জুমবাংলা ডেস্ক : ইরি বোরো ফসলের মাঠ যেন সবুজ চাদরে ঢাকা। মাঠজুড়ে শুধু সবুজ আর সবুজ ধানের চারা। চারিদিকে সবুজে দোল খাচ্ছে। এ এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। দুচোখ জুড়িয়ে যায়। শীতল হয় মনপ্রাণ। যেদিকেই চোখ যায় শুধু সবুজের সমাহার। এখন মাঠ জুড়ে সবুজ রঙে সেজে উঠেছে প্রকৃতির এক অপরুপ সৌন্দর্য।
ময়মনসিংহের নান্দাইলে বোরো ফসলের মাঠ এখন ঘন সবুজের সমারোহ। যতদূর চোখ যায় ঢেউয়ের মতো খেলে যাচ্ছে ধান গাছের সবুজ পাতা ও শীষ। আর এই সবুজ ধান গাছের ঢেউয়ে দুলছে নান্দাইলের কৃষকের স্বপ্ন।
ইরি-বোরো ধান লাভজনক ফসল। তাই কৃষকরা বোরো মৌসুমকে ঘিরেই নানা স্বপ্ন দেখে। আর কৃষকের আগামীর সোনালী স্বপ্ন লুকিয়ে আছে সবুজ ধান ক্ষেতের মাঝে। বসন্তের সাজে সবুজের আভা ছড়িয়ে পড়েছে চারিদিকে।
মাঠে মাঠে হাওয়ায় দুলছে ইরি বোরো ধানের সবুজপাতা, আর আনন্দে দুলছে কৃষকদের মন। কৃষকের মনে উঁকি দিচ্ছে এক ভিন্ন আমেজ। সবুজ ঘেরা বোরো ফসলের মাঠ দেখে বারবার ফিরে তাকায় কৃষক, থমকে দাঁড়ায় পথিক।
নান্দাইল উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন ও ১ পৌরসভায় ২২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর মধ্যে ব্রি ধান২৮,ব্রি ধান২৯, ব্রি ধান ৫৮,ব্রি ধান ৮৮,ব্রি ধান ৮৯, ব্রি ধান৯২, বঙ্গবন্ধু ধান- ১০০ এবং হাইব্রিড ছক্কা, হীরা, ঝলক ইত্যাদি জাতের ধান রোপন করা হয়েছে। আর বোরো ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৯ হাজার ৯৬৪ মেট্রিক টন।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বোরে ধানের ক্ষেত প্রকৃতির খেয়ালে গাঢ় সবুজ রঙ ধারণ করেছে। সবুজে ঘেরা রোপা আমনের মাঠে কৃষক ব্যস্ত সময় পার করছেন। ধানগাছ ভাল রাখতে ও ধানের উৎপাদন বাড়াতে কৃষকরা ক্ষেতের ঘাস পরিষ্কার, সার ও বালাইনাশক ঔষধ প্রয়োগ ও পার্চিংসহ সার্বক্ষণিক পরিচর্যা করছেন। মাঝে মধ্যে হচ্ছে বৃষ্টি, বোরো আবাদের জন্য আবহাওয়া রয়েছে অনুকূলে। তাই ফুরফুরে মেজাজে রয়েছে কৃষকরা।
ধানের চারাগুলো থেকে থোর বের হতে শুরু করেছে। আর মাত্র ক’দিন পরেই সবুজ ধানগাছ হলুদ বর্ণ ধারণ করবে। বোরো ক্ষেত থেকে বের হবে মৌ মৌ গন্ধ। এরপর সোনালী ধানের শীষে ঝলমল করবে ফসলের মাঠ। সোনালী স্বপ্নে সোনালী ধানে ভরে উঠবে কৃষকের শুন্য গোলা। কৃষাণীর মুখে ফুটবে হাঁসি।
মাঠ ভরা ফসলের স্বপ্ন দেখে কৃষকদের চোখে মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের ছোঁয়া। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটে, তাহলে এবার ইরি-বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও পরামর্শে চাষাবাদকৃত ইরি-বোরো ধান গতবারের চেয়ে এবার ভালো হয়েছে। যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না আসে, তবে এবার ধানের বাম্পার ফলন হবে।
উপজেলার বীরকামট খালী গ্রামের কৃষক মুজিবুর রহমান, নুরুল ইসলাম, মিলন মিয়া বলেন, বোরো ধানের ফসল অনেক ভালো হইছে। যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে সুন্দরভাবেই ফসল ঘরে তুলতে পারবেন বলে তারা আশা করেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন, এবার বোরো ফসলের মাঠ অনেক সুন্দর হইছে। ইরি- বোরো ধানের বাম্পার ফলন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। তাই ধানের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ধান উৎপাদন ছাড়িয়ে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।