বিনোদন ডেস্ক : তারকা স্ত্রী মৌসুমীকে নিয়ে সুসংবাদ শোনালেন ওমর সানী। বিতর্কিত অভিনেতা জায়েদ খানকে নিয়ে তাদের মধ্যে যে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়েছিল, তা মিটে গেছে বলে এক অডিও বার্তায় জানিয়েছেন ‘কুলি’ খ্যাত চিত্রনায়ক। সঙ্গে একরাশ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ছুঁড়ে দিয়েছেন নানা প্রশ্ন।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো ওই অডিও বার্তায় ওমর সানী দাবি করেছেন, ‘আমাদের মধ্যে যে সমস্যা ছিল, তা মিটে গেছে। আমরা একই ছাদের নিচে একসঙ্গে আছি। এক ঘরে থাকছি। আমি, মৌসুমী, ছেলেমেয়ে ফারদিন, ফাইজা, আমার ছেলের বউ আয়েশা- সবাই একসঙ্গে আছি। ভালো আছি, সুখে আছি আমরা।’
তার এবং মৌসুমীর কিছু কথা এডিট করে রংচং লাগিয়ে প্রচার করা হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওমর সানী। বলেন, ‘মৌসুমী আমার স্ত্রী। আমি তো চরিত্র নিয়ে কথা বলছি না। আপনাদের কে বলেছে তার জনপ্রিয়তার শৃঙ্খলে আঘাত করার? আপনাদের এই অধিকার কে দিয়েছে?’
অভিনেতা অভিযোগ করেন, ‘এডিট করে একজনের কথা আরেকজনের মধ্যে ঢুকিয়ে সাংসারিক দূরত্ব আপনারাই সৃষ্টি করছেন। এসব এডিটিং মার্কা জিনিস ছেড়ে দেন দয়া করে। যারাই এটি করছেন, তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক।’
দাম্পত্য কলহ সম্পর্কে ওমর সানীর প্রশ্ন, ‘স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কিছুটা খুনসুটি, হালকা দূরত্ব কার না হয়? আপনার মা-বাবার মধ্যে ছিল না? আপনার পাড়া–প্রতিবেশীর মধ্যে এটি দেখেছেন না? বা আপনার নিজের মধ্যে কি এটি নেই? আমরা কি দুধে ধোয়া তুলসী পাতা? তাহলে কেন মৌসুমীকে নিয়ে এসব বলছেন?’
এর আগে মৌসুমী গণমাধ্যমে দেওয়া অডিও বার্তায় স্বামী ওমর সানীকে ‘ভাই’ বলে সম্মোধন করেন। এ প্রসঙ্গে অভিনেতার সাফাই, ‘রাগ করে ও (মৌসুমী) অনেক সময় আমাকে ভাই বলে। আমিও তাকে আপনি করে বলি, ম্যাডাম বলি। এতে তো কোনো সমস্যা দেখছি না।’
সম্প্রতি মৌসুমী এবং ওমর সানীসহ পরিবারের সবার একসঙ্গে খাবার টেবিলের ছবি এবং ভিডিও প্রকাশিত হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ওমর সানী এবং তার ছেলে ফারদিন এহসান স্বাধীনের আইডিতে সেগুলো পোস্ট করা হয়। তা দেখে তারকা দম্পতিকে শুভকামনা জানান সবাই। ইতিবাচক কিছুর ইঙ্গিত তখনই পাওয়া গিয়েছিল।
গত ১০ জুন রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে ছিল অভিনেতা-প্রযোজক ডিপজলের ছেলের বিবাহোত্তর সংবর্ধণা। সেই দাওয়াতে গিয়ে জায়েদ খানকে সবার সামনে কষে চড় মারেন ওমর সানী। অভিযোগ, জায়েদ খান দীর্ঘদিন ধরে মৌসুমীকে নানা ভাবে বিরক্ত করেন। তাকে অসম্মান করেন।
চড় খাওয়ার পর অপমানিত জায়েদ খান নাকি কোমর থেকে পিস্তল বের করে ওমর সানীকে গুলি করার হুমকি দেন। যদিও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ডিপজল, চিত্রনায়িকা রোজিনা ও অঞ্জনার মতো জ্যেষ্ঠ শিল্পীরা দাবি করেন, পিস্তল বের করে গুলি করার হুমকি দেওয়ার মতো কোনো ঘটনা সেখানে ঘটেনি। শুধু একটু কথা কাটাকাটি আর ধাক্কাধাক্কি।
জায়েদ খানও শুরু থেকে এ ঘটনা অস্বীকার আসছেন। তার দাবি, বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুব কড়া। সেখানে কোনো ধরনের অস্ত্র নিয়ে ঢোকা যায় না। ওদিকে, ঘটনার এক দিন পর জায়েদ খানের নামে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ জানান ওমর সানী।
ওই অভিযোগপত্রে অভিনেতা উল্লেখ করেন, তার স্ত্রী মৌসুমীকে চার মাস ধরে ফোনে নানাভাবে বিরক্ত করেন জায়েদ খান। আপত্তিকর এসএমএস দেন। প্রতিবাদ করলে কোমর থেকে পিস্তল বের করে গুলি করার হুমকি দেন। ওমর সানীর দাবি, এমন একজন অস্ত্রধারী শিল্পী সমিতির সদস্য থাকতে পারে না। তার সদস্যপদ বাতিল করা হোক।
এই ঘটনার পর ভিলেন হয়ে যান জায়েদ খান। সবারই ধারণা ছিল, এবার বুঝি আর রক্ষা নাই। মৌসুমীর মতো একজন তুমুল জনপ্রিয় এবং সিনিয়র অভিনেত্রীর সঙ্গে বেয়াদবির মজা হাড়ে হাড়ে তিনি টের পাবেন। কিন্তু সবাইকে অবাক করে সেই জায়েদের পক্ষেই অডিও বার্তা দেন মৌসুমী। ভিলেন থেকে জায়েদকে বানিয়ে দেন হিরো। সানি হয়ে যান ভিলেন।
এই ঘটনার আগে কাকপক্ষীও জানতো না, কী ঝড় বইছে সানী-মৌসুমীর দাম্পত্য জীবনে। গুঞ্জন ওঠে, এই তারকা দম্পতির ২৭ বছরের সংসার বুঝি এই ভাঙল। নইলে স্বামীর বিপক্ষে কেন কথা বলবেন মৌসুমী। এই জল্পনার পারদ আরও উপরে ওঠে, যখন কিনা ওমর সানী সংবাদমাধ্যমের কাছে জানান, এক ছাড়ের নিচে থাকলেও প্রায় দেড় মাস মৌসুমীর সঙ্গে তার ফোনেও কথা বলেন না।
কিন্তু সানীর বিপক্ষে কেন মুখ খুলেছিলেন মৌসুমী? অভিনেত্রীর পক্ষ থেকে এই প্রশ্নের জবাব না মিললেও বিষয়টি পরিষ্কার করেছিলেন তার ছেলেন ফারদিন এহসান স্বাধীন। তিনি গণমাধ্যমে দাবি করেন, ‘আসলে আম্মু চায়নি বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হোক। এই আলোচনা যাতে দ্রুত শেষ হয়ে যায়, আম্মু সেটাই চেয়েছিলেন।’
ফারদিন এও জানান, ‘আম্মুর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। আব্বুর সঙ্গে তার একটু মনোমালিন্য আছে। আম্মু চেষ্টা করছে সেটা মিটিয়ে ফেলতে। অবশেষে ওমর সানীও জানালেন, তার এবং মৌসুমীর মধ্যে সবকিছু ঠিক হয়ে গেছে। এই খবরে যারপরনাই খুশি দুই তারকার অনুরাগীরা। কিন্তু দূরত্ব সত্যি কমেছে তো?
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।