আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার রক্তাক্ত স্মৃতি এখনো টাটকা। সেই হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় কেবল ভারতের অভ্যন্তরে নয়, সীমান্ত জুড়েও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে প্রতিবেশী দুই মুসলিম দেশের—বিশেষত বাংলাদেশ ও পাকিস্তান—সীমান্তে নজরদারি ও তৎপরতা বাড়াচ্ছে ভারত সরকার।
এ লক্ষ্যে গঠন করা হচ্ছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর নতুন ১৬টি ব্যাটালিয়ন। এসব ব্যাটালিয়নের মাধ্যমে প্রায় ১৭ হাজার অতিরিক্ত সদস্য যুক্ত হবেন সীমান্ত নিরাপত্তায়। পাশাপাশি স্থাপন করা হচ্ছে দুটি নতুন ‘ফরোয়ার্ড হেডকোয়ার্টার’। শুধু পাকিস্তান নয়, পূর্ব সীমান্ত তথা বাংলাদেশ সীমানাতেও নজরদারি জোরদার করতেই এই উদ্যোগ নিচ্ছে ভারত। (সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া)
সীমান্তে নজরদারি আরও জোরদার
ভারত সম্প্রতি বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি ও নিরাপত্তা জোরদারে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি তৎপর হয়ে উঠেছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এর পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ—আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা, ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, এবং প্রতিবেশী দেশে সম্ভাব্য রাজনৈতিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত।
বিএসএফের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নতুন ব্যাটালিয়ন
নতুন করে গঠিত ১৬টি বিএসএফ ব্যাটালিয়নের প্রতিটিতে এক হাজারেরও বেশি সদস্য থাকবে। এতে বিএসএফ-এর মোট ব্যাটালিয়নের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যাবে। এই অতিরিক্ত জনবল দিয়ে সীমান্তে নজরদারি, টহল ও প্রতিরক্ষা কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করা হবে।
নতুন হেডকোয়ার্টার
ভারত দুটি নতুন ফরোয়ার্ড হেডকোয়ার্টার স্থাপন করছে—একটি জম্মুতে, অন্যটি মিজোরামে। জম্মুর হেডকোয়ার্টারটি পাকিস্তান সীমান্তে সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণ বাড়াবে। অন্যদিকে, মিজোরামের হেডকোয়ার্টারটি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের পূর্বাঞ্চলে নজরদারি ও গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করবে।
বাংলাদেশ নিয়ে উদ্বেগ
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে মাঝে মধ্যেই অস্ত্র, মাদক ও মানব পাচারের মতো ঘটনা ঘটে থাকে। অনেক আন্তর্জাতিক অপরাধচক্র এই সীমান্ত ব্যবহার করে থাকে, যা ভারতকে চিন্তায় ফেলেছে। তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, কেবল সীমান্ত অপরাধ নয়, বরং বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতও ভারতের উদ্বেগের কারণ। বিশেষ করে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আশঙ্কায় ভারত মনে করছে, সীমান্ত এলাকায় অস্থিতিশীলতা ও অনুপ্রবেশ আরও বাড়তে পারে। তাই আগেভাগেই প্রস্তুতি নিতে চাইছে দেশটি। ভারতের দৃষ্টিতে সীমান্ত এখন শুধু নিরাপত্তার বিষয় নয়, বরং রাজনৈতিক ও কৌশলগত দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ
নতুন ব্যাটালিয়ন গঠনের জন্য বিএসএফ পুরুষ ও নারী সদস্য নিয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নিয়োগপ্রাপ্তদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ধাপে ধাপে ইউনিটগুলোর কার্যক্রম শুরু করা হবে। এই পুরো প্রক্রিয়া আগামী পাঁচ থেকে ছয় বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।