বিজনেস ডেস্ক: ব্যবসা করে আগ্রহী আপনি তবে তা যেন আবার হয় কম ঝুঁকিপূর্ণ। কম ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসা হিসেবে এমন ব্যবসাকে বেছে নিতে হবে যাতে একবার বিনিয়োগ করার পর আর তেমন বিনোয়গ করতে হয় না। তেমনি কিছু সেরা আইডিয়া আজ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। যেমন- ভিডিও গেমস ও সাইবার ক্যাফে হতে পারে নতুনদের জন্য লাভজনক ও কম রিস্ক এর ব্যাবসা।
কোনো স্কুল, কলেজ এর পাশে বা কোনো ব্যাস্ত এলাকায় বেশ কিছু কম্পিউটার সহ একটি সাইবার ক্যাফে খুললে প্রায় সারা দিনই কাস্টমার পাওয়া যাবে। সাইবার ক্যাফে তে দুপুরের কিছু সময় (২-১ ঘন্টা) কিছুটা খারাপ যায় অর্থাৎ এই সময় কাস্টমার কম থাকে। তাই এই সময় কাস্টমার বাড়ানোর জন্য আপনি ছোটখাটো গেমিং টুর্নামেন্ট এর আয়োজন করতে পারেন অথবা এই সময়টার জন্য রেন্টাল ফি কম রাখতে পারেন এতে সবসমই আপনার ক্যাফেতে কাস্টমার থাকবে।
কাস্টমার বাড়ানোর আরেকটি উপায় হলো আপনার ক্যাফে থেকে একটি ফ্রি/পেইড ওয়াইফাই সিস্টেম চালু করতে পারেন এতে করেও সবসময় ভির লেগেই থাকবে। যদিও পেইড ওয়াইফাই সিস্টেমটি বাংলাদেশে এখনও তেমনভাবে চালু হয়নি তবে অন্যান্য দেশে এটি ব্যাপক প্রচলিত। পেইড ওয়াইফাই ম্যানেজমমেন্টের জন্য ইন্টারনেটে অনেক ফ্রি সফটওয়্যার রয়েছে।
এই ব্যাবসা কেন রিস্ক ফ্রি? একটি ব্যাস্ত এলাকায় ভিডিও গেমস ও সাইবার ক্যাফে ব্যাবসা শুরু করতে পারলে এলাকার নানান বয়সের লোকজনই ইন্টারনেট ব্যাবহারের জন্য সাইবার ক্যাফেতে আসবে। এছারা হাই কনফিগারেশনের কিছু কম্পিউটার রাখতে পারলে আপনার ক্যাফেতে গেমারদের অভাব হবে না।
সাইবার ক্যাফে ম্যানেজমেন্ট খরচও অনেক কম। অতিরিক্ত কোনো খরচ নেই। মাসে মাসে শুধু বিদ্যুৎ বিল ও ইন্টারনেট বিল দিতে হবে। আর কম্পিউটার সম্পর্কে আপনার কিছুটা ধারনা থাকলে ছোটখাটো সমস্যাগুলো আপনি নিজেই ঠিক করে নিতে পারেন। তাই ব্যাবসায় যদি একদম খারাপ সময়ও যায় তবুও ক্যাফের পরিচালনার খরচ এমনিতেই উঠে আসে।
আপনার ক্যাফের গেমিং কম্পিউটার গুলোর মধ্যে ল্যান ব্যাবস্থা করে দিলে তো মাল্টিপ্লেয়ার গেমিং খেলার জন্য গেমাররেরা আরও উৎসুক হয়ে পরবে। এসব কারনেই সাইবার ক্যাফে ব্যাবসাকে রিস্ক ফ্রি মনে করি।
কিভাবে শুরু করবেনঃ তবে এই ব্যাবসার শুরুর দিকের ধরন আপনার বিনিয়োগ কেমন সেই অনুযায়ী হবে। আমি মোটামুটি মাঝারি ধরনের একটি ক্যাফে চালুর কিছু ধারনা দেই। এই ব্যাবসা মোটামুটি ভালোভাবে শুরু করতে চাইলে প্রথমেই আপনাকে ২.৫ লাখ থেকে ৩ লাখ মূলধন নিয়ে নামাই ভালো। তবে কম বা বেশিও হতে পারে।
প্রথমে একটি ভালো জনবহুল এলাকায় একটি দোকান নিন। যেখানে সবসময়ই লোকজনের আনাগোনা থাকে, চারটি কম্পিউটার এবং আপনার নিজের একটি কম্পিউটার+ ইন্টারনেট সংযোগ নিয়েই সাইবার ক্যাফে ব্যাবসা শুরু করতে পারেন। ইন্টারনেট ব্যাবহারের জন্য হাই স্পিড ইন্টারনেট দেওয়ার চষ্টা করবেন এক্ষেত্রে ভালো কোনো ব্রডব্যান্ড থেকে লাইন নিতে পারেন।
আপনি গেমিং এর জন্য চারটি পিসির দুইটি অথবা চারটিকেই হাই কনফিগারেশন করে নিতে পারেন এবং এদের মধ্যে ল্যান সংযোগ দিয়ে মাল্টিপ্লেয়ার গেমের উপযোগী করে তুলতে পারেন। সাইবার ক্যাফে পরিচালনার জন্য আপনার কম্পিউটার পরিচালনার ওপর দক্ষতা থাকতে হবে এতে যে কোনো সমস্যায় অন্যের কাছে দৌরাতে হবে না।
প্রতি ঘন্টা কম্পিউটার ব্যাবহারের জন্য ২০-৩০ টাকা রাখতে পারেন(নির্দিষ্ট রাখতে হবে) চারটি কম্পিউটার দিয়ে শুরু করলেও ধীরে ধীরে আপনার ব্যাবসার প্রসার বাড়ানোর জন্য পরবর্তিতে আরও নতুন পিসি যোগ করতে পারেন।
ডিজিটাল স্টুডিও: কম ঝুকিপুর্ণ ব্যবসা হিসেবে ডিজিটাল স্টুডিওর । কম বিনিয়োগ, অধিক লাভজনক, যে কোন জায়গায় মানানসই, একবার বিনিয়োগ করলে পরবর্তীতে আর তেমন বিনিয়োগ করা লাগে না এই কারনে আমার কাছে এটা ঝুকিমুক্ত ব্যবসা হিসেবে স্থান পেয়েছে।
কেন কম ঝুকিপুর্ণঃ মূলত ব্যবসায়ীক কাঠামোর কারনেই এটা কম ঝুকিপুর্ণ ব্যবসা। এই ব্যবসায় যে ধরনের জিনিষ পত্রের দরকার হয় তার সবই অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা যায়। ব্যবসা যদি একবারে নাও ধরে তাহলেও সহজেই মালামাল বিক্রি করে অন্তত মূলধন তোলা যাবে। এ কারনেই এটা আমার কাছে কম ঝুকিপুর্ণ ব্যবসা মনে হয়েছে।
আরও একটা কারন হচ্চে এই ব্যবসায় একবার মালামাল সেট করে নিলে আর বড় ধরনের কিছু কিনতে হয় না। শুধু ২/৩ মাস পর পর প্রিন্টারের কালি আর ফটো পেপার লাগবে। এগুলোর দাম হাতের নাগালেই। অর্থাৎ নাম মাত্র খরচ বাদে যা আসবে সবই আপনার পকেটে থাকবে।
কিভাবে শুরু করবেনঃ ডিজিটাল ষ্টুডিও দিতে হলে আপনাকে গ্রাফিক্স ডিজাইন জানতে হবে। আপনি নিজে না জানলে গ্রাফিক্সে দক্ষ কাউকে দেখে কর্মচারী হিসেবে রেখেও শুরু করতে পারেন।ডিজিটাল ষ্টুডিও স্থাপন করতে হলে স্থান নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে স্কুল/কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্বে বা জনাকীর্ণ কোন স্থান পছন্দ করুন।
কি কি লাগবেঃ ডিজিটাল ষ্টুডিও স্থাপন করার জন্য অন্তত ১ টি কম্পিউটার, ১ প্রিন্টার, ১ টি ডিজিটাল ক্যামেরা, ১ টি স্ক্যানার, ফটো পেপার লাগবে।
মূলধন কেমন লাগবেঃ এই ব্যবসা ভালভাবে শুরু করার জন্য অন্তত ১.৫-২ লক্ষ টাকা মূলধন নিয়ে নামাই ভাল। ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর জন্য আরও বেশি মূলধনের প্রয়োজন হবে।
লাভ কেমন হবেঃ এ ধরনের ব্যবসা খুবই লাভজনক। তবে সেটা নির্ভর করবে আপনার স্থানের উপর। প্রতি মাসে যদি ন্যুনতম ৫০০ কপি ফটো প্রিন্ট হয় তাহলেও আপনার সব ধরনের খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মাসে ১৫-২০ হাজার টাকা মুনাফা আসবে।
১৫ হাজার টাকা বেতনের চাকুরীজীবীদের ১০ লাখ টাকা পার্সোনাল লোন!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।