লাইফস্টাইল ডেস্ক : বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ত্বকে কিছু পরিবর্তন আসতে শুরু করে। বার্ধক্যের দাগ, বলিরেখা, মুখের সুক্ষ্ম রেখা ইত্যাদি চেহারায় দেখা যায়। মূলত বার্ধক্যের কারণে হলেও অনেক সময় পরিবেশ ও জীবনযাপনের কারণে প্রত্যাশিত সময়ের আগেই চেহারায় বলিরেখা ও অন্যান্য সমস্যা দেখা যেতে পারে। বয়সের সঙ্গে ত্বকের কোলাজেন ও ইলাস্টিন নামক দুটি প্রোটিনের উৎপাদন কমে যায়। এই দুটি প্রোটিন ত্বককে তার স্থিতিস্থাপকতা ও দৃঢ়তা প্রদান করে। ফলে ত্বক শুষ্ক ও পাতলা হয়ে যায় এবং এর ফলে বলিরেখা দেখা দেয়।
বলিরেখা কমাতে কী করবেন?
সানস্ক্রিন ব্যবহার: সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের ক্ষতি করে এবং বলিরেখা তৈরি করে। তাই প্রতিদিন সানস্ক্রিন ব্যবহার করা খুবই জরুরি।
ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার: ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খান। ফল, শাকসবজি, বাদাম এবং মাছ আপনার ত্বকের জন্য উপকারী।
পর্যাপ্ত ঘুম: পর্যাপ্ত ঘুম ত্বকের পুনর্জন্মের জন্য জরুরি।
শরীরচর্চা: নিয়মিত শরীরচর্চা ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং ত্বককে স্বাস্থ্যকর রাখে।
ধূমপান পরিহার: ধূমপান ত্বকের ক্ষতি করে এবং বলিরেখা তৈরির কারণ।
ত্বকের যত্ন: নিয়মিত ফেসিয়াল করুন এবং ত্বকের মৃত কোষ দূর করুন।
মেডিকেল ট্রিটমেন্ট: বোটক্স, ফিলার ইত্যাদি মেডিকেল ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে বলিরেখা কমানো যায়।
বলিরেখা কমানোর কিছু ঘরোয়া উপায়
অ্যালোভেরা: অ্যালোভেরা জেল ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এটি ত্বককে ময়েশ্চারাইজড করে এবং বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে।
নারকেল তেল: নারকেল তেল ত্বকের জন্য একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার। এটি ত্বককে নরম করে এবং বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে।
অলিভ অয়েল: অলিভ অয়েল ত্বকের জন্য একটি ভালো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি ত্বকের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে।
ক্যাস্টর অয়েল:
ক্যাস্টর অয়েল ত্বকের জন্য উপকারী। এটির এক ধরনের নিরাময় ক্ষমতা রয়েছে, যা ত্বকের বলিরেখা ও অন্যান্য দাগ সারিয়ে তারুণ্য নিয়ে আসে। দিনে দুবার কয়েক ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল মুখে মেখে নিন এবং প্রতিবার ১০ মিনিটের জন্য আলতোভাবে ম্যাসাজ করুন। ৩ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যেই এর সুফল পেতে পারেন।
ওটমিল, দই ও মধুর মাস্ক:
ওটমিল একটি চমৎকার প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার যা ত্বকের অস্বস্তিকর ভাব এবং বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে। এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল কমাতে সাবানের মতোও কাজ করে থাকে। মধু ও দইয়ের সঙ্গে মিক্স হয়ে এটি ডেড সেল পরিষ্কার করে এবং চেহারায় তারুণ্য ধরে রাখে। এই মাস্কটি তৈরি করতে আপনাকে কেবল ১ টেবিল চামচ ওটমিল, দই এবং মধু মেশাতে হবে। মিশ্রণটি ১৫ থেকে ২০ মিনিটের জন্য মুখে লাগিয়ে নিন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
শসা, মধু, গ্রিন টি মাস্ক:
সাধারণত সেনসিটিভ ত্বকে দ্রুত বার্ধ্যকজনিত বলিরেখা দেখা যায়। সেনসিটিভ ত্বকের জন্য এই ফেস মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। মাস্কটির জন্য প্রয়োজন শসা, মধু ও গ্রিন টি। শসা ত্বক সতেজ রাখতে বহুল পরিচিত, পাশাপাশি গ্রিন টি ত্বকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেয়। মাস্কটি বানানোর জন্য শুরুতে কিছু শসা পাতলা করে কেটে মধু এবং গ্রিন টির মিশ্রণে প্রায় ১৫ মিনিটের জন্য ভিজিয়ে রাখুন। স্লাইসগুলো ১৫ মিনিটের জন্য মুখে রেখে দিন তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
বলিরেখা কমানোর জন্য ধৈর্য ধরতে হবে। কোনো একটি উপায়ের চেয়ে একাধিক উপায় একসঙ্গে ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করুন। বলিরেখা কমানো সম্ভব। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, সঠিক ত্বকের যত্ন এবং প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে আপনি বলিরেখা কমিয়ে ত্বককে সুন্দর রাখতে পারেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।