আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নরওয়ের এক যুবকের সঙ্গে ঘটল অবিশ্বাস্য এক ঘটনা। নিছক মজার ছলে চ্যাটজিপিটিকে প্রশ্ন করেছিলেন— ‘আমি কে’? কিন্তু কৃত্রিম মেধার (Artificial Intelligence – AI) উত্তর শুনে আতঙ্কে চিৎকার করে থানায় ছোটেন তিনি!
Table of Contents
চ্যাটজিপিটি কী এমন উত্তর দিল?
আধুনিক যুগে অনেকেই সমস্যার সমাধানের জন্য চ্যাটজিপিটি ও অন্যান্য এআই প্রযুক্তির উপর নির্ভর করেন। অজানা প্রশ্নের উত্তর পেতে সহজ এবং দ্রুততম উপায় হল কৃত্রিম মেধাকে প্রশ্ন করা। তবে অনেক সময় এআই এমন উত্তর দেয়, যা ব্যবহারকারীদের হতবাক করে দেয়।
নরওয়ের এক যুবকের সঙ্গেও ঘটেছে তেমনই এক অপ্রত্যাশিত ঘটনা। সংবাদমাধ্যম ডেলি স্টার-এর প্রতিবেদনে জানা যায়, আরভে জালমার হোলমেন নামে ওই ব্যক্তি চ্যাটজিপিটিকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘আমি কে’? এআই চ্যাটবট তখন উত্তর দেয়—
“আপনি নরওয়ের এক বাসিন্দা। একটি খারাপ কারণে আপনি খবরে উঠে এসেছিলেন। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে আপনি আপনার ৭ এবং ১০ বছর বয়সী দুই পুত্রকে হত্যা করেছিলেন। পরে তাদের দেহ একটি পুকুরের ধার থেকে উদ্ধার হয়।”
ভুল তথ্য শুনে আতঙ্কিত যুবক!
এই উত্তর শুনে হতবাক হয়ে যান হোলমেন। কারণ, তিনি স্পষ্ট জানতেন, এ তথ্য সম্পূর্ণ ভুল! এতে আতঙ্কিত হয়ে তিনি দ্রুত থানায় যান এবং চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
এআই-এর বিরুদ্ধে আইনি অভিযোগ
হোলমেন জানান, নরওয়ের তথ্যসুরক্ষা কর্তৃপক্ষ ‘ডেটা প্রোটেকশন অথরিটি’-তে তিনি চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। তিনি দাবি করেন, এই ভুল তথ্য তাঁর সামাজিক ও ব্যক্তিগত জীবন ধ্বংস করতে পারে। পাশাপাশি, ন্যায়বিচারের জন্য চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন তিনি।
চ্যাটজিপিটি নির্মাতাদের প্রতিক্রিয়া
চ্যাটজিপিটির নির্মাতা সংস্থা জানিয়েছে, চ্যাটবটের প্রতিক্রিয়া আরও নির্ভুল ও উন্নত করতে তারা ক্রমাগত কাজ করছে। তবে এ ধরনের ভুল তথ্য কিভাবে ছড়ায় এবং ভবিষ্যতে কীভাবে এআই আরও নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠতে পারে, তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সীমাবদ্ধতা
এআই প্রযুক্তির বিস্ময়কর সুবিধা থাকলেও এর সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট। ভুল বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার এ ধরনের প্রযুক্তির একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তাই চ্যাটজিপিটি বা অন্য কোনো এআই ব্যবহারের সময় ব্যবহারকারীদের সচেতন থাকা উচিত।
কীভাবে এই ঘটনাটি প্রভাব ফেলতে পারে?
- গোপনীয়তা লঙ্ঘনের আশঙ্কা: ব্যক্তি সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়া বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে।
- আইনি জটিলতা: চ্যাটজিপিটির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হলে এটি এআই-এর ভবিষ্যৎ ব্যবহারে প্রভাব ফেলতে পারে।
- এআই নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তা: প্রযুক্তি আরও নির্ভরযোগ্য করতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রমাণ করে যে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যতই উন্নত হোক, মানুষের পর্যবেক্ষণ ও যাচাই-বাছাই ছাড়া তা একেবারে নির্ভরযোগ্য নয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।