর ঈশ্বরদিয়া মেরী আগলা কান্দাপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম নিজ জমিতে ৬ জনের শ্রমিক নিয়ে কাঠা প্রতি (আট শতাংশ) ৬০০ টাকা করে বোরো ধানের চারা রোপণ করছেন। তিনিও বলেন, ‘আমরা যারা কৃষক তাদের পুঁজি সামান্য। সবকিছুর দাম বেড়েছে। এই খরচের বাজারে সংসার চালানো দায়। এখন বোরো আবাদে অতিরিক্ত খরচ মেটাতে আমাদের কষ্ট হচ্ছে।’
একই উপজেলার চর লক্ষীপুর গ্রামের কৃষক গিয়াস উদ্দিন মাস্টার বলেন, ‘গত বোরো মৌসুমে শ্রমিকদের সবার নাস্তা ও দুপুরে ভাত খাওয়াসহ জনপ্রতি দৈনিক ৪০০ টাকা মুজুরি দিতে হতো। এই বছর তা ১০০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না।’
ফুলপুর উপজেলার পাগুলি গ্রামের কৃষক মতিউর রহমান বলেন, ‘বিদ্যুৎবিল, সেচ খরচ, হালচাষ খরচ, শ্রমিক খরচ, সার ও কিটনাশক খরচ সবই বেড়েছে। এই অবস্থায় আমাদের চাষাবাদ করা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। কিন্তু জমি চাষ না করেও উপায় নেই। সারাবছর খাবো কি? সরকার যদি সহায়তার হাত বাড়ায় তাহলে কৃষকদের জন্য ভালো হতো।’
ময়মনসিংহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় মোট ২ লাখ ৬২ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে সহজেই বানিয়ে ফেলুন আইফোন ১৪ প্রো ম্যাক্স
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মতিউজ্জামান বলেন, ‘বৈশ্বিক সঙ্কটের কারণে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে চলতি বছরে বোরো ধান আবাদে কৃষকদের খরচ কিছুটা বেড়েছে। আমরা কৃষকদের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করছি। এখনো প্রায় ৫০ শতাংশ ধান রোপণের কাজ বাকি আছে। আশা করছি কৃষকরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বোরো ধারণের চারা রোপণের কাজ শেষ করবেন।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।