জুমবাংলা ডেস্ক : জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় চলতি বছরে গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার বেশি গম চাষাবাদ হওয়াই ছাড়িয়ে গেছে গম চাষের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা। ফসলের মাঠে ঢেউ তুলছে গমের হলুদ বর্ণের শীষ। ইতিমধ্যে গমের দানা পরিপূর্ণ হওয়াই পুরোদমে মাঠ থেকে গম কাটা মারার শেষ সময়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক কৃষানীরা। অন্যান্য বছরে তুলনায় এবার শুরু থেকেই গমের বাম্পার ফলন ও বাজারে ভাল দাম পাওয়াই লাভের স্বপ্ন দেখছেন এ উপজেলার কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী এবার পাঁচবিবি উপজেলায়় ১হাজার ৪শ ৪০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। যা গত বছরে ছিল ১হাজার ৪শ ৩৫ হেক্টর জমিতে। গত বছরের তুলনায় এবার ৫ হেক্টর বেশি চাষাবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র নিধারণ করা হয়েছে ৪হাজার ৮শ ৪৫ মেঃ টঃ । প্রতিটি এলাকায় অন্যান্য জাতসহ বারি-৩২ ও বারি-৩৩ জাতের গম উল্লেখযোগ্য হারে চাষ হয়েছে।
উল্লেখ্য যে উপজেলায় এবার চাষকৃত গমের বেশিরভাগই সরকারি প্রণোদনার আওতাভুক্ত। চলতি মৌসুমে উপজেলার ১হাজার ৩শ জন কৃষকের মাঝে গম প্রণোদনার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলায় সরকারিভাবে ১৫জন কৃষকের মাঝে প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার ধরঞ্জী গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম বলেন, সরকারী ভাবে পাওয়া প্রণোদনার বীজ ও বাজার থেকে কিনা বীজ দিয়ে দেড় বিঘা জমিতে গম চাষ করেছিলাম। মোটামুটি ভাল ফলন হয়েছে। নন্দইল গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কৃষি অফিসের সার্বিক পরামর্শে এবার তিন বিঘা জমিতে গমের আবাদ করেছি। গমের দানা ও ফলন খুব ভাল হয়েছে। প্রতি বিঘায় গম চাষাবাদে খরচ হয়েছে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা । ফলন হয়েছে ১৩ থেকে ১৪মন। বাজারে ভাল দাম থাকায় এবার লাভবান হয়েছি।
রতনপুর হিন্দুপাড়া গ্রামের কৃষক প্রসাদ চন্দ্র মন্ডল বলেন, ইতিপূবে গম মাড়াই সমস্যার কারণে গম চাষাবাদে অনিহা এসেছিল। কিন্তুু বর্তমানে বিভিন্ন মাড়াই যন্ত্র আসার কারণে আবার গম চাষে আগ্রহী হয়ে ১ বিঘা জমিতে গম চাষ করেছি। অন্যান্য ফসলের তুলনায় গম চাষে খরচ কম হয়। আবার গম মাড়াই করে গমের কাষ্টি জ্বালানী হিসাবেও ব্যবহার করা যায়।
চলতি মৌসুমে শুরুতেই প্রতি মন গমের বাজার দর ছিল ২হাজার থেকে ২হাজার ২শ টাকা । পরবর্তীতে বাজার কিছুটা কমে যায়। বাজার ঘুরে দেখা যায় বর্তমানে প্রতিমন গম ১৭শ টাকা থেকে ১৮শ ৫র টাকা পর্যন্ত ক্রয় বিক্রয় চলছে। তবে গমের বাজার আরো বাড়বে বলে ব্যবসায়ীরা বলেছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান বলেন, আধুনিক উচ্চ ফলনশীল জাত বারি-৩২, বারি-৩৩ জাতের গম উচ্চ ফলনশীল ও রোগ প্রতিরোধী হওয়ার কারণে কৃষকদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। অন্যান্য জাতের তুলনায় এর ফলন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি ও খরা সহিষ্ণু। যার কারণে গমের চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ সার্বিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি, যাতে করে গম চাষ বৃদ্ধিসহ ভাতের উপর চাপ কমিয়ে গমের আটা, রুটি ও স্বাস্থ্যে জন্য উপকারী অন্যান্য উপকরণ তৈরী করে খেতে পারে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।