লাইফস্টাইল ডেস্ক : শীতের শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন আসে। এই সময় স্তন সুন্দর রাখার জন্য অন্তর্বাস যেমন জরুরি, তেমনি স্তনের সুস্থতার জন্য এর মাপও ঠিক হওয়া জরুরি। অন্তর্বাস পরারও কিছু নিয়মকানুন আছে। দেখে নেয়া যাক
>> খেয়াল রাখতে হবে ব্রা পরার পরে পাশ থেকে বা উপর থেকে যেন স্তনের অংশ বেরিয়ে না থাকে। টাইট কাপে সাধারণত এই ধরনের সমস্যা হয়। আর এর থেকেই নানা রোগেরও সৃষ্টি হয়।
>> হাত উপরে তুললে কাপের নিচ থেকে স্তন যেন বেরিয়ে না যায়। অত্যধিক লুজ় বা আলগা কাপ ফাইব্রয়েডের মতো সমস্যা ডেকে আনে। যে কাপ স্তনকে পুরো কভারেজ দেয়, সেটিই উপযুক্ত। ব্রেস্ট টিসুর উপরে চাপ পড়লে তা অত্যন্ত ক্ষতিকর।
>> ব্রেস্ট ভারি হলে, ব্রা-এর চার দিকের ব্যান্ড ফিটেড না হলে পিঠের দিকে স্ট্র্যাপ উপরে উঠে আসবে। গ্র্যাভিটির জোরে স্তন সামনের দিকে ঝুঁকলে রিফ্লেক্টেড পেন হয় লোয়ার ব্যাকে। তাই ঠিক ফিট দেখে কিনুন।
>> নরমাল ফিটিং ব্রা পড়লে বুকের ওজন ভাগ হয়ে যাবে কাঁধ এবং কোমরে। স্ট্র্যাপ লুজ় হলে চলবে না।
ভ্রান্ত ধারণা এবং তার সত্যতা
আন্ডারওয়্যারড অন্তর্বাস: মেকআপ প্রডাক্ট যতই ভাল মানের হোক, তা তুলতেই হয়। না হলে আখেরে ক্ষতি হয় ত্বকের। তেমনই আন্ডারওয়্যার ব্রা-এরও ভুল ব্যবহার ডেকে আনতে পারে ক্ষতি। ব্রা-এর হাফ ওয়্যারে স্তনে এবং ফুল ওয়্যারে আর্মপিটে খোঁচা লাগতে পারে। এখানেই লিম্ফ নোডস থাকে (যা ইনফেকশন এবং নানা রোগের মোকাবিলা করতে শরীরকে সাহায্য করে)। ফলে ক্ষতি হতে পারে শরীরের। তাই যখন দরকার নেই, তখন ওয়্যারড ব্রা না পরাই ভাল।
ব্যবহারের সময়কাল প্রত্যেক মানুষের উপরে নির্ভর করে, তার অন্তর্বাস কতদিন টিকবে। কম ক্ষারযুক্ত সাবান দিয়ে ঠান্ডা জলে অন্তর্বাস কেচে ছায়ায় মেলে দিলে ভাল থাকে অনেক দিন। তবে ইলাস্টিক স্ট্র্যাপ ও কাপ লুজ হয়ে গেলে, কাপড়ে বাব্ল উঠলে বদলে ফেলাই ভালো।
রাতের ব্যবহার: অনেকেই বাড়ি ফিরে অন্তর্বাস খুলে ফেলেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, রাতে শোয়ার সময়েও অন্তর্বাস পরা জরুরি। এর জন্য পুরনো, আলগা হয়ে যাওয়া কিংবা এক সাইজ় বড় ব্রা ব্যবহার করতে পারেন। অন্তর্বাস পরে শুলে একটি স্তনের চাপ আর একটিতে পড়ে না এবং শেপও ধরে রাখে তা। অথচ রাতে ঘুমোনোর আরামেও কোনো অসুবিধা হয় না।
ভিন্নতা: পুশ আপ, টি-শার্ট, স্পোর্টস বা জিমিং, সিমলেস, স্ট্র্যাপলেস… অন্তর্বাসের ধরন নানা রকম। পোশাক ও ব্যক্তিগত প্রয়োজন অনুযায়ী তা ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু যেমন অন্তর্বাসই পরুন, তা ঠিকঠাক ফিট করা জরুরি।
শুধু অন্তর্বাস নয়, এ ছাড়াও স্তনের জন্য প্রয়োজন আর একটু বেশি যত্ন। ময়েশ্চারাইজ়িং করতে হবে মুখ বা শরীরের নানা অংশের মতোই বুকেরও দরকার ময়েশ্চারাইজ়িং। স্তনের ত্বক সাধারণত ভীষণ পাতলা ও সংবেদনশীল হয়। তাই কোকো বাটার জাতীয় ময়েশ্চারাইজ়ার লাগাতে পারেন। নিয়মিত ব্যবহারে স্তনের ত্বক ভালো থাকবে।
সুগন্ধী: সাধারণত ঘামের কারণে আর্মপিটের তলায়, বুকের ভাঁজে দুর্গন্ধ ছড়ায়। র্যাশ বা ইরিটেশন হওয়াও অস্বাভাবিক নয়। এর জন্য বেবি পাউডার বা ভাল ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করতে পারেন সেই সব অংশে।
সানস্ক্রিন: বিকিনি বা লো নেক পোশাক পরলে দিনের বেলায় বুকের উপরের অংশে ভালো করে সানস্ক্রিন লাগানো জরুরি।
খাবারদাবার: পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার এমনিতেই সারা শরীরের জন্য ভালো। কিন্তু সয়াবিন, টোফু জাতীয় খাবার তালিকায় রাখলে তা স্তনের জন্য উপকারী। তবে অবশ্যই তা পরিমাণ মতো। এতে ফাইব্রোসিস্টিক জাতীয় রোগের আশঙ্কা কমে। পিচ, স্যামন, অলিভ অয়েল, ব্রকোলি, ওয়ালনাট আবার বুকের টিউমর সেলের গ্রোথ কমাতে সাহায্য করে। তাই সপ্তাহের খাদ্যতালিকায় ভাগ করে এই জাতীয় খাবার রাখা যেতেই পারে।
ব্যায়ামের কেরামতি: স্তনে রক্ত সঞ্চালনের জন্য মাসাজ দরকার। এর জন্য দুই হাতে স্তন ধরে আলতো ভাবে উপরের দিকে তুলুন। সেই সময়েই আস্তে আস্তে প্রেস করুন। এ বার আঙুলের সাহায্যে ক্লকওয়াইজ় এবং অ্যান্টি ক্লকওয়াইজ় মাসাজ করতে থাকুন। স্তনকে ধরে রাখতে সাহায্য করে পেকটোরাল মাসল।
পরীক্ষা করুন নিজেই: আপনার স্তনের দেখভাল যেমন নিজেই করবেন, তেমন সে সুস্থ আছে কি না, তা-ও দেখতে পারেন নিজেই। চিকিৎসকরা বলেন, পিরিয়ডস হওয়ার চার-পাঁচ দিন পরে গোসল করার সময়ে সাবান মাখতে মাখতে নিজের স্তন পরীক্ষা করা জরুরি। দেখতে হবে কোথাও লাম্প হয়েছে কি না, স্তনবৃন্ত থেকে রক্ত বেরোচ্ছে কি না, স্তনবৃন্ত ভেতরের দিকে ঢুকে যাচ্ছে কি না বা আর্মপিটে কোনো ফোলা ভাব বোঝা যাচ্ছে কি না। এর কোন একটি লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
এক কথায় বুকের যত্ন নিন তাকে ভালবেসে। যা কিছু একান্ত ব্যক্তিগত এবং নিজস্ব, তার জন্য না হয় সামান্য বেশি যত্নই থাকুক। সে-ও ভাল থাকবে, ভালো থাকবেন আপনিও।
সূত্র: আনন্দবাজার
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।