জুমবাংলা ডেস্ক : ব্র্যাকের ড্রাইভিং স্কুলে প্রশিক্ষণ নেওয়া ১১ জন নারীর হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে পেশাদার চালকের সনদ তুলে দেওয়া হয়েছে। বুধবার বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) প্রধান কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সনদ বিতরণ করা হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, পেশা হিসেবে গাড়ি চালানো সম্মানজনক। সমাজে এটিকে এখনও মূল্যায়ন করা হচ্ছে না। ফলে অনেকে এই পেশায় আসতে চায় না।
এ সময় নারী গাড়িচালকদের কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সরকারের ১০ শতাংশ কোটা আছে নারী গাড়িচালকদের জন্য। নারী যাত্রীদের জন্য আমাদের আলাদা বাস আছে, কিন্তু সেখানে মহিলা ড্রাইভার-হেল্পার নাই। বিআরটিসি বিভিন্ন জেলায় খণ্ডকালীন গাড়িচালক নিয়োগ দেয়। সেখানে নারী চালকরা যোগ দিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন।”
বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, “এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ পেশা হওয়া সত্ত্বেও পর্যাপ্ত সংখ্যক চালক (নারী) তৈরি করা যাচ্ছে না। ব্র্যাক যে মানসম্পন্ন গাড়িচালক তৈরি করছে অনেকে এ সম্পর্কে জানেও না। জানলে বহু জায়গা থেকে এদের জন্য চাকরির অফার আসত।”
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশন (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম পারিবারিক-সামাজিক বাধার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “পরিবার ও সমাজ নারীদের এই পেশায় আসতে দিতে চায় না। গত বছর আমরা ১০০ চালক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিলাম, সেখানে ১৫ জন নারী নিতে পারতাম। কিন্তু পরীক্ষা দিলো মাত্র একজন।
“তাকে কিন্তু আমরা নিয়েছি। এবার আমরা টেকনিশিয়ান নেব ২৭ জন। কিন্তু এসেছে মাত্র ৩ জন নারী। আবার নারীরা আসতে শুরু করলে দেখা যাবে সমাজের স্বীকৃতিও চলে এসেছে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ব্র্যাকের রোড সেইফটি প্রোগ্রামের পরিচালক আহমেদ নাজমুল হুসেইন বলেন, “একজন ব্যক্তির ১২ ঘণ্টা গাড়ি চালানোর বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকলে তিনি চালক হতে পারেন। সেখানে এই নারীরা সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ ঘণ্টা প্রশিক্ষণ পেয়েছেন এবং সড়কে এক হাজার ২০০ কিলোমিটার গাড়ি চালিয়েছেন।
“এরা প্রত্যেকেই প্রথম চেষ্টায় বিআরটিএর লাইসেন্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিন মাস আগে লাইসেন্স পেয়েছেন। গাড়িচালনা ছাড়াও এই চালকরা ইংরেজিতে যোগাযোগের প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। জেন্ডার সচেতনতার প্রশিক্ষণও পেয়েছেন। প্রযুক্তির ব্যবহার করতে পারেন তারা। এরা খুবই প্রশিক্ষিত চালক।”
প্রকল্প ব্যবস্থাপক এম খালিদ মাহমুদের সঞ্চালনায় ব্র্যাকের রোড সেইফটি প্রোগ্রামের ব্যবস্থাপক মো. মাইনুল হোসেন প্রতিষ্ঠানটির সড়ক নিরাপত্তা কর্মসূচির বিভিন্ন দিক অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন।
সবার জন্য নিরাপদ সড়কের লক্ষ্যে ২০০১ সাল থেকে কাজ করছে ব্র্যাকের রোড সেফটি প্রোগ্রাম। এসব কার্যক্রমের একটি বড় অংশ নিরাপদ সড়ক ব্যবহারের প্রশিক্ষণ। এ জন্য এখন পর্যন্ত ১২ লাখের বেশি সাধারণ সড়ক ব্যবহারকারী, পাঁচ লাখ ৬১ হাজার শিক্ষার্থী এবং পাঁচ হাজার ৪০০ শিক্ষককে নিরাপদ সড়ক ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই ব্র্যাক ড্রাইভিং স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। এতে এখন পর্যন্ত ১১ হাজার ৫৩৫ জন বাণিজ্যিক গাড়ি চালনা, আট হাজার ১৪৭ জনকে বুনিয়াদি গাড়ি চালনা, দুই হাজার ৬৯৮ জন নারীকে গাড়ি চালনা, দুই হাজার ১৩ জনকে মোটর সাইকেল চালনা এবং ৩৮৪ জনকে ড্রাইভিং প্রশিক্ষক হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।