জুমবাংলা ডেস্ক : রাজশাহীর বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৫০ টাকা। খামারিরা বলছেন, গত জুলাই মাসের শুরুর দিকে পোল্ট্রি ফিডের দাম বাড়ার কারণে খামারে মুরগি তোলেননি খামারিরা। ফলে ১ মাস পর বাজারে দেখা দিয়েছে সংকট। এ কারণেই ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি।
অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, জ¦ালানি তেলের দাম এবং পোল্ট্রি পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়ার কারণেই বাজারে বেড়েছে মুরগির দাম। খামারে পর্যাপ্ত মুরগি নেই। বাজারে কিছুটা টান পড়েছে ফলে দাম বেড়েছে পোল্ট্রির। আজ শনিবার (১৩ আগস্ট ২২) রাজশাহীর সাহেববাজার কাঁচাবাজার, উপশহর নিউমার্কেট ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
রাজশাহীর পোল্ট্রি ফিড অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যে জানা যায়, দফায় দফায় পোল্ট্রি খাদ্যের দাম বৃদ্ধি খামারিদের নাজেহাল করে তুলেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত মোট ৫ বার বেড়েছে পোল্ট্রি খাদ্যের দাম। বেড়েছে ব্রয়লার, সোনালী ও লেয়ার মুরগির ফিডের দাম। সর্বশেষ গত ১২ জুন ২৭০টি ফিড মিল তাদের উৎপাদিত খাদ্যের দাম বাড়িয়েছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী দেশের নিবন্ধিত ফিড মিল কোম্পানি মোট ২৭০টি। নারিশ, কাজী, প্যারাগনসহ বড় বড় অন্তত ৮ থেকে ১০টি ফিড মিল পোল্ট্রি খাদ্যের দাম বাড়িয়েছে। ফলে পোল্ট্রি পণ্যের দাম বাড়তে বাধ্য।
খামারিরা বলছেন, করোনাকালের শুরু থেকে প্রতিবস্তা পোল্ট্রি খাদ্যে ৭০০ থেকে ৮৫০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। এই দাম বাড়ার ফলে বস্তায় ১ হাজার টাকার কাছাকাছি দাম বাড়ানো হলো। করোনা শুরুর দিকে ১৮’শ টাকার খাদ্যের বস্তা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২৮’শ ৫০ টাকা থেকে সাড়ে ৩২’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি খাদ্যে মধ্য জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত দাম বেড়েছে ২ থেকে আড়াই টাকা। ফলে ৫০ কেজির বস্তা ১০০ থেকে ১২০ টাকা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে খামারিদের।
ডিম-মুরগির দাম বাড়ার বিষয়ে কথা হয় রাজশাহী পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হকের সাথে। তিনি বলেন, চারিদিকে সবকিছুর দাম যেভাবে বাড়ছে ডিম-মুরগির দাম বাড়া অসম্ভব নয়। অবহেলিত এ খাতের মাথা চাড়া দেওয়ার সময় হয়ত চলে এসেছে। রাজশাহীতে করোনায় ৭০ ভাগ খামার বন্ধ।
মাঝখানে উৎপাদন খরচ আরো বেড়ে গেলো, কারণ ভুট্টা, সয়াবিন মিল, প্রোটিনের দাম বেড়েছে। রেডি মুরগির দাম কমায় খামারিরা আরো বিপাকে পড়েছিল। কয়েকমাস আগে খামারিরা বাচ্চা তোলা বন্ধ করে দেয় ফলে দেখা যায় সেই সংকট এখন। ৫০ শতাংশ খামারে মুরগি নেই। এই কারনেই দাম বেড়েছে। এই দাম আর একটু বাড়ার পর কমতে থাকবে।
এই পোল্ট্রি সংগঠক বলেন, ইতিহাসের সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লাম মুরগি। যা এর আগে কোনদিনই হয়নি। সোনালী মুরগির দাম ৩২০ টাকা কেজি হয়েছিল, ব্রয়লারে বর্তমানে লেয়ার মুরগির বাচ্চা খামারিরা তুলতে শুরু করেছেন। কারণ দীর্ঘমেয়াদী এই প্রজেক্ট। ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে তখন খামারিরা ভয় পেয়ে বাচ্চা তোলেননি। আগামীর ভবিষৎ চিন্তা করে খামারিরা আবার নামছেন মাঠে।
মুরগি দোকানদার মিঠু হোসেন বলেন, পোল্ট্রি মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা দরে বেচা হচ্ছে। ব্রয়লারের আমদানী কম তাই দাম বাড়ছে। সোনালি মুরগির দাম বাড়ছে কারণ বাজারে সোনালি মুরগি কম। সোনালি ২৮০ টাকা, লেয়ার ২৫০ টাকা, কক মুরগি ২৫০ টাকা, হাঁস ৪৫০ টাকা, রাজহাঁস ৪৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। দাম আরো বাড়বে এটা নিশ্চিত।” সূত্র : এগ্রিকেয়ার২৪.কম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।