ফিলিস্তিনের গাজায় দীর্ঘ প্রায় দুই বছর ধরে যে নারকীয় আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল, তাকে ‘গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের স্বাধীন তদন্ত কমিশন। এই তদন্ত প্রতিবেদন সামনে আসার পর থেকেই ফিলিস্তিনের প্রতি সমর্থন বৃদ্ধির বিপরীতে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে দখলদার ইসরায়েলের ওপর। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সমর্থন দিয়ে যাওয়ার জন্য তীব্র সমালোচনার মধ্যে পড়ে গেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ অবস্থায় অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের পর এবার ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিল ইউরোপের আরেক দেশ পর্তুগাল।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতির মাধ্যমে এ ঘোষণা দেয় পর্তুগালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। খবর আল জাজিরার।
বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পর্তুগালের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করছে যে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে তারা। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে (ইউএনজিএ) ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের মর্যাদা নিয়ে উচ্চপর্যায়ের সম্মেলনের আগেই আগামী রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) এই স্বীকৃতি কার্যকর হবে।
পর্তুগিজ সংবাদপত্র কোরেইও দ্য মানহা জানিয়েছে, দেশটির কেন্দ্র-ডানপন্থি প্রধানমন্ত্রী লুইস মন্টেনেগ্রো এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার আগে প্রেসিডেন্ট ও সংসদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
পত্রিকাটি আরও জানায়, নতুন এ সিদ্ধান্ত পশ্চিম ইউরোপীয় দেশটির সংসদে প্রায় ১৫ বছরের এক বিতর্কের সমাপ্তি ঘটালো। ২০১১ সালে দেশটির লেফট ব্লক রাজনৈতিক দল প্রথম ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার এই প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল।
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরুর পর গত জুলাই মাসে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল পর্তুগাল।
সম্প্রতি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোর এক উপদেষ্টা জানান, অ্যান্ডোরা, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা এবং সান মারিনো সৌদি আরবের সঙ্গে নিউ ইয়র্কে ফ্রান্স যে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকের আয়োজন করছে, সেখানে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ, মাল্টা, অ্যান্ডোরা, অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ- ফ্রান্স ও সৌদি আরবের আয়োজিত নিউ ইয়র্ক সম্মেলনে বসেই ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেবে। কানাডা ও যুক্তরাজ্যও একই পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
তারা যোগ দেবে বিশ্বের প্রায় ১৪৭টি দেশের সঙ্গে, যারা চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছিল—যা জাতিসংঘের মোট সদস্য দেশের ৭৫ শতাংশ।
পর্তুগাল ছিল ১৪৫ দেশের মধ্যে একটি, যারা শুক্রবার ভোট দিয়েছিল যাতে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে আগামী সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে ইউএনজিএ-তে ভিডিওবার্তার মাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ তৈরি করা যায়। এর আগে, যুক্তরাষ্ট্র তাকে ভিসা দিতে অস্বীকার করেছিল।
নাউরু, পালাউ, প্যারাগুয়ে, ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্র তখন প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়, আর ছয় দেশ বিরত থাকে।
মার্কিন পদক্ষেপে এবার গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রবন্দরের নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারে ভারত
এদিকে এবারও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার এই উদ্যোগের তীব্র বিরোধিতা করছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র। ফ্রান্সের ঘোষণাকে ‘উদ্বেগজনক সিদ্ধান্ত’ বলে আখ্যা দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।