বিনোদন ডেস্ক : বিষয়টি অনেকটা সুপ্ত আগ্নেয়গিরির মতো। হঠাৎ বিস্ফোরণ, এরপর কিছু দিন সুনসান নীরবতা, ফের অগ্নুৎপাত। ঢালিউড তারকা শাকিব খান, অপু বিশ্বাস ও শবনম বুবলীর ত্রিকোণ সংযোগের সারসংক্ষেপ এমনই। তাদের মধ্যে বর্তমানে আসলে কী সম্পর্ক বিদ্যমান, সে রহস্যের তল খুঁজে পাচ্ছে না কেউই।
সবার জানা কথা, ২০১৮ সালে অপু বিশ্বাসকে ডিভোর্স দিয়েছেন শাকিব খান। তবে একমাত্র সন্তান আব্রাম খান জয়ের সূত্রে তারা এখনও একই সুতোয় বন্দি। সন্তানের লালন-পালনে দুজনেই ভূমিকা রাখছেন। পরস্পরের বাসায় যাতায়াতও রয়েছে বলে শোনা যায়। সোশাল হ্যান্ডেলে একই চিত্রনাট্য পাওয়া যায় শাকিব খানের দ্বিতীয় অধ্যায় বুবলী ও শেহজাদ খান বীরকে ঘিরেও। যদিও শাকিব-বুবলীর বিচ্ছেদের খবর এখনও স্পষ্ট নয়। তবে সূত্র বলছে, বিচ্ছেদ হয়েও শাকিবের বেশ নিকটে আছেন অপু বিশ্বাস। আর বিচ্ছেদের চিঠি না সই করেও বুবলীকে রাখা হয়েছে নিরাপদ দূরত্বে।
শাকিব খানের ব্যক্তিগত জীবনের এই রহস্য বা টানাপোড়েন ভক্ত-সমালোচকরা ভুলতে বসলেও নির্দিষ্ট বিরতিতে নতুন করে জাগিয়ে তোলেন অপু-বুবলী। যেমনটা ঘটেছিল গত সেপ্টেম্বরে জয়ের জন্মদিনকে ঘিরে বুবলীর বেবিবাম্প প্রদর্শন! পাঁচ মাসের ব্যবধানে অনেকটা সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটলো ৬ ফেব্রুয়ারি।
এদিন অপু বিশ্বাসের একটি দীর্ঘ সাক্ষাৎকার প্রকাশ হয় পশ্চিমবঙ্গের প্রভাবশালী দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকায়। যেখানে অপু বিশ্বাস খোলামেলা বলেন শাকিবের সঙ্গে তার বর্তমান সুসম্পর্কের কথা।
তাতে একটি প্রশ্নের জবাবে অপুর মন্তব্য, ‘আমাদের দুজনের (শাকিব-অপু) কাছে সন্তানের (জয়) মানসিক স্বাস্থ্যটাই অগ্রাধিকার পায়। একসঙ্গে থেকে হোক কিংবা না থেকে। জয় জানে, তার বাবা-মা দুজনেই ব্যস্ত। তাই কখনও আমি তাকে স্কুলে পৌঁছে দিই, শাকিব ওকে নিয়ে আসে; আবার কখনও এর উল্টোটা, এভাবেই চলছে।’
শাকিবের সঙ্গে অপুর সম্পর্কটা ঠিক কী অবস্থায় রয়েছে? এমন নয় যে বিচ্ছেদ হয়েছে মানে চিরতরে সব শেষ। বিচ্ছেদের নদী পেরিয়ে অনেকেই সংসার জীবনে ফেরেন। সেই সম্ভাবনা শাকিব-অপুর ক্ষেত্রেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে সম্পর্কের নাম-সংজ্ঞা আপাতত উহ্য রাখতে চান নায়িকা। আনন্দবাজারে তার ভাষ্য, ‘সেটা এখনই বলছি না, উহ্য থাক। সময় এলে গণমাধ্যমকে জানাবো। তবে আগের মতো ক্ষোভ রাখতে চাই না।’
তবে কি অন্তরালে কাছাকাছিই আছেন শাকিব-অপু? এ ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু বললেন না নায়িকা। শুধু শাকিবের প্রতি তার কৃতজ্ঞতাবোধ জানালেন এভাবে, ‘আসলে শাকিব যদি আমার পাশে না থাকতো, তাহলে এই অপু বিশ্বাস হতো না। সহ-অভিনেতা হয়ে আমাকে অভিনয়ের খুঁটিনাটিতে সাহায্য করেছে সে। আমার ক্যারিয়ারে ৮০ শতাংশ কৃতিত্ব শাকিবের, বাকিটা আমি অর্জন করেছি। তাই ওর প্রতি সারা জীবন সেই সম্মান থাকবে।’
অপু যখন শাকিবের সঙ্গে সুসম্পর্কের এমন বিস্তারিত ইঙ্গিত দিলেন কলকাতার মিডিয়ায়, ঢাকায় বসে তখনই ফের কাউন্টার অ্যাটাক করলেন বুবলী! ছেলে শেহজাদ খান বীরের কয়েকটি ছবি তিনি পোস্ট করেছেন সোশাল হ্যান্ডেলে। যেখানে দেখা যায়, বাবা শাকিবের অফিসে বসে দাবা খেলছে ছোট্ট বীর।
ছবির সঙ্গে বুবলীর খুদেবার্তা, ‘দাবা খেলা শেহজাদ স্যারের ভীষণ প্রিয়। সে তার নিজের স্টাইলে খেলে।’
আপাতদৃষ্টিতে বিষয়টি স্বাভাবিক মনে হতে পারে। তবে সময় এবং অতীতে চোখ রাখলে দৃশ্যপট ভিন্নরূপ ধারণ করে। সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টা ২১ মিনিটে অপুর সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ হয় আনন্দবাজারে। এর ঠিক পাঁচ ঘণ্টার মাথায় (রাত ৯টা ২৬ মিনিট) বীরের ছবিগুলো পোস্ট করেন বুবলী। বাবার অফিসে বীর, এর মাধ্যমে যেন শাকিবের ওপর নিজের এবং সন্তানের অধিকারের বিষয়টিই জোরালো করলেন নায়িকা।
দুয়ে দুয়ে চার মেলানোর এই বিষয়টি আরও প্রবল হয় আরেকটু পেছনে গেলে। গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর ছিল শাকিব-অপুপুত্র আব্রাহাম খান জয়ের জন্মদিন। সেদিন যখন সবাই জয়কে শুভেচ্ছায় সিক্ত করছিল, তখনই নিজের বেবিবাম্পের ছবি প্রকাশ্যে আনেন বুবলী। ব্যাস, মুহূর্তেই আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসেন তিনি ও তার সন্তান।
তিন দিন তুমুল আলোচনা-সমালোচনার ঝড়ের পর ৩০ সেপ্টেম্বর অবশেষে সন্তানের ছবি প্রকাশ করেন বুবলী। শেহজাদ খান বীরের ছবি উন্মুক্ত করে জানান, তিনি ও শাকিব বিয়ে করেছেন। আর বীর তাদেরই সন্তান!
জয়ের জন্মদিনে বীরের খবর প্রকাশের কারণে বিতর্কেও পড়েছেন বুবলী। যদিও পরবর্তীতে এক ভিডিও বার্তায় তিনি জানান, এত সব ভেবে তিনি বেবিবাম্পের ছবি ছাড়েননি। কেবল নিজের আবেগ-অনুভূতি থেকেই সন্তানের বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছেন।
পর পর দুটো ঘটনায় শাকিব খানের ওপর অধিকার জাহির করতে অপু বিশ্বাস ও বুবলীর চেষ্টা সহজেই দৃষ্টিগোচর হয় পর্যবেক্ষকদের। কিন্তু যাকে ঘিরে এত মাতামাতি, তুলকালাম; সেই শাকিব বরাবরই থাকছেন গা বাঁচিয়ে, নিশ্চুপ। তাই সাহিত্যের ছোটগল্পের মতো তিন তারকার প্রেম-বিয়ে-বিচ্ছেদের আখ্যান শেষ হইয়াও হইলো না শেষ!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।