যুক্তরাজ্যের কঠোর অভিবাসন নীতির প্রভাবে দেশটির বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শিক্ষার্থীদের ভর্তি আবেদন বাতিল বা স্থগিত করেছে। ‘ভিসা অপব্যবহার’ নিয়ে উদ্বেগের কারণেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।

সংবাদমাধ্যমটির তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের কমপক্ষে ৯টি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ থেকে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে নতুন বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। প্রকৃত শিক্ষার্থী শনাক্ত এবং ভিসা নীতিমালা কঠোরভাবে মানার চাপ থেকেই এসব বিশ্ববিদ্যালয় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই তালিকায় রয়েছে— ইউনিভার্সিটি অব উলভারহ্যাম্পটন, ইউনিভার্সিটি অব সান্ডারল্যান্ড, কভেন্ট্রি ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট লন্ডন, ইউনিভার্সিটি অব হার্টফোর্ডশায়ার, লন্ডন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি, অক্সফোর্ড ব্রুকস ইউনিভার্সিটি, বিপিপি ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব চেস্টার, গ্লাসগো ক্যালেডোনিয়ান ইউনিভার্সিটি।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আশ্রয় প্রার্থনার প্রবণতা বেড়েছে। দেশটির সীমান্ত নিরাপত্তা মন্ত্রী ডেম অ্যাঞ্জেলা ইগল সতর্ক করে বলেছেন, ভিসাব্যবস্থাকে ‘স্থায়ী হওয়ার পেছনের দরজা’ হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হবে না।
নতুন ভিসা কমপ্লায়েন্স নীতি অনুযায়ী, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভিসার ৫ শতাংশের বেশি আবেদন বাতিল হলে প্রতিষ্ঠানটির স্পনসর লাইসেন্স স্থগিত বা বাতিলের ঝুঁকি তৈরি হয়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উচ্চ ঝুঁকির দেশগুলোর আবেদন সীমিত করছে।
কোন বিশ্ববিদ্যালয় কী পদক্ষেপ নিয়েছে?
চেস্টার ইউনিভার্সিটি: আগামী শরৎকাল পর্যন্ত পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত।
উলভারহ্যাম্পটন ইউনিভার্সিটি: বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে স্নাতক পর্যায়ে আবেদন গ্রহণ বন্ধ।
ইস্ট লন্ডন ইউনিভার্সিটি: পাকিস্তানি শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ।
সান্ডারল্যান্ড ও কভেন্ট্রি ইউনিভার্সিটি: বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শিক্ষার্থী নিয়োগ স্থগিত।
লন্ডন মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি: ভিসা নাকচের ৬০% বাংলাদেশি হওয়ায় ভর্তি বন্ধ।
হার্টফোর্ডশায়ার ইউনিভার্সিটি: আগামী বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শিক্ষার্থী ভর্তি স্থগিত।
ভিসা বাতিলের সর্বশেষ পরিসংখ্যান
ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়—চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর ২২% এবং পাকিস্তানি শিক্ষার্থীর ১৮% ভিসা আবেদন বাতিল হয়েছে। একই সময়ে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মোট ২৩,০৩৬ ভিসা আবেদন নাকচ করেছে, যার অর্ধেকই বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাধ্যতামূলক ‘বেসিক কমপ্লায়েন্স অ্যাসেসমেন্ট (বিসিএ)’ নীতির কারণে ভিসা প্রত্যাখ্যানের হার নিয়ন্ত্রণে না থাকলে স্পনসর লাইসেন্স হারানোর আশঙ্কা তৈরি হয়। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানই ঝুঁকি এড়াতে এসব দুই দেশের শিক্ষার্থী ভর্তিতে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



