বগুড়ায় চুরির মামলার আসামিকে গ্রেফতার করতে গিয়ে মাদক কারবারীদের হামলায় ডিবির এক এএসআইসহ তিন পুলিশ আহত হয়েছেন। এ হামলায় জড়িত পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাতে শহরের চকসুত্রাপুর হাড্ডিপট্টি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে এসআই স্বপন মিয়া সদর থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রথম ‘শহীদ’ সিয়াম শুভর পালক বাবা ও মাসহ সাত জনের নাম উল্লেখ করে ৮৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিকালে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জেলা ডিবির ওসি ইকবাল বাহার এসব তথ্য দিয়েছেন।
গ্রেফতার আসামিরা হলেন- বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর হাড্ডিপট্টির টুটুলের ছেলে রনি (৩০), একই এলাকার মৃত আজিজার রহমানের ছেলে শামীম হোসেন (৬০), ছমির আলী শেখের ছেলে ইস্রাফিল হোসেন (৪০), মৃত হাফিজুর রহমানের ছেলে কবির হোসেন (১৮), মৃত গণি শেখের মেয়ে বেহুলা বেগম (৩০) ও সেউজগাড়ী কালিয়া বাজার এলাকার মোমিন হোসেনের স্ত্রী রুবি বেগম (৩০)।
পুলিশ ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ডিবি পুলিশের একটি দল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে শাজাহানপুর থানায় একটি চুরির মামলায় তদন্তে পাওয়া আসামি রনিকে গ্রেফতারে শহরের চকসুত্রাপুর হাড্ডিপট্টি এলাকায় যান।
তারা পলাতক আসামি মাদক সম্রাজ্ঞী শাপলা খাতুনের (আন্দোলনে বগুড়ার প্রথম ‘শহীদ’ সিয়াম শুভর পালক মা) বাড়ির গলির মধ্যে থেকে রনিকে গ্রেফতার করেন।
গাড়িতে ওঠানোর সময় রনি চিৎকার দেন। তার চিৎকারে শাপলা খাতুন ও তার স্বামী আশিকের (৪৫) নেতৃত্বে অজ্ঞাত ৭০/৮০ জন বঁটি, বাঁশের লাঠি, কাঠের বাটাম ও লোহার রডসহ পুলিশ সদস্যদের ঘেরাও করে।
তারা সরকারি কাজে বাধা দিয়ে এলোপাতারিভাবে মারধর করতে থাকে। এতে এএসআই হাসান আলী আহত হন। তাকে বাঁচাতে কনস্টেবল মোদাচ্ছের হোসেন এগিয়ে এলে আসামি শাপলা খাতুন হাতে থাকা ধারালো বঁটি দিয়ে মাথা লক্ষ্য করে কোপ দেন।
হাত দিয়ে ঠেকালে বাম হাতের কনুইয়ের নিচে কেটে গুরুতর জখম হয়। এ ছাড়া কনস্টেবল সজীব হোসেন এগিয়ে এলে আসামি আশিক লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করেন।
পুলিশ সদস্যদের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাদের রক্ষা করেন। পরে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পাঁচ আসামিকে গ্রেফতার করেন।
এর আগে আসামি রনি পালাতে গিয়ে পড়ে গিয়ে পায়ে আঘাত পান। পরে আহত তিন পুলিশ সদস্য ও আসামি রনিকে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ডিবি পুলিশের এসআই স্বপন মিয়া সদর থানায় সরকারি কাজে বাধা, হত্যার উদ্দেশে মারধর, আসামি ছিনিয়ে নেওয়াসহ বিভিন্ন ধারায় পলাতক শাপলা খাতুন, তার স্বামী আশিক ও গ্রেফতার পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৭০/৮০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।
জেলার ডিবির ওসি ইকবাল বাজার জানান, বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর হাড্ডিপট্টির মাদক সম্রাজ্ঞী ‘শহীদ’ সিয়াম শুভর পালক মা শাপলা খাতুনের বিরুদ্ধে মাদক সংক্রান্ত ১১টি মামলা রয়েছে।
তার ছত্রছায়ায় অনেক চোর ও মাদক ব্যবসায়ী থাকে। বিভিন্ন জায়গায় চুরি ও চোরাই মাল শাপলাকে দেওয়া হয়। বিনিময়ে তিনি তাদের টাকা ও মাদক দেন। গ্রেফতার রনি স্বীকার করেছে, ওরা পাঁচ জন মিলে চুরি করেছিল। চুরি শেষে স্বর্ণগুলো শাপলা খাতুনের কাছে দিয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।