জুমবাংলা ডেস্ক : যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অদম্য শিক্ষার্থী তামান্না আক্তার নুরা। শারীরিক প্রতিবন্ধিতাকে জয় করে নিজেকে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। জন্ম থেকে দুটি হাত নেই; নেই ডান পা। শুধু বাঁ পা দিয়ে লিখেই মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ পাঁচ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
পরবর্তিতে এক পায়ে লিখে গুচ্ছ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ভর্তি হন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে। এবার এক পায়ে বই লিখে নিজের শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে যেন বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালেন তিনি।
সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে তার লেখা বই ‘ইচ্ছার আলো’। বিষয়টি তিনি নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশ করেন।
বইটিতে তার জন্মের পর থেকে সকল প্রকার প্রতিবন্ধকতা, প্রাথমিক শিক্ষা, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক, সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সকল প্রকার প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরেছেন। তার এ সফলতার সাথে কারা যুক্ত ছিলেন তিনি এ বিষয়টি বইয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন।
এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীসহ সকলের পাশে থাকার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেছেন। নিজের এক পা দিয়ে আকা বেশ কয়েকটি ছবির মাধ্যমে তার জীবনের সকল বাধা, প্রতিবন্ধকতা ও সাফল্য উল্লেখ করেছেন অত্যন্ত সুনিপুণভাবে।
বই প্রকাশের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তামান্না লিখেছেন, আলহামদুলিল্লাহ, আমার প্রথম লেখা বই ‘ইচ্ছার আলো’ প্রকাশিত হয়েছে। এই বইটি লেখা ছিল আমার একটি স্বপ্ন। শারীরিক অক্ষমতা কখনো স্বপ্নের পথে বাঁধা হতে পারে না। এটি আমি পাঠকদের মনেপ্রাণে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছিলাম। অবশেষে আমার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
জীবনে এগিয়ে যাওয়ার পথে মা-বাবা, শিক্ষক-সহপাঠী এবং মিডিয়া অনেক অবদান রেখেছেন। আজকের এই স্বপ্ন পূরণে আমি তাদের আরো একবার ধন্যবাদ জানাই।
লেখাপড়া শেষ করে বিসিএস ক্যাডার অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখেন তামান্না। আর সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যেই আগামী দিনগুলোর জন্য তিনি এখন থেকেই প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছেন।
তামান্নার প্রকাশিত বইয়ের বিষয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, মেধাবী শিক্ষার্থী তামান্না শিক্ষার্থীদের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমি জানতে পেরেছি তামান্নার লিখিত প্রথম বই ‘ইচ্ছার আলো’ প্রকাশিত হয়েছে। সকল প্রতিকূলতা ও বাধাকে অতিক্রম করে অদম্য তামান্না কিভাবে নিজেকে অনন্য হিসাবে উপস্থাপন করেছেন সেগুলো খুব দারুণভাবে উপস্থাপন করেছে।
চরম ইচ্ছাশক্তি থাকলে কোনো বাধাই কারো প্রতিভাকে দমিয়ে রাখতে পারে না সেটাই তিনি প্রমাণ করেছেন। তামান্নার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি এবং সে অন্যান্যদের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। উপাচার্য হিসাবে আমি ইতিপূর্বে তার পাশে ছিলাম এবং আগামীতেও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে সকল প্রকার সহযোগিতা করা হবে।
উল্লেখ্য, বইটির প্রকাশনা করেছে তামান্না ফাউন্ডেশন, প্রচ্ছদ ধ্রুব এষ এবং বইটি এখন ২০% ছাড়ে মাত্র ৩০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।