জুমবাংলা ডেস্ক : কক্সবাজারে পত্রিকা কার্যালয়ে ঢুকে মনছুর আলম মুন্না নামের এক সাংবাদিককে চকরিয়ায় তুলে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন, হত্যাচেষ্টা, চাঁদা দাবি এবং সাজানো মামলা দেওয়ার ঘটনায় ওসিসহ আট পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে (নম্বর ৪-সদর) এ মামলা করেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক।
আসামিরা হলেন চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনজুর কাদের ভূঁইয়াসহ চার পুলিশ কর্মকর্তা এবং অজ্ঞাত চার কনস্টেবল।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওসমান গনি বলেন, মঙ্গলবার আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আকতার জাবেদ দায়ের করা নালিশি অভিযোগটি আমলে নেন।
এ সময় শুনানি শেষে অভিযোগের তদন্তপূর্বক ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার ফৌজদারি দরখাস্তে বাদী উল্লেখ করেন, মনজুর কাদের চকরিয়া থানায় যোগদানের পর থেকে পেশাদারিত্বের বাইরে গিয়ে অসদাচরণ, ঘুষ-দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে জনসাধারণকে জিম্মি ও ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় ও হয়রানি করেন। এসব ব্যাপারে বিভিন্ন পত্রিকায় তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশিত হলে বাদীর ওপর ক্ষেপে গিয়ে অপহরণ ও হত্যার হুমকি দেন ওসি মনজুর কাদের।
প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার কক্সবাজার স্টাফ রিপোর্টার মনছুর আলম মুন্না বলেন, গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর গভীর রাতে প্রধান আসামি চকরিয়া থানার ওসির নির্দেশে সুদূর চকরিয়া থেকে কক্সবাজার শহরের কৃষি অফিস সড়কের দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের কক্সবাজার অফিসে এসে তাকে তুলে নিয়ে যায় একদল পুলিশ।
পুলিশ অফিসারদের মধ্যে ছিলেন উপপরিদর্শক (এসআই) ফরহাদ রাব্বি ঈশান ও সোহরাব সাকিব এবং এএসআই পারভেজ। এ ছাড়া ছিলেন অজ্ঞাত চারজন কনস্টেবল।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, এ সময় দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকা অফিসের দুটি ল্যাপটপ, চারটি পেনড্রাইভ ও অন্যান্য সামগ্রী লুট করে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর তাকে চকরিয়া থানায় নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে অমানুষিক নির্যাতন করেন আসামিরা।
এভাবে একদিন আটকে রেখে মিথ্যা মামলা দিয়ে আদালতে সোপর্দ করেন ওসি মনজুর কাদের। পরে ২১ দিন জেল খেটে জামিনে মুক্তি পান মনছুর আলম মুন্না।
বাদীর আইনজীবী সালাহউদ্দীন আহমদ বলেন, অনিয়ম-দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের জেরে তুলে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন ও সাজানো মামলার বাদী ওসি নিজেই। এমনকি জিআর মামলাটির নথিভুক্ত কর্মকর্তাও তিনি নিজেই।
কৌঁসুলি সালাহউদ্দীন আহমদ আরো বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া গভীর রাতে নিজের আঞ্চলিক এখতিয়ার বহির্ভূত এলাকায় গিয়ে একজন সাংবাদিককে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা আইন পরিপন্থী ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
নিজেসহ একাধিক পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মনজুর কাদের।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. রহমত উল্লাহ বলেন, ‘চকরিয়া থানার ওসির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হওয়ার বিষয়ে আমি জেনেছি। বিষয়টি যেহেতু তদন্তাধীন, তাই তদন্তের পরে বিস্তারিত জানা যাবে।’
পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আহসান হাবীব পলাশ সাংবাদিকদের বলেন, ‘চকরিয়া থানার ওসির বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার বিষয়টি আমি অবগত নই। তবে কেউ অন্যায় করলে তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।