স্পোর্টস ডেস্ক : নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখল বাংলাদেশ। আসরে প্রথম ম্যাচে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ১৭৬ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়েছিল টাইগ্রেসরা। এবার নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ২ উইকেটের শ্বাসরুদ্ধকর জয় তুলে নিয়েছে বাংলার বাঘিনীরা। টানা দুই জয়ে ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। তাতে বিশ্বকাপেআর মূল পর্বের টিকিট পাওয়ার পথ বেশ সুগম করল লাল-সবুজের দল।
রোববার (১৩) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করে লরা ডিলানির ফিফটিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট ২৩৫ রান করেছিল আয়ারল্যান্ডের মেয়েরা। লক্ষ্য তাড়ায় নিগারের ফিফটির পরেও এক পর্যায়ে ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে রিতু মনির অতিমানবীয় ইনিংসে পা হড়কায়নি বাংলার মেয়েরা। ৬১ বলে অপরাজিত ৬৭ রানের ইনিংস খেলে দলকে ৮ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা মোটেও ভালো হয়নি বাংলাদেশের। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ফারজানা হক শূন্যহাতে সাজঘরে ফেরেন। ইনিংসের তৃতীয় বলটি অফ স্টাম্পের বেশ খানিকটা বাইরে করেছিলেন পেন্ডারগেস্ট। সেখানে এগিয়ে গিয়ে ৩০ গজ বৃত্তের উপর দিয়ে খেলতে গিয়ে ঠিকমত টাইমিং করতে পারেননি অভিজ্ঞ এই ওপেনার।
আরেক ওপেনার ইশমা তানজিমও ব্যর্থ। ১৫ বলে ২ রান করে পেন্ডারগেস্টের দ্বিতীয় শিকারে পরিনত হন তিনি। ২ রানে ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশের ইনিংসে হাল ধরেন শারমিন আক্তার ও নিগার সুলতানা জ্যোতি। তবে সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি শারমিন, ২৪ রান করে দলীয় ৫৪ রানে বিদায় নেন তিনি।
একের পর এক উইকেট হারালেও সাবলীল ব্যাটিং করছিলেন জ্যোতি। দায়িত্বশীল ইনিংসে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন টাইগ্রেস অধিনায়ক। তবে সোবহানা মুস্তারি ৭ রানে বিদায়ের পরপরই সাজঘরের পথ ধরেন জ্যোতিও। তবে ফেরার আগে ফিফটি পেয়েছেন অধিনায়ক। ৫১ রান করে জ্যোতির সাজঘরে ফিরলে ম্যাচে পিছিয়ে পড়ে বাংলাদেশ।
জ্যোতির বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন রিতু। তবে তাকে এক প্রান্তে রেখে আরেক প্রান্তে ফাহিমা খাতুন, জান্নাতুল ফেরদৌসরা উইকেটে থিতু হয়েও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। তবে একক প্রচেষ্টায়ই দলকে জয়ের পথে রাখেন রিতু। শেষ পর্যন্ত তার ব্যাট থেকে এসেছে ৬১ বলে অপরাজিত ৬৭ রান। তাকে শেষ দিকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন নাহিদা আক্তার। ১৭ বলে অপরাজিত ১৮ করেছেন তিনি।
এর আগে বোলিংয়ে ভালো শুরু পেয়েছিল বাংলাদেশ। দলীয় ৬ রানেই ৮ বল খেলে ৪ রান করে রান আউটে কাটা পড়েন সারা। এই ওপেনারের বিদায়ে চতুর্থ ওভারে মাত্র ৬ রানের মাথায় ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। তবে শুরুর সেই ধাক্কা সামাল দেন লুইস ও অ্যামি হান্টার। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তারা যোগ করেন ৫০ রান।
১৪তম ওভারে জান্নাতুল ফেরদৌসকে ফিরতি ক্যাচ দেওয়ার আগে ৪৩ বলে ২৪ রান করেছেন লুইস। অধিনায়কের বিদায়ের পর হান্টারের সঙ্গে যোগ দেন ওরলা পেন্ডারগেস্ট। তবে এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি হান্টার। ভালো শুরুর পর ফিরেছেন দুর্ভাগ্যজনক রান আউটে। সাজঘরে ফেরার আগে ৩৮ বলে ৩৩ রান করেছেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার।
এরপর ৪র্থ উইকেট জুটিতে প্রতিরোধ গড়ে ৭২ রানের জুটি গড়েন পেন্ডারগেস্ট ও লরা ডেলানি। দলীয় ১৪৯ রানে রাবেয়া খানের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে ৪১ রানে ফেরেন পেন্ডারগেস্ট। এরপর লিহ পলকে নিয়ে ৩৩ রানের জুটি গড়েন ডেলানি। তার বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। সাজঘরে ফেরার আগে ৭৫ বলে ৬৩ রান করেন ডেলানি।
এরপর ছোট ছোট জুটিতে দলীয় স্কোর ২৩৫ রানে নিয়ে যায় আইরিশদের লোয়ার অর্ডার। ক্রিস্টিনা ১০, ক্যানিং ৪ রান করেন। ২৪ রানে কেলি ও ৭ রানে অপরাজিত থাকেন মাগুইরে। বাংলাদেশের হয়ে ৩টি উইকেট শিকার করেন রাবেয়া। ২টি ফাহিমার ও ১টি নেন জান্নাতুল ফেরদৌস।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।