২০৩০ সাল নাগাদ বৈশ্বিক ক্যাপসুল হোটেলের বাজার ৪৩০ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে এই বাজারের আকার ২৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সিঙ্গাপুরের এই শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা তরুণ এবং একা ভ্রমণকারীদের কাছে এসব ক্যাপসুল জনপ্রিয় করে তুলতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে। স্বয়ংক্রিয় চেক ইন ও চেক আউট, ফেসিয়াল রিকগনিশন এক্সেস এবং স্মার্ট রুম কন্ট্রোলের মতো প্রযুক্তি এক্ষেত্রে সহায়তা করছে। নিজস্ব সৌন্দর্য, শব্দ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আমেজের কারণে সিঙ্গাপুর অনেকের কাছেই এক জনপ্রিয় গন্তব্য।
তবে এটি ভ্রমণকারীদের কাছে অন্যতম ব্যয়বহুল শহর। বিশেষ করে ব্যাকপ্যাকারদের বাজেটের বাইরের শহরও বলা যায়। স্ট্যাটিসটার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে এখানে হোটেল ভাড়া প্রতিরাতে ২২০ মার্কিন ডলার ছিল। আবাসন খরচ বেড়ে যাওয়ায় আতিথেয়তা শিল্পসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা তার সুবিধা নিতে চাচ্ছেন।
সিঙ্গাপুরের ঐতিহাসিক বোট কোয়ে জেলার একটি ঐতিহ্যবাহী ভবন মাত্র তিনতলা। তবে এর মধ্যে ১০০ অতিথি থাকতে পারেন৷ এবং প্রত্যেকের জন্য ভাড়া ষাট ডলার করে।
অতিথি মিন্ডি লিওং বলেন, আমার মনে হয় ভোক্তাদের জন্য একটি সামাজিক পরিবেশের ধারণা এমন এক ব্যাপার যার অভিজ্ঞতা আমার আগে হয়নি। সীমিত পরিসরে থাকতে আগ্রহীরা এই ধারণার আওতায় একটি বার এবং খোলা স্থান পাবেন। এখানে তারা অন্যদের সঙ্গে মিশতে পারবেন এবং ক্যাপসুলে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী নিতে পারবেন। শাওয়ার এবং টয়লেটও অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করতে হবে।
পরিচালনাকারীরা জানাচ্ছেন যে, অন্যান্য ক্যাপসুলের ধারণার চেয়ে তাদের আয়োজন ব্যতিক্রমী এবং বিলাসী। কিউব ব্যুটিক ক্যাপসুল হোটেলস-এর মোহাম্মদ কে রাফিন বলেন, নকশাটি বেশ বিস্তৃত। আলো, মার্বেল ভালোভাবে বাছাই করা হয়েছে এবং ঝাড়বাতির প্রভাব বিবেচনা করা হয়েছে। গত শতকের সত্তরের দশকে জাপানে শুরু হওয়া ক্যাপসুল হোটেল সিঙ্গাপুরেও জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে। শহরটির বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রের পাশে এই আয়োজন রয়েছে। কিউব হসপিটিলিটির ক্যাপসুল চালু হয়েছে ২০১৬ সালে। গোষ্ঠীটি এখন পর্যন্ত চারটি ভবনে ক্যাপসুলের বিস্তার ঘটিয়েছে এবং এই খাতে ভবিষ্যতে বিদেশেও বিনিয়োগ করতে চায়। স্থান বাঁচানোর পাশাপাশি কর্মী সংখ্যা কমিয়ে ব্যবস্থাপনার খরচও বাঁচাতে পারে ক্যাপসুল হোটেলগুলো।
ইএইচএল হসপিট্যালিটি বিজনেস স্কুল-এর প্রভাষক ড. ন্যাট শ্রীনারা বলেন, তাদের দলটি খুবই ছোট, সম্ভবত তিন থেকে চারজন পুরো হোটেলটি চালাচ্ছে। আর এরফলে কর্মীর জন্য বরাদ্দকৃত ব্যবস্থাপনার খরচ ২৫ শতাংশের নিচে রাখা যায় যা বেশ চমৎকার এবং অন্যরাও সেটা করতে চায়। সিঙ্গাপুরের সংকটপূর্ণ শ্রমবাজারে এভাবে খরচ বাঁচানোটা গুরুত্বপূর্ণ।
ব্যবস্থাপনা ভালোভাবে করতে গোষ্ঠীটি মোবাইল প্রযুক্তির উপর নির্ভরশীল। অতিথিরা একটি অ্যাপের মাধ্যমে আইডি ভেরিফিকেশন এবং চেক-ইন করার পর ক্যাপসুল স্থলে পৌঁছে চাবি সংগ্রহ করতে পারেন। অ্যাপটির মাধ্যমে তারা স্থানীয় রেস্তোরাঁয় এবং পর্যটন আকর্ষণগুলোতে ছাড়ের তথ্যও পায়। তারপরও মিথস্ক্রিয়া এই অভিজ্ঞতার এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ফ্রন্টডেস্কে সবসময়ই একজনকে থাকতে হবে।
কিউব হসপিটালিটি-র সোনিয়া টে বলেন, মানুষের স্পর্শের গুরুত্ব সবসময়ই থাকবে এবং আমরা প্রযুক্তির ব্যবহার এমনভাবে করবো যাতে স্থানটি অতটা শীতলও মনে না হয়, কারণ, আমরা এখনো কমিউনিটি-ড্রিভেন একমোডেশনকে উৎসাহিত করছি।
টেকসাই-এর গবেষণা অনুযায়ী, বৈশ্বিক ক্যাপসুল হোটেলের বাজার ২০৩০ সাল নাগাদ ৪৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছাবে। বর্তমানে এই বাজারের পরিধি ২৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভ্রমণ এবং আবাসনের খরচ বাঁচে বলে ভবিষ্যতে ক্যাপসুলের ব্যবহার আরে বাড়তে পারে। সময়ের সাথে সাথে সেগুলোর মান এবং অভিজ্ঞতাতেও বৈচিত্র আসবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।