বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের প্রচলিত সংজ্ঞা বদলে যাচ্ছে। ৫ মেগাবিট পার সেকেন্ড (এমবিপিএস) গতির ইন্টারনেটকে আর ব্রডব্যান্ড হিসেবে বিবেচনা করা হবে না। সরকার এখন থেকে ব্রডব্যান্ডের সর্বনিম্ন গতি ১২ থেকে ১৫ এমবিপিএস নির্ধারণ করার জন্য ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে।
সোমবার (৭ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি দেশের ইন্টারনেটের নিম্নমান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সেবার মানোন্নয়নে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা তুলে ধরেন।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “পরিষ্কারভাবে বলতে গেলে, ৫ এমবিপিএসকে আর ব্রডব্যান্ড বলা যায় না।” দেশের ইন্টারনেট সেবার মান এখনও নিম্নমানের উল্লেখ করে তিনি জানান, কিছুদিন আগেও বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ ইন্টারনেট ভারতের ওপর নির্ভরশীল ছিল এবং অনেক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে অবৈধভাবে ব্যান্ডউইথ আনত।
এই অবস্থার পরিবর্তনে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমরা দেশের সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ইন্টারনেট সংযোগ বাধ্যতামূলক করেছি।” এছাড়া ইন্টারনেটের মান মূল্যায়নের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সাথে একটি ‘মূল কার্যকারিতা সূচক’ (কেপিআই) ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “নিম্নমানের পরিষেবা প্রদানকারীদের জরিমানা করা হবে।”
ফয়েজ আহমদ দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে বিদ্যমান অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে বলেন, এই খাতের ‘স্বৈরাচার ও মাফিয়াদের’ সিন্ডিকেট ভাঙতে একটি নতুন টেলিযোগাযোগ নীতি প্রণয়ন করা হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করেন, “পূর্ববর্তী সরকারের সময়ে কিছু প্রতিষ্ঠান মাত্র ৫-১০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে লাইসেন্স নিলেও বার্ষিক ৪০০ কোটি টাকা পর্যন্ত আয় করেছে। সিন্ডিকেট ও মাফিয়ারা এই খাত থেকে শত শত কোটি টাকা লুট করেছে। এই লুটপাট বন্ধ করতেই নতুন নীতি আনা হচ্ছে।”
তিনি আরও জানান, পূর্ববর্তী প্রশাসনের অধীনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং টেলিযোগাযোগ খাতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে, যা তদন্তে প্রতিটি খাতের জন্য আলাদা শ্বেতপত্র কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নতুন নীতি সম্পর্কে সব ধরনের পরামর্শ গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করা হচ্ছে উল্লেখ করে ফয়েজ আহমদ বলেন, “এই নতুন নীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য নয়, সংস্কারের জন্য। এটি দুর্নীতির শৃঙ্খল ভেঙে একটি ন্যায্য, দক্ষ ও ভবিষ্যৎ-প্রস্তুত ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পদক্ষেপ।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।