জুমবাংলা ডেস্ক : দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় কাঁকড়া নদীর ওপর নির্মিত সেতুর কাজ দীর্ঘ সাত বছরেও শেষ হয়নি। প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটির নির্মাণ কাজ ২০১৯ সালে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ২০২৫ সালে এসেও প্রায় ৪০ ভাগ কাজ শেষ না করেই ঠিকাদার পালিয়ে যান। এতে দুই ইউনিয়নের হাজারো মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
জানা যায়, চিরিরবন্দর উপজেলার ভিয়াইল ইউনিয়নের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে কাঁকড়া নদী। নদীর পশ্চিমপাশে ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস ও ইউপি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র এবং নদীর পূর্ব-উত্তরে চিরিরবন্দর উপজেলা শহর। নদীর পূর্বপাশে ইউপি সেবা নিতে গেলে মানুষকে প্রায় সাত থেকে আট কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। বর্ষাকালে নৌকায় পারাপারের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। নদীর পশ্চিমপাশের মানুষ উপজেলা শহর কিংবা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে একই পথ ঘুরে যেতে হয়। এ ভোগান্তি দূর করতে উপজেলার ভিয়াইল গ্রামের ভিয়াইল ঘাটে একটি সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
চিরিরবন্দর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের অক্টোবরে ১শ’ ৭৫ মিটার আরসিসি গার্ডার সেতুটির জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ১৪ কোটি ৮৩ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। সেতুর কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে। কিন্তু ২০২৫ সালে এসেও, এখনো সেতুর ৪০ ভাগ কাজ বাকি আছে। এর আগে দুই দফা নির্মাণের মেয়াদকাল শেষ হওয়ার আগেই কাজ বন্ধ করে দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরপর ২০২৩ সালের জুনে আবার কাজ শুরু হয়, কিন্তু ১৫ জুলাই সকালে সেতুর চার নম্বর ক্রস গার্ডারটি নদীতে ভেঙে পড়ে। এরপর কাজ বন্ধ রেখে পালিয়ে যান ঠিকাদার। তখন থেকে সেতুটি এভাবেই পড়ে আছে। নতুন করে সেতুটি নির্মাণের দরপত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে এলজিইডি।
স্থানীয় ভিয়াইল গ্রামের ভ্যানচালক কুরবান আলী বলেন, ভ্যান নিয়ে খুব কষ্ট করে নদী পার হতে হয়। শীতকালে নদীতে পানি না থাকায় বাঁশের সাঁকো দিয়ে পার হওয়া গেলেও, বর্ষাকালে খুব সমস্যা হয়। দীর্ঘদিন ধরে সেতুটির কাজ বন্ধ। দ্রুত সেতুটির কাজ শেষ হলে আমাদের কষ্ট দূর হবে। একই গ্রামের গৌরাঙ্গ রায় বলেন, সেতুটি না থাকায় আমরা দীর্ঘদিন থেকে নদীর দুই পাড়ের মানুষ ভোগান্তি নিয়ে বসবাস করছি। সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হলে গ্রামবাসী খুশি হয়েছিল। কিন্তু নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তি আরও বেড়েছে। সাত থেকে আট বছর ধরে এখানে সেতুর কাজ হচ্ছে, কিন্তু তা আর আর শেষ হয় না। এখন দেখি ঠিকাদার সবকিছু নিয়ে পালিয়েছে। আমাদের দাবি দ্রুত সেতুর বাকি অংশের কাজ শেষ করে জনগণের ভোগান্তি দূর করা হোক। নদীপাড়ের বাসিন্দা খাদিজা পারভীন বলেন, আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই। কোনো জরুরি দরকারে নদী পার হতে হলে, বর্ষাকালে দীর্ঘ সময় নদীর পাড়ে নৌকার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। আবার কেউ হঠাৎ করে অসুস্থ হলে দ্রুত হাসপাতালেও নেওয়া যায় না। কয়েক কিলোমিটার ঘুরে হাসপাতালে যেতে হয়।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর চিরিরবন্দর উপজেলা প্রকৌশলী মাসুদার রহমান বলেন, ঠিকাদার অসুস্থ থাকায় সেতুটির প্রায় ৪০ ভাগ কাজ শেষ করতে পারেননি। নতুন করে আবার দরপত্র দেওয়া হয়েছে। সেই প্রক্রিয়াটি শেষ হলে দ্রুত সেতুর বাকি অংশের নির্মাণ কাজ শেষ হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।