অস্ত্রোপচারের মতো স্পর্শকাতর পরিস্থিতিতেও সংগীতের মৃদু সুর উপকারী হতে পারে, এমন দাবিই করা হয়েছে ভারতের এক নতুন গবেষণায়। দিল্লির মাওলানা আজাদ মেডিকেল কলেজ ও লোক নায়ক হাসপাতালের গবেষকরা দেখিয়েছেন, সাধারণ চেতনানাশকের সময় কানে মৃদু ফ্লুট বা পিয়ানোর সুর বাজানো হলে রোগীর শরীরে কম পরিমাণে চেতনানাশকের ওষুধের প্রয়োজন হয়। অস্ত্রোপচারের পরও এই রোগিরা আরও দ্রুত চেতনা ফিরে পান।

এই গবেষণাটি মিউজিক অ্যান্ড মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এটি ল্যাপারোস্কোপিক গলব্লাডার অপসারণের মতো দ্রুত অপারেশনের রোগীদের উপর পরিচালিত হয়। এই অপারেশনের পর দ্রুত আরোগ্য অত্যন্ত জরুরি।
গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব রোগীর কানে হেডফোনের মাধ্যমে শান্তিদায়ক বাদ্যযন্ত্রের সুর বাজানো হয়েছিল, তাদের প্রোপোফল ও ফেন্টানিল-এর মতো চেতনানাশক ওষুধের প্রয়োজন কম হয়েছে। এর ফলে তাদের আরোগ্য আরও মসৃণ হয়েছে। সেই সাথে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ছিল এবং কর্টিসল বা স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা ছিল নিম্ন।
গবেষণার প্রধান ডাঃ তানভি গোয়েল এবং অ্যানেস্থেশিয়া বিশেষজ্ঞ ডাঃ ফারাহ হুসেন ব্যাখ্যা করেন, আধুনিক অস্ত্রোপচারের মূল লক্ষ্যই হলো রোগীকে দ্রুত হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া।
রোগীকে অবশ্যই দ্রুত ভালোভাবে চেতনা ফিরে পেতে হবে। এই লক্ষ্য পূরণে সংগীত একটি ‘অ-ফার্মাকোলজিক্যাল বা ওষুধবিহীন ব্যবস্থা হিসাবে অত্যন্ত কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
এই গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক ডা. সোনিয়া ওয়াধাওয়ান জানান, রোগী অচেতন থাকলেও মস্তিষ্কের শ্রুতিপথ আংশিকভাবে সক্রিয় থাকে। তিনি বলেন, অজ্ঞান থাকা সত্ত্বেও সংগীত মস্তিষ্ককে শান্ত রাখে এবং অস্ত্রোপচারের সময় শরীরের স্বাভাবিক স্ট্রেস রেসপন্সকে (যেমন হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি বা রক্তচাপ বৃদ্ধি) নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
গবেষকরা জানান, চেতনানাশকের আওতায় থাকলেও স্নায়ু সম্পূর্ণরূপে নীরব থাকে না, এটি তারই প্রমাণ। এমনকি যদি রোগীর পরে সুরের কথা মনে নাও থাকে, তবুও মস্তিষ্ক ইতিবাচক বা আরামদায়ক অভিজ্ঞতা হিসাবে এটিকে গ্রহণ করে।
সূত্র: বিবিসি
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



