জুমবাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশের মানুষ বরাবরই ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে আবহাওয়ার অস্থিরতা অনুভব করে থাকে। বিশেষ করে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির সময় প্রকৃতির এক অনন্য রূপ চোখে পড়ে। আজকের পূর্বাভাস বলছে—ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির আবহাওয়া সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানলে আমাদের দৈনন্দিন পরিকল্পনা সহজ হয়ে ওঠে।
Table of Contents
বৃষ্টির আবহাওয়া: ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সম্ভাব্য বৃষ্টিপাত
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আজ শনিবার (১৭ মে) ঢাকার আকাশ থাকবে আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা এবং হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সকালের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দক্ষিণ বা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গতকাল ছিল ৩৬.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আর্দ্রতা রয়েছে ৭৭ শতাংশ।
এই ধরনের আবহাওয়ার খবর দেশের কৃষি, পরিবহন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুর পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
পাঁচ দিনের পূর্বাভাসে বৃষ্টির ধারাবাহিকতা ও প্রভাব
আজ সকাল ৯টা থেকে আগামী পাঁচদিনের জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে—ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু–এক জায়গায় বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
বিশেষ করে রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতা, রাস্তার ক্ষতি এবং কৃষিজমিতে পানি জমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে কিছু অঞ্চলের ওপর দিয়ে বর্তমানে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে বৃষ্টিপাতের কারণে এই তাপপ্রবাহ অনেক অঞ্চলে প্রশমিত হতে পারে।
এছাড়া, দেশের নদীবন্দরগুলোকে এক নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে, বিশেষ করে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ভোলা ও টাঙ্গাইল অঞ্চলে ঘণ্টায় ৪৫–৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কা থাকায়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের অফিসিয়াল তথ্য এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে।
বৃষ্টির প্রভাব ও দৈনন্দিন জীবনে প্রস্তুতি
জরুরি সর্তকতা ও প্রস্তুতির প্রয়োজনীয়তা
বজ্রসহ বৃষ্টির সময়ে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা, ইলেকট্রিক ডিভাইস থেকে দূরে থাকা এবং অপ্রয়োজনীয় বাহিরে যাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে স্কুলে যাতায়াতের পরিকল্পনায় বৃষ্টির পূর্বাভাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়া কৃষকদের জন্যও এটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য—বিশেষ করে যারা রোপা আমনের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন, তাদের বৃষ্টির সময় সম্পর্কে আগাম জেনে প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হয়।
নগর জীবনে প্রভাব ও করণীয়
নগরবাসীদের জন্য বৃষ্টির খবর মানেই একদিকে যেমন স্বস্তি, অন্যদিকে জলাবদ্ধতা ও যানজটের দুর্ভোগ। ঢাকার মত বড় শহরে যেখানে ড্রেনেজ ব্যবস্থা অপর্যাপ্ত, সেখানে মাঝারি বৃষ্টিতেই রাস্তায় পানি জমে যায়।
অতএব, নাগরিক কর্তৃপক্ষ ও ব্যক্তিগতভাবে নাগরিকদের প্রস্তুতি নেয়া জরুরি—যেমন ছাতা ও রেইনকোট ব্যবহার, গাড়ি চালনার সময় সতর্কতা অবলম্বন ইত্যাদি।
পরবর্তী দিনের সম্ভাব্য আবহাওয়া ও পরিবর্তন
রবিবার থেকে শুরু করে বুধবার পর্যন্ত প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকছে। এতে করে দেশের উত্তরাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলে কিছু কিছু এলাকায় ফসলের উপকার হতে পারে আবার কোথাও জলাবদ্ধতাও দেখা দিতে পারে।
মঙ্গলবার এবং বুধবার বৃষ্টির প্রবণতা সামান্য হ্রাস পেতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। তবে তাপমাত্রা খুব একটা পরিবর্তিত হবে না—দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে, আর রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।
বর্তমান সময়ে দেশের জলবায়ু দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে, এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে আবহাওয়ার পূর্বাভাসও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। প্রতিদিনের পূর্বাভাস পর্যবেক্ষণ করে জীবনযাত্রায় প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।
এই মুহূর্তে বৃষ্টির আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী প্রস্তুত থাকা ও সচেতনতা বৃদ্ধি করা আমাদের দায়িত্ব। এতে করে আমরা যেমন নিরাপদ থাকবো, তেমনি প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবও কমানো সম্ভব হবে।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলি (FAQs)
বাংলাদেশে বৃষ্টি কখন বেশি হয়?
বাংলাদেশে সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ষাকাল চলাকালীন সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়। এই সময় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু প্রবাহ সক্রিয় থাকে।
বৃষ্টির সময় কী কী সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত?
বৃষ্টির সময় বজ্রপাত হলে খোলা মাঠে না থাকা, ইলেকট্রনিক যন্ত্র থেকে দূরে থাকা এবং নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়াই উত্তম।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস কীভাবে জানা যায়?
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এবং সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমে প্রতিদিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানা যায়।
ঢাকায় আজকের আবহাওয়া কেমন?
আজকের আবহাওয়ায় ঢাকায় মেঘলা আকাশ, হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি এবং ঘণ্টায় ১০–১৫ কিমি বেগে বাতাস থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
তাপপ্রবাহ প্রশমিত হবে কিভাবে?
বৃষ্টিপাত হলে মাটি ও বাতাসে আর্দ্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় তাপমাত্রা কমে যায় এবং তাপপ্রবাহ প্রশমিত হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।