সাইফুল ইসলাম : মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জে.ও.এম তৌফিক আজম এবং জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে নির্যাতন, গালিগালাজ, হুমকি ও অবৈধ আটকের অভিযোগে আদালতে মামলা করা হয়েছে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) সিংগাইর আমলী আদালতে স্থানীয় বাসিন্দা মনির হোসেন বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন। মামলার নম্বর— সি.আর ২০২৫ (সিং/২০২৫)।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৫ জুলাই মনির হোসেনের শ্বাশুড়ি রহিমা খাতুন সিংগাইর থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ছানোয়ার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে গেলে ওসি তৌফিক আজম অভিযোগটি না নিয়ে উল্টো তাদের হুমকি-ধমকি দেন। বাদীর দাবি, ওসি বলেন, “ছানোয়ার আমার খুব কাছের মানুষ, তার বিরুদ্ধে মামলা নিলে তোদেরই মিথ্যা মামলায় ফাঁসাবো।”
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ওসি উপস্থিত রহিমা খাতুন ও তার স্বজনদের অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং হাজতে পাঠানোর হুমকি দেন। পরে প্রাণভয়ে তারা থানাছাড়া হন।
ঘটনার পর বাদী মানবাধিকার সংগঠন ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ক্রাইম রিপোর্টার্স ফাউন্ডেশন-এর মাধ্যমে পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে সাক্ষীসহ হাজির হওয়ার নির্দেশনা পান তারা।
বাদীর দাবি, ২৫ আগস্ট সাক্ষীদের নিয়ে তারা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে উপস্থিত হলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আব্দুল্লাহ আল মামুন ক্ষিপ্ত হয়ে গালিগালাজ করেন এবং মানবাধিকার সংগঠনের নির্বাহী প্রধানকে নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করেন। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে এএসপি রহিম খাকে লাথি মেরে ফেলে দেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর পুলিশ সদস্যরা বাদীসহ চারজনকে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে একটি অন্ধকার কক্ষে দুই ঘণ্টা আটকে রাখে। পরে পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে এসে তাদের মুক্ত করেন বলে অভিযোগে জানানো হয়েছে।
এ সময় অভিযুক্ত কর্মকর্তারা বাদীদের ‘মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার’ হুমকি দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনার পর বাদী ও তার স্বজনরা শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং চিকিৎসা শেষে আদালতের শরণাপন্ন হন।
মামলায় দণ্ডবিধির ১৬৬, ৩৪২, ৩২৩, ৫০০, ৫০৬ ও ৩৪ ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে। আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন করেছেন বাদী।
এদিকে, ওসি তৌফিক আজমের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিকবার অভিযোগ দায়ের করা হলেও সেগুলোর কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোছা. ইয়াছমিন খাতুন বলেন, “আমাদের জানা মতে আদালতে একটি আর্জি জমা পড়েছে, কিন্তু এখনো মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়নি। আদালত থেকেও কোনো আদেশ দেওয়া হয়নি।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



