আন্তর্জাতিক ডেস্ক : স্বতন্ত্র শিল্পকাঠামোয় বিশ্বব্যাপী সুনাম অর্জনকারী জাপানের সমসাময়িক স্থাপত্যের অন্যতম নিদর্শন নাকাগিন ক্যাপসুল টাওয়ার ভেঙে ফেলা হবে। ভবনের নতুন মালিকরা চলতি মাসেই এটিকে ভাঙার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর ফলে চোখ ধাঁধানো জরাজীর্ণ কাঠামোটিকে ঘিরে সৃষ্টি হওয়া অনিশ্চয়তার অবসান হবে। সিএনএন।
টাওয়ারটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছিল ১৯৭২ সালে। দুটি কংক্রিট কোরের চারপাশে সাজানো ১৪৪টি ইউনিট নিয়ে গঠিত এ ভবনের প্রতিটি ১০ বর্গমিটারের ক্যাপসুলে একটি করে পোর্টহোল স্টাইলের জানালা রয়েছে- যেখানে সাধারণ বাড়ির কাঠামোর মতোই বিভিন্ন যন্ত্রপাতি এবং আসবাবপত্র রয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ থেকে বেরিয়ে আসার পর নির্মিত এই ভবন ওই সময়েই ব্যাপক প্রযুক্তিনির্ভরতার প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিল। ভবনটিতে পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক আলো-বাতাসের খেলা সহজ করার বিষয়টিও মাথায় রাখা হয়েছিল। কারণ জাপানি স্থপতিরা যেকোনো ভবনকে একটি জীবন্ত প্রাণীর মতোই ভাবেন- যেন তারও বেঁচে থাকার অধিকার আছে।
খালি অ্যাপার্টমেন্টগুলো এতদিন স্টোরেজ বা অফিসের জন্য স্বল্প মেয়াদে ভাড়া দেওয়া হয়েছিল। ২০০৭ সালে ভবনের মালিক সমিতি এটিকে ভেঙে প্রতিস্থাপনের পক্ষে ভোট দেন। ২০০৮ সালের পর প্রতিবছর এটি দেউলিয়া ভবন হিসেবেই পরিচিতি পেয়েছে। মেটাবলিজমের উৎকৃষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ভবনটির ডিজাইন করেছিলেন কিশো কুরোকাওয়া। কিন্তু ২৫ বছরের মাথায়ই ভবনটির কিছু কিছু কক্ষ জরাজীর্ণ হয়ে যাওয়ায় সেটিকে আবাসনের অনুপযোগী মনে করেছেন টোকিওবাসী।
অবশেষে ২০২১ সালে এর মালিকরা টাওয়ারটি বিক্রি করতে সম্মত হন এবং রিয়েল এস্টেট ফার্মগুলোর একটি গ্রুপ এটি কিনে নেয়। তাদেরই একজন মুখপাত্র তাকাশি শিন্দো জানিয়েছেন, এর সবশেষ ভাড়াটেরা গত মাসে ভবনটি খালি করেছে। ১২ এপ্রিল থেকে এটি ভাঙার কথা ছিল।
সংরক্ষণবাদীরা দীর্ঘদিন ধরে আশা প্রকাশ করেছিলেন যে, ভবনটি সংরক্ষণ করা যেতে পারে অন্তত মেটাবলিজমের দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে তৈরি ভবনগুলোর অন্যতম প্রতীক হিসেবে। তাকাশি বলেন, জাপানের এই ধরনের স্থাপত্য সংস্কৃতি সংরক্ষণের আইন নেই। ফলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেশের আধুনিক স্থাপত্য ঐতিহ্যের সবচেয়ে প্রতিনিধিত্বমূলক উদাহরণগুলোর একটি হারিয়ে যেতে চলেছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।