তীব্র বিক্ষোভের মুখে নেপাল সরকার শেষ পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। দেশজুড়ে চলা জেন-জির নেতৃত্বে সহিংস বিক্ষোভের জেরে ১৯ জনের মৃত্যুর পর নেপাল সরকার এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়।
যদিও এর আগে বলা হয়েছিল, নেপালের প্রধানমন্ত্রী শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়া বন্ধ করার সিদ্ধান্তেই অনড় ছিলেন। তবে দলের অভ্যন্তরের চাপ ও দেশের পরিস্থিতি তাকে মত বদলাতে বাধ্য করেছে।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন নেপালের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং। একই সঙ্গে তিনি আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেওয়ারও আবেদন জানিয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, “জেন-জির দাবি মেনে সরকার সোশ্যাল মিডিয়া খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
গত সপ্তাহে নেপাল সরকার বেশ কিছু সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেয়। এর কারণ হিসেবে জানানো হয়, দেশের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এই প্ল্যাটফর্মগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিবন্ধন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা ভুয়া আইডি তৈরি করে ঘৃণা ছড়ানো, মিথ্যা খবর প্রচার, প্রতারণা ও অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছিল।
সরকার নেপাল টেলিকমিউনিকেশণ অথরিটিরকে অনিবন্ধিত সোশ্যাল মিডিয়া নিষ্ক্রিয় করার নির্দেশ দিয়েছিল, যদিও কোন কোন প্ল্যাটফর্মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা তখন বিস্তারিত জানানো হয়নি। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, মেটার ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
এর আগে বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভবনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে আইনসভার ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে কর্তৃপক্ষ সংসদ ভবনের আশেপাশে কারফিউ জারি করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে জল কামান, লাঠি এবং রাবার বুলেট ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল দুর্নীতি বন্ধ করো, সোশ্যাল মিডিয়া নয়, সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ করা বন্ধ করো এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে তরুণ প্রজন্ম লেখা প্ল্যাকার্ড। কাঠমান্ডুর বিভিন্ন জায়গা দিয়ে তারা মিছিল করে।
হিমালয়ের এই দেশটির বহু মানুষের মতে, দেশজুড়ে দুর্নীতি ব্যাপক আকার ধারণ করেছে এবং প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির সরকার তার প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় বিরোধীদের কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছে।
সূত্র: এনডিটিভি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।