জুমবাংলা ডেস্ক: দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট ঘোষণা হতে যাচ্ছে বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকেলে। এবারের বাজেটের সম্ভাব্য আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।
এদিন জাতীয় সংসদে স্বাধীন বাংলাদেশের ৫১তম বাজেট উত্থাপন করা হবে। এ বছর বাজেটের মূল স্লোগান হতে যাচ্ছে ‘কোভিডের অভিঘাত কাটিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’।
নতুন অর্থবছর ২০২২-২৩ বাজেটের বড় চ্যালেঞ্জ নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ। বৈশ্বিক ঝুঁকি কাটিয়ে অর্থনীতির স্থিতিশীলতার সঙ্গে জনজীবনে স্বস্তি ফেরানোর লক্ষ্যে বাজেট ঘোষণা করা হবে।
করোনা পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের সঙ্গে নতুন বাজেটে সরকারের পরিকল্পনার বড় অংশ জুড়েই দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়টি থাকছে। এ লক্ষ্যে বাজেট প্রস্তাবনায় সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা থাকতে পারে।
নতুন বাজেটে আমদানি কেন্দ্রিক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, আমদানি ঠিক রেখে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ স্থিতিশীল রাখার সঙ্গে ব্যাংক ঋণের সুদের হার বর্তমান পর্যায়ে রাখার মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে সরকারকে।
এছাড়া রাজস্ব আয় বাড়ানো এবং বাজেট ঘাটতি কমানো ছাড়াও কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের বাস্তবায়ন পিছিয়ে দেয়ার প্রস্তাব করতে পারে অর্থ মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বাড়ানো হতে পারে।
তবে এবারের বাজেটে সবার মনোযোগ রয়েছে কোন কোন পণ্যের দাম বাড়ছে আর কোন কোন পণ্যের দাম কমছে। তাই চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক-
যেসবের পণ্যের দাম বাড়তে পারে
আমদানিকরা বিলাসী পণ্যের মধ্যে বডি স্প্রে, প্রসাধনী পণ্য, জুস, প্যাকেটজাত খাদ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে আমদানিতে নতুন করে শুল্ক আরোপ হতে পারে। ফলে দাম বাড়তে পারে এসব পণ্যের।
অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কারণে এবার দাম বৃদ্ধি পেতে পারে তামাকজাত পণ্যের। স্ল্যাব অনুসারে শুল্ক আরোপ হবে। এনবিআর সূত্রানুসারে সিগারেটের নিম্ন স্তরের তিনটি স্ল্যাবে বেশি দাম বাড়তে পারে।
অগ্রিম কর আরোপের কারণে দাম বাড়বে মদ জাতীয় পণ্যের। প্রস্তাবিত বাজেটে মদ আমদানিতে অগ্রিম কর ২০-২৫ শতাংশ বাড়ছে।
দেশীয় পণ্য সুরক্ষায় শুল্ক আরোপে আমদানিকরা স্মার্ট মোবাইল ফোন দাম আরেক দফায় বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে সুবিধা পাচ্ছে দেশীয় কোম্পানিগুলো।
দাম বাড়ার তালিকায় যুক্ত হচ্ছে বিলাসবহুল গাড়ি। ৪০০০ সিসির ওপরে বিলাসবহুল রিকন্ডিশন গাড়িতে সম্পূরক শুল্ক, নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ও আগাম কর ও ভ্যাট মিলিয়ে কর প্রায় সাড়ে ৮০০ শতাংশে করভার রয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে ওই করভার এক হাজার শতাংশ বা তার বেশি হতে পারে বলে জানা গেছে।
শুল্ক বাড়ানোয় আমদানি করা ফ্রিজ ও এসির দাম আরেক দফা বাড়তে পারে। দাম বাড়তে পারে আমদানি করা সব ধরনের বিলাসবহুল হোম অ্যাপ্লায়েন্সেরও।
অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য মতে, আসন্ন প্রস্তাবিত বাজেট চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। আর সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮৪ হাজার ৫৬৪ কোটি টাকা বেশি। চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ছিল ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। যদিও সংশোধিত বাজেটের আকার বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে বড় ব্যয়ের বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের আয়ের সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা হতে যাচ্ছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। যেখানে বাজেটে অনুদান ছাড়া ঘাটতির আকার ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। আর অনুদানসহ ঘাটতি থাকবে ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।
ঘাটতি মেটাতে সরকারকে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের দ্বারস্থ হতে হবে সরকারকে। এক্ষেত্রে প্রস্তাবিত বাজেটে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। যেখানে বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে যাচ্ছে ৯৫ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।