জুমবাংলা ডেস্ক : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব কমলো পদ্মা সেতুতে রেল চলাচলের মাধ্যমে রেলপথে। রেলপথে খুলনা থেকে ঢাকার দূরত্ব কমলো ২১২ কিলোমিটার। স্বল্প সময়ে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে সম্ভাবনার দুয়ার খুলে গেলো।
ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত প্রায় ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৬৯ কিলোমিটার ব্রডগেজ সিঙ্গেল লাইন নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। এই রেলপথের রাজধানীর গেন্ডারিয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৭৭ কিলোমিটার চালু হলো মঙ্গলবার। প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী বছর জুনে যশোর পর্যন্ত ট্রেন চলবে।
তবে খুলনা থেকে ঢাকার দূরত্ব কমলেও পদ্মা সেতু হয়ে যেসব ট্রেন চলবে, তাতে ভাড়া বাড়বে। বর্তমানে এই রুটের সুন্দরবন এক্সপ্রেসের শোভন শ্রেণিতে ভাড়া ৫০৫ টাকা। পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেনে এই শ্রেণির ভাড়া হবে ৬১০ টাকা। এসি বার্থে বর্তমানে ভ্যাটসহ ভাড়া ১ হাজার ৭৩১ টাকা। পদ্মা সেতু হয়ে চলার ভাড়া প্রস্তাব করা হয়েছে ১ হাজার ৮৩৫ টাকা। ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ তা হবে ২ হাজার ২১০ টাকা।
আপাতত পদ্মা সেতু হয়ে চলবে ঢাকা-খুলনা রুটের সুন্দরবন এক্সপ্রেস, ঢাকা-বেনাপোল রুটের বেনাপোল এক্সপ্রেস। রাজবাড়ী-রাজশাহী রুটের মধুমতি এক্সপ্রেসকে ঢাকা পর্যন্ত চালানোর প্রস্তাব রয়েছে। ট্রেনগুলো ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে রাজবাড়ী দিয়ে গন্তব্যে যাবে। বর্তমানে ট্রেন দুটি ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গ ঘুরে তথা টঙ্গী, জয়দেবপুর, যমুনার বঙ্গবন্ধু সেতু, ঈশ্বরদী, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ হয়ে গন্তব্যে যায়। রাজবাড়ী থেকে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ হয়ে ঈশ্বরদী-রাজশাহী যায় মধুমতি এক্সপ্রেস। এই তিন ট্রেনের নতুন ভাড়ার তালিকা প্রস্তাব করেছে রেলওয়ের কমিটি। তা রেল মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেলে কার্যকর হবে।
ঢাকার কমলাপুর থেকে গেন্ডারিয়া, কেরানীগঞ্জ, নিমতলী, শ্রীনগর, মাওয়া, পদ্মা সেতু, শিবচর হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত দূরত্ব ৭৭ কিলোমিটার। রেলের এসি কামরায় প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ১ টাকা ৯৫ পয়সা। এ হিসাবে ভাড়া হওয়ার কথা ১৫০ টাকা। সঙ্গে যোগ হবে ১৫ শতাংশ ভ্যাট।
পদ্মা সেতুতে ৩০ বছরের জন্য রেলওয়ের কাছে সোয়া ৬ হাজার কোটি টাকার ট্যারিফ চেয়েছে সেতু বিভাগ। প্রথম বছরে ১০৬ কোটি টাকা দিতে হবে। রেল এত টাকা দিতে নারাজ। তবে এই ট্যারিফের কারণেই ভাড়া বেড়েছে বলে রেল কর্মকর্তাদের ভাষ্য। তারা জানিয়েছেন, বছরে শতকোটি টাকা দিতে হলে ভাড়া আরো বাড়াতে হবে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকায় নির্মাণ করা পদ্মা রেল সংযোগকে লাভজনক করতে।
ঢাকা-যশোর রুটের দূরত্ব পদ্মা সেতুর কারণে কমে হবে ১৬৯ কিলোমিটার। কিন্তু ভাড়া নির্ধারণে পন্টেজ চার্জ বিবেচনা করে দূরত্ব ধরা হয়েছে ৬০৮ কিলোমিটার। ঢাকা-বেনাপোল রুটের বেনাপোল এক্সপ্রেসে শোভন চেয়ারের বর্তমান ভাড়া ৪৮৫ টাকা। ভ্যাটসহ স্নিগ্ধায় (এসি) ভাড়া ৯৩২ টাকা। এসি কেবিনের ভাড়া ভ্যাটসহ ১ হাজার ৬৭৪ টাকা। বেনাপোল এক্সপ্রেস পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচল শুরুর পর শোভনে ৪৯৫, শোভন চেয়ারে ৫৯০, ফার্স্ট ক্লাসে ৭৯০, কেবিনে ১ হাজার ১৮০, এসিতে ৯৮৫, এসি সিটে ১ হাজার ১৮০ ও এসি কেবিনে ১ হাজার ৭৭০ টাকা ভাড়া প্রস্তাব করা হয়েছে। ফার্স্ট ক্লাস, কেবিন ও এসিতে ভাড়ার সঙ্গে যোগ হবে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। প্রস্তাবিত তালিকা অনুমোদন পেলে এসি কেবিনে ভ্যাটসহ ভাড়া পড়বে ২ হাজার ৩৬ টাকা।
সুন্দরবন এক্সপ্রেসের জন্য ২৯টি স্টেশনের এবং বেনাপোল ও মধুমতি এক্সপ্রেসের জন্য ২৮টি স্টেশন ধরে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আন্তঃনগর ট্রেনে সর্বনিম্ন ভাড়া ধরা হয়েছে ৪৫ টাকা। এসিতে সর্বনিম্ন ভাড়া হবে ১০০ টাকা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।